ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অং সান সু চি হিটলারের নারী ভার্সন!


গো নিউজ২৪ | ফারজানা আক্তার প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০১৭, ০৫:০৯ পিএম আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০১৭, ১১:২৭ এএম
অং সান সু চি হিটলারের নারী ভার্সন!

অং সান সু চি! আহা রে। ভাবতেই পেট ফেটে আমার হাসি বের হচ্ছে। ছোটবেলায় এই নারী সম্পর্কে টুকরো টুকরো জানতে শুরু করি। ঠিক তখন থেকেই তাকে আমার আইডল মনে হতে থাকে। কেন যেন তার মতোই হতে চেয়েছিলাম। স্বপ্ন দেখতাম আমিও হবো একদিন ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’। নোবেল প্রাইজ না হোক, অন্তত বাড়ির পাশের অসহায়দের মুখে হাসি ফোটাতে যদি পারি।

কেননা, আমার সেই স্বপ্নের রাণী যে আবার শান্তিতে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানের পুরস্কার নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। কিন্তু আজ এতো বছর পর আমার সেই স্বপ্নের আইডলের কথা বলতেই পেট ফেটে হাসি আসছে। আহা রে শান্তির দূত!

আজ আমার বার বার জানতে ইচ্ছে করছে দুটো প্রশ্নের উত্তর। এক. গণতন্ত্র কী? দুই. শান্তি কী? এ দুটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই আমার সেই স্বপ্নের রাণীর কাছে।

বিশ্ব অবাক হয়ে দেখছে, শান্তির দূতের দেশ মিয়ারমান জ্বলে পুড়ে ছারখার হচ্ছে। ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে লাখ লাখ নারী-শিশু। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের আকাশ। নিজ দেশেই পরবাসী বানানো হয়েছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের। উচ্ছেদ করা হচ্ছে ওদের জন্মভূমি থেকে। সে উচ্ছেদের স্টাইল হিটলারের নাৎসী হত্যাযজ্ঞকেও হার মানানো।

রোহিঙ্গাদের জন্মই তো আজন্ম পাপ! তাদের কোনো দেশেরই নাগরিকত্ব নেই। ওরা নিজ দেশের সরকারের কাছেই আবর্জনা। নিজেদের সেনাবাহিনীর কাছেই ধর্ষণ-হত্যাযজ্ঞের শিকার। ছিঃ ভাবতেই গা ঘিন ঘিন করে উঠছে। একটা দেশের সেনাবাহিনী তার নিজের দেশেরই মা-বোন-মেয়েদের ‘ধর্ষণ উৎসবে’ মেতে উঠেছে। যে সেনাবাহিনীর জন্ম দেশ ও দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য, সেই তারাই শেষ পর্যন্ত! ছিঃ ধিক্কার এমন মানুষরূপী পশু বাহিনীদের!

আবারো আসি সেই শান্তির দেবীর কথায়। ছোটবেলায় অং সান সু চি’র ধৈর্য দেখে খুবই অবাক হতাম। কি ধৈর্য আর কি অবিচল নারী নেত্রী তিনি। ভাবতাম একজন মানুষ কীভাবে নিজ দেশের মানুষকে এভাবে ভালোবাসতে পারেন? অসহায় মানুষের অধিকার আদায়ে এতোটা অবিচল থাকেন?

আমার সেই আদর্শের রাণী ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারের নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসলেন। তারপর কী হলো? পর্যায়ক্রমে কয়েক লাখ মানুষ দেশহারা, ভিটেহারা, সন্তানহারা, অভিভাবকহারা হলেন। সবশেষে ইজ্জত হারা হলেন লাখ লাখ মা-বোন। প্রাণহারা হলেন শত শত।

সু চি বলছেন, রোহিঙ্গারা জঙ্গি। আমার প্রশ্ন- অসহায় নারী-শিশু মিলে একসঙ্গে সবাই কি জঙ্গি হয়? আর যদি তিনি মনে করেন, মুসলিম হলেই তারা জঙ্গি হবে; তাহলে আমি বলবো, বিশ্বের এই শান্তির দেবীর শিক্ষাগত সনদ যাচাই করা হোক, সেগুলো জাল না আসল তা বের হয়ে আসবে। সেই সঙ্গে তার মাথার পরীক্ষাও করা প্রয়োজন। আর সু চি যদি মনে করেন, ইসলাম ধর্ম জঙ্গি পয়দা করে, তাহলে আমার প্রশ্ন- আপনার ধর্ম ( বৌদ্ধ ধর্ম পৃথিবীতে সবচেয়ে শান্তির ধর্ম হিসেবেই স্বীকৃত) আপনাকে কী শিক্ষা দিচ্ছে? ব্রাশফায়ার? জ্যান্ত গণকবর? নিজদেশের মা-বোনকে গণধর্ষণ? নাকি মিথ্যা অপবাদ দেয়া?

সু চি, জানি এসব প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে পারবেন না আপনি। তাই আজ আপনি আমার স্বপ্নের রাণী আর আইডলের খাতা থেকে পরিত্যক্ত হয়েছেন। আজ সু চি মানেই আমার কাছে একরাশ ঘৃণা আর হিংস্রতার নাম। হায় রে আমার স্বপ্ন, হায় রে আমার ভাবনা। যে ছিলেন এক সময় মাদার তেরেসের মতো মানবতার মহান আদর্শ, তিনিই আজ হয়ে গেলেন হিটলারের নারী ভার্সন!

গোনিউজ২৪/এন

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ