ভারতে রাজ্যজুড়ে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে প্লাস্টিক ডিম-আতঙ্ক। কলকাতা, ক্যানিং-এর পরে এ বার পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে হানা দিল প্লাস্টিক ডিমাতঙ্ক। শুধু তা-ই নয়, প্লাস্টিকের ডিম রান্না করে খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন একটি পরিবারের একাধিক সদস্য।
শুক্রবার স্থানীয় একটি দোকান থেকে এক ট্রে ডিম কেনেন মহিষাদলের কাপাসবেড়িয়া এলাকার বেরা পরিবার। সেই রাত্রেই ডিমগুলো ভেজে খেয়ে ফেলেন তাঁরা। ডিম ভাজার সময়েই প্লাস্টিকের কটূ গন্ধ পেয়েছিলেন বাড়ির লোকজন। সন্দেহ হয় তখনই। তবুও সাহস করে ডিমগুলো খান। তার পরেই শরীর খারাপ লাগতে শুরু করে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন কৃষ্ণা বেরা এবং তাঁর মেয়ে বর্ণালী। প্রবল পেটে যন্ত্রণার সঙ্গে বার বার টয়লেটে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দেয়। সন্দেহ হয়, ডিমগুলো প্লাস্টিকের ছিল না তো? সন্দেহ নিরসনের জন্য আগুনে ডিমগুলো পুড়িয়ে দেখেন তাঁরা। দেখা যায়, অবিকল প্লাস্টিকের গন্ধ বেরচ্ছে। তখনই তাঁরা নিশ্চিত হন যে, ওগুলো প্লাস্টিকেরই ডিম।
এ দিকে কৃষ্ণাদেবী এবং বর্ণালীর অসুস্থতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় শুক্রবার রাতেই দু’জনকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারের ওষুধে তেমন কাজ না হওয়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। সেখানে চিকিৎসার পরে শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলে ছেড়ে দেওয়া হয় দু’জনকে।
ডাক্তাররা অবশ্য নিশ্চিত নন যে, প্লাস্টিকের ডিম খাওয়ার ফলেই বেরা পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে ডিমগুলো যদি সত্যিই প্লাস্টিকের হয়ে থাকে, তা হলে সেগুলো খাওয়ার ফলে গুরুতর পেটের গণ্ডগোল দেখা দেওয়া যে একেবারেই অসম্ভব নয়, তা-ও মানছেন তাঁরা।
এ দিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বেরা-বাড়িতে গেলে তাঁদের সামনেই তাঁরা বাড়িতে অবশিষ্ট ডিমগুলি আগুনে পুড়িয়ে দেখান। দেখা যায়, সত্যিই প্লাস্টিকের গন্ধ বের হচ্ছে।
দিন কয়েক আগে কলকাতার কড়েয়া থানা এলাকার বাসিন্দা অনিতা কুমার বাজার থেকে ডিম কেনার সময়ে অজান্তে প্লাস্টিকের ডিম নিয়ে আসেন। ডিমে কুসুমের পরিবর্তে প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস ছিল বলে অভিযোগ। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনার জেরে পুলিশ এক ডিমব্যবসায়ীকে গ্রেফতারও করে। এর পরে ক্যানিং-এ প্লাস্টিকের ডিম বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এত দিন প্লাস্টিকের ডিম খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর মেলেনি। এ বার সেই খবরও সামনে এলো পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। -এবেলা