২০২২ সালের মধ্যেই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০১৭, ০১:৩৭ পিএম
২০২২ সালের মধ্যেই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার দীর্ঘদিনের কাশ্মীর সংকট ২০২২ সালের মধ্যেই নিরসন করা হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। ‘সংকল্প সে সিদ্ধি-নয়া ভারত নির্মাণ’ নামক এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই প্রত্যয় জানিয়েছেন তিনি।

শুধু কাশ্মীর সমস্যার সমাধান নয়; ভারতের সন্ত্রাসবাদ, মাওবাদী সমস্যা ও উত্তর পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদের সমাধানও ২০২২ সালের মধ্যে করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজনাথ। গত ৭০ বছর ধরে এসব সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে ভারত।

স্বাধীনতা দিবসে নতুন ভারত গড়ার ডাক দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারত নির্মাণের লক্ষ্য সামনে তার সামনে। সেই লক্ষ্যেই কাশ্মীর ইস্যু থেকে শুরু করে বিচ্ছিন্নতাবাদ- সব সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘২০২২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। বিজেপি সরকারের হাত ধরেই এই সব সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান হবে।’

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে কাশ্মীর। দুই দেশই পুরো ভূখণ্ডটি দাবি করে। তবে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের বেশিরভাগ মানুষ হয় স্বাধীনতা চায়, না হয় পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে চায়। তিন দশক ধরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে কাশ্মীরের বিভিন্ন স্বাধীনতাকামী সংগঠন।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরের এই পর্যন্ত কাশ্মীর সহিংসতায় অন্তত ১৩০ বিদ্রোহী ও ৩৯ সেনা নিহত হয়েছে। গত বছরের ৮ জুলাই কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন নেতা বুরহান ওয়ানিকে ভারতীয় বাহিনী গুলি করে হত্যা করার পর থেকে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে বেসামরিক লোকজনের অংশগ্রহণ বেড়েই চলেছে। তার মৃত্যুর পর কয়েক মাস ধরে গণবিক্ষোভে শতাধিক লোককে হত্যা করে ভারতীয় বাহিনী। পেলেট গুলিতে অনেকেই অন্ধ হয়ে যায়। এতে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কাশ্মীরের মানুষ।

গত বছর বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে অভিযান শুরু করে ভারত সরকার। এতে কাশ্মীরিদের মাঝে বিক্ষোভ আরো বেড়েছে। ইতিহাসে এই প্রথম ওই অঞ্চলের স্কুলগামী মেয়েরাও রাস্তায় নেমে এসেছে। চলতি বছর কাশ্মীরের স্থানীয় নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র সাত শতাংশ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ভারতের হাতছাড়া হতে যাচ্ছে কাশ্মীর। বর্তমানে ৫ লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখে অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করছে ভারত।

ভারতের একমাত্র মুসলিমসংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর ২০১৪ সাল থেকে ভারতের প্রতি অনুগত দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক অপ্রিয় জোটের দ্বারা শাসিত হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা কাশ্মীরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের বিরোধিতাকে আরও তীব্র করছে। ওয়ানির মৃত্যুর পর বিদ্রোহীদের সাথে প্রায় ১০০ জন কাশ্মীরি যুবক যোগ দিয়েছে। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী থেকে অনেকেই অস্ত্র ছিনিয়ে নিতেও সক্ষম হয়েছে তারা।

গো নিউজ২৪/ আরএস

এ সম্পর্কিত আরও সংবাদ


আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর