আবারও ক্রিকেট কেলেঙ্কারিতে জড়ালো ভারত, অভিযুক্ত ৬ ক্রিকেটার


স্পোর্টস ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৭, ০৯:০১ এএম
আবারও ক্রিকেট কেলেঙ্কারিতে জড়ালো ভারত, অভিযুক্ত ৬ ক্রিকেটার

১ বলে বাকি ছিল ১২ রান। ক্রিকেট দুনিয়ায় টি-টোয়েন্টি জমানাতেও যা কিনা প্রায় অসম্ভবের সমান। কিন্তু রাজপুতানা প্রিমিয়ার লিগে ঘটেছে এমনই ঘটনা, যেখানে ওই বলটি বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে গেল ব্যাটিং দল। ঠিক কীভাবে সম্ভব হল এই অসাধ্য সাধন? 

ম্যাচের শেষ বলের সময় প্রথমে ওয়াউড বল করে ফেলে বোলার। অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কারণে উইকেটকিপারের নাগাল পেরিয়ে বল চলে গেল বাউন্ডারিতে। অর্থাৎ ওই বলটি থেকে এল পাঁচ রান, তারপরের বলটি নো’বল করল বোলার, সেই সঙ্গে দৌড়ে এক রান নিল ব্যাটসম্যানও। এভাবে ১ বলে যখন ৫ রান বাকি, ফের একবার প্রথমবারের পুনরাবৃত্তি ঘটল। এভাবেই এক বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে গেল ব্যাটিং দল। কিন্তু অনেকেই জানেন না, মাঠের ভেতরের এই খেলাটিকে একটি নাটকের অংশই বলা যায়। 

ম্যাচ গড়াপেটার আসল খেলা ততক্ষণ জারি ছিল মাঠের বাইরে। এভাবেই একের পর এক ম্যাচে গড়াপেটা চলছে। তাও কিনা ভারতেই। ১১ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত কে এল সাইনি স্টেডিয়াম অনুষ্ঠিত রাজপুতানা ক্রিকেট লিগে ম্যাচ গড়াপেটার ঘটনাটি সামনে এসেছে। 

সম্প্রতি গোটা চক্রটির হদিশ পেয়েছে পুলিশ। ম্যাচ গড়াপেটা এবং স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য ইতিমধ্যে তাঁরা গ্রেপ্তার করেছে ১৪ জনকে। এর মধ্যে ৬ জন ক্রিকেটারও রয়েছে।

জানা গেছে, বোর্ড সূত্রে খবর পেয়েই জয়পুর পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। একদল ব্যক্তি বেনিয়মে ক্রিকেট লিগ চালু করেছে এবং টুর্নামেন্টে ব্যাপক পরিমাণে বেটিং চলছে, বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এমনই অভিযোগ তোলা হয়। এরপর ওই চক্রের সন্ধানে নেমে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। 

শেষ পর্যন্ত অবশ্য ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন তাঁরা। জয়পুর পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় আগরওয়াল জানিয়েছেন, শহরের চারটি বড় বড় হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে ৩৮.৪৭ লক্ষ টাকা, ল্যাপটপ, ওয়াকিটকি এবং ১৮টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। আটকদের মধ্যে সবাই পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি এবং জয়পুরের বাসিন্দা। এরা হয় কেউ খেলোয়াড়, কেউ আম্পায়ার কিংবা টুর্নামেন্টের উদ্যোক্তা। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ওয়াজির খান, বাহারে খান, দীনেশ তালওয়ার, রাজেশ পারেখ, পবন কুমার, জসবিন্দর সিং, ইরফান খান, আনন্দদীপ কাপুর, গুরমীত সিং, আমনদীপ, যতীন, লাভপ্রীত, কামান এবং মনোজ।

গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৪২০ এবং ১২০-বি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোট ছ’টি দল টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও আপাতত সেটি বন্ধ করা হয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই চক্রের সঙ্গে অনেকেই যুক্ত ছিল। ম্যাচের সময় বাইরে থেকে আসা নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করত তারা। ঠিকভাবে যাতে কাজ সংগঠিত হয় সেজন্য ২৪-২৫ জুন একটি বৈঠকও হয়েছিল। 

আপাতত ১৪ জনকে আটক করা হলেও পুলিশের সন্দেহ, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকেই যুক্ত রয়েছে। বাইরের দেশেও এই চক্র জাল বিস্তার করেছে। তবে আইসিসি বা বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই লিগের কোনো প্রকার অনুমতিই তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

গো নিউজ২৪/এনএফ

খেলা বিভাগের আরো খবর