চার-ছক্কার বৃষ্টি ঝরিয়ে রূপকথার রান পাহাড়ে টাইগাররা


স্পোর্টস ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২০, ০৮:০৫ পিএম
চার-ছক্কার বৃষ্টি ঝরিয়ে রূপকথার রান পাহাড়ে টাইগাররা

অধিনায়ক মাশরাফির শেষ ম্যাচটায় চেনা রূপে ফিরল বৃষ্টির শহর সিলেট। বৃষ্টির পর ঠান্ডা হওয়া সিলেটকে গরম করেছেন দুই টাইগার ওপেনার লিটন দাস ও তামিম ইকবাল। নেতা মাশরাফির শেষ ম্যাচে ব্যাটিংয়ের চার-ছক্কার বৃষ্টি ঝরিয়েছেন তারা।

বৃষ্টির কারণে ৪৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচেও বাংলাদেশ করেছে ৩ উইকেটে নিজেদের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ (যৌথভাবে) ৩২২ রান। বৃষ্টি আইনে ৪৩ ওভারে জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৩৪২ রানের। এ যেন রীতিমতো রূপকথা। ওয়ানডেতে দেশের ইতিহাসের রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়লেন, দলকে এনে দিলেন পাহাড়সমান পুঁজি।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অধিনায়ক হিসেবে নিজের বিদায়ী ম্যাচটি খেলতে নেমে টস হেরেছেন মাশরাফি। জিম্বাবুয়ে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, বাংলাদেশকে পাঠায় ব্যাটিংয়ে।

ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা করেন বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং লিটন দাস। দু’জনই আগের দুই ম্যাচে খেলেছেন দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরির ইনিংস। প্রথম ম্যাচে লিটন অপরাজিত ১২৬ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম খেলেন ১৫৮ রানের ইনিংস।

এমন দুই ব্যাটসম্যান যদি একইসঙ্গে জ্বলে ওঠেন? প্রতিপক্ষের তবে বারোটা বাজারই কথা, যেটা টের পেল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের দুই ওপেনারই আজ (শুক্রবার) একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন।

দেখেশুনে শুরু করার পর মাত্র ৫২ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন তামিম-লিটন। এরপর ১১০ বলে ছুঁয়ে ফেলেন ১০০ রানের জুটি। পরের ৫০ পার করতে একটু সময় নিয়েছেন তারা।

১৭৮ বলে দেড়শ ছোঁয়া হয় এই জুটির। তারা ১৮২ রানে পৌঁছার পর ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। তখন ৩৩.২ ওভার খেলা হয়েছে।

আড়াই ঘন্টার বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকে বৃষ্টিতে। দ্বিতীয়বার যখন শুরু হয়, তখন ওভার কমিয়ে ৪৩ করা হয়। বাংলাদেশ পায় আর ১০ ওভারের (৯.৪ ওভার) মতো ব্যাটিংয়ের সুযোগ।

ওভার কমে যাওয়ায় রীতিমত মারমুখী হয়ে ওঠেন তামিম-লিটন। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটাতে থাকেন মাঠ জুড়ে। এরই ফাঁকে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটির রেকর্ডটিও নিজেদের করে নেন এই যুগল।

২০১৭ সালে কার্ডিফে সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। সেটি ছিল এতদিন ওয়ানডে ক্রিকেটে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি।

লিটনের পর সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিমও। ৯৮ বলে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন দেশসেরা ওপেনার। দুই সেঞ্চুরিয়ান তারপরও বেধড়ক পেটাতে থাকেন জিম্বাবুইয়ান বোলারদের। একটু বেশিই বিধ্বংসী ছিলেন লিটন। ১৩৫ বলে ১৫০ রান স্পর্শ করেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান।

যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, লিটন দুইশও কি আজ (শুক্রবার) করে ফেলেন কি না- ভাবছিলেন টাইগার সমর্থকরা। শেষতক লিটনের চোখ ধাঁধানো ইনিংসটা থেমেছে ১৭৬ রানে। ১৪৩ বলের বিধ্বংসী ইনিংসে ১৬টি চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কা হাঁকান এই ডানহাতি, গড়েন দেশের ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডও।

এরপর মাহমুদউল্লাহ (৩) সুবিধা করতে পারেননি। মাম্বার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। ৩ বলে ৭ রানে ফিরে যান আফিফ হোসেন ধ্রুবও। তবে তামিম শেষ পর্যন্ত অপরাজিতই ছিলেন। ১০৯ বলে ৭ চার আর ৬ ছক্কায় দেশসেরা এই ওপেনার খেলেন ১২৮ রানের ইনিংস। এটি তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।

গোনিউজ২৪/এমএম

খেলা বিভাগের আরো খবর