ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৪ চৈত্র ১৪৩০

‘নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়ার সংবাদ হতাশাজনক’


গো নিউজ২৪ | সজীব ওয়াজেদ জয় প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০১৯, ১২:০২ পিএম আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০১৯, ০২:৩০ এএম
‘নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়ার সংবাদ হতাশাজনক’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়ার সংবাদ হতাশাজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

সোমবার দিনগত রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছে। ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেছে ২৬৭ আসনে। জাতীয় পার্টি জিতেছে ২০টি আসনে, বিএনপি ৭ ও অন্যান্য ৪। তিন কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে ১টি আসনে। এই কেন্দ্রগুলোর ভোট বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হবে।

সারাদেশে ১৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোর মোট ভোট প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবধানের চেয়ে কম হওয়ায় আসনগুলোতে ফলাফল ঘোষণা করে দেওয়া হয়। একটি মাত্র আসনের নির্বাচন হয়নি কারণ সেখানে বর্তমানে শুধু একজন প্রার্থী।

এই নির্বাচনে গড়ে ভোট পড়েছে ৮০ শতাশ। যেই আর্টিকেলটি আগে শেয়ার করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশে সব নির্বাচনের ভোট দেওয়ার পরিসংখ্যান রয়েছে। ১৯৯১ সালে ভোট দেওয়ার হার ছিল ৭৪.৯৬ শতাংশ, ২০০১ সালে ছিল ৭৫.৫৯ শতাংশ আর ২০০৮ সালে সর্বোচ্চ ৮৭.১৩ শতাংশ। তাই বলা যায় এবারের নির্বাচনের ভোট দেওয়ার হার স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত।

এই মুহূর্তে আমার হাতে ভোট দেওয়ার সকল পরিসংখ্যান নেই। আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১০ কোটি ৪০ লক্ষ নিবন্ধিত ভোটার। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের পক্ষে এবার আনুমানিক ৫ কোটি ভোট পড়েছে, যা অনেক দেশের জনসংখ্যা থেকেও বেশি।

জয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস

যারা বলছেন কারচুপি হয়েছে, ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, তারা কি বুঝতে পারছেন এই নির্বাচন ফলাফল অন্যরকম হওয়ার জন্য বিরোধীদলগুলোর ২.৫ কোটিরও বেশি ভোটারের সমর্থন প্রয়োজন ছিল? যা এক কথায় অবিশ্বাস্য।

আমাদের দেশে এখন ১১টি সংবাদের টেলিভশন চ্যানেল আছে। প্রত্যেকটি চ্যানেলই আমরা সারাদিন দেখছিলাম। কোনো চ্যানেলেই আমরা কারচুপির কোনো ঘটনা দেখিনি। প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হচ্ছিলো আর সকল কেন্দ্রের সামনেই ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছিলো।

আমাদের দেশে বর্তমানে ১৩ কোটির মতন মোবাইল ফোন গ্রাহক আছে। বেশিরভাগ মোবাইলেই ক্যামেরা আছে। যেকোনো অসঙ্গতি খুব সহজেই মানুষ রেকর্ড করতে পারেন। যেই কয়টি ঘটনা মানুষের চোখে পড়েছে প্রতিটির ব্যাপারেই নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট পুনরায় চালু করার পরেও তেমন অনিয়মের প্রমাণ কিন্তু আমরা দেখিনি।

প্রায় সকল বিদেশি পর্যবেক্ষকই বলেছে, আমাদের নির্বাচন ছিল গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ। সহিংসতায প্রাণ হারান ১৭ জন, যার মধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ১ জন ছিলেন জাতীয় পার্টির আর ১ জন ছিলেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য; যাকে বিএনপি জামায়াত গুলি করে হত্যা করে কেন্দ্র দখলের সময়। ১৭ জনের মধ্যে মাত্র ৬ জন ছিলেন বিরোধী দলগুলোর সদস্য বা সমর্থক।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট এমন একটি সংগঠনকে পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠাতে চায় যেটার নেতৃত্বে আছেন বিএনপি আমলের একজন সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। এই আবদার ছিল আমাদের নির্বাচনী আইনের পরিপন্থি। কারণ রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত কেউই নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হতে পারে না। এর জন্যই আনফ্রেল নামক সংগঠনটির কিছু সদস্য আসতে পারেননি বাংলাদেশে। বাকি সদস্যরা কিন্তু ঠিকই ভিসা পেয়েছিলেন ও আমাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন।

বিরোধী দলের সাথে সম্পৃক্ত একজনকে পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠানোর চেষ্টা আনফ্রেল ও এনডিআই এর পক্ষপাতিত্বের প্রমাণ। নির্বাচনের আগেই বিবৃতি প্রকাশ করলেও, নির্বাচনের পরে কিন্তু তারা আমাদের নির্বাচন নিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি, যদিও অন্যান্য পর্যবেক্ষকরা ঠিকই দিয়েছেন।

এছাড়া স্ট্যাটাসে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের অভিনন্দন জানানোর বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় আরো লিখেছেন, আমাদের অঞ্চলের সকল রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরাই আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদী প্রথম আমার মাকে ফোন করে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। আমার সহপাঠী ও ভুটানের রাজা, চীনের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীও অভিনন্দন জানান।

সিএনএন, বিবিসি ও অন্যান্য পশ্চিমা মিডিয়া আমাদের দেশের সংবাদ, আমাদের দলের ও নির্বাচন কমিশনের সকল বিবৃতি অগ্রাহ্য করেই তাদের মতন সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছেন আমাদের নির্বাচন নিয়ে। যেই কয়েকটি অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোর ব্যাপারে নির্বাচন ইতিমধ্যে কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে, শুধু সেগুলো আর বিরোধীদল, আনফ্রেল ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের অভিযোগের ভিক্তিতেই তারা নিউজ করে যাচ্ছে। যা অত্যন্ত হতাশাজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট।

গো নিউজ২৪/এমআর

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ