চরভদ্রাসনে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে তরুণের আমরণ অনশন


নাজমুল হাসান নিরব, ফরিদপুর প্রতিনিধি: প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০১৯, ০৬:১৬ পিএম
চরভদ্রাসনে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে তরুণের আমরণ অনশন

আবরাব নাদিম ইতু। ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের মার্কেটিং বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। বাড়ি চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নে। শিক্ষক পিতার এই সন্তানটি যে কোন স্থানে অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করতে নেমে যান একাই।

চরভদ্রাসনের মানুষের দীর্ঘদিনের সমস্যা হলো স্বাস্থ্যসেবা। উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও নেই তেমন ডাক্তার, নেই কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি। পর্যাপ্ত ঔষধেরও ব্যাবস্থা নেই। শুধুমাত্র একজন এস.এ.সি.এম.ও দিয়ে চলে রোগীদের চিকিৎসা। 

জরুরী কোন রোগী আসলে নূন্যতম সেবাটাও পাওয়া যায় না। কোন গুরুতর রোগী আসলে তাকে সাথে সাথে জেলায় রের্ফাড করা হয়। সাধারণ রোগীদেরও অনেক সময় জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এমন পরিস্থিতে উপজেলাবাসীর মৌলিক অধিকার স্বাস্থসেবা (২৪ ঘন্টা) নিশ্চত করতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে আমরণ অনশনে বসেন আবরাব নাদিম ইতু। সাথে কিছু স্থানীয় লোকজনও যোগ দেন।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সেবা আমাদের মৌলিক অধিকার। সামান্য কাটা-ছেঁড়া হলেই আমাদের ফরিদপুরে পাঠানো হয়। আমাদের এখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে, পর্যাপ্ত বাজেট আছে। তবুও কেন আমাদের ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়? কেন আমাদের সাধারণ ওষুধগুলো দেওয়া হয় না? চরভদ্রাসন হাসপাতালের এই অনিয়ম ও দুর্নীতি যতক্ষণ পর্যন্ত বন্ধ না হবে ততক্ষণ আমি আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।

এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. রেজওয়ানা জানান, আমাদের হাসপাতালে ডাক্তার সংকট রয়েছে। আগামি বিসিএস-এ ডাক্তার নিয়োগ হলে এই সংকট দূর হবে। এছাড়া নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার বিষয়টা আমরা উপরে জানিয়েছি।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মুশা জানান, ডাক্তার সংকটে সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি। এছাড়া চরাঞ্চলের মানুষের সেবার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়ে কাজ চলছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

এদিকে বুধবার দুপুর দুইটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা জেমসিন সুলতানার নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মুশা, চরভদ্রাসন ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খান, গাজিরটেক ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলি, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রেজওয়ানা অনশন স্থলে এসে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত ও ডাক্তার সংকট দূর করার বিষয়ে কথা বলেন। 

এসময় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বলেন, ডাক্তার সংকট একটি বড় সমস্যা। আমরা উপর মহলে জানিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। 

পরে অনশনকারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাকে পানি ও জুস পানের মাধ্যমে অনশন ভঙ্গ করানো হয়। এসময় স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মী ও জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।

গো নিউজ২৪/আই

স্বাস্থ্য বিভাগের আরো খবর