অাইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি প্রিভিউ : পাকিস্তান (পর্ব ১)


খেলাধুলা ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৭, ০৭:২৮ পিএম
অাইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি প্রিভিউ : পাকিস্তান (পর্ব ১)

২০০৬ সালের যুব বিশ্বকাপে পাকিস্তান ক্রিকেটে নেতৃত্বে  ছিলেন সরফরাজ আহমেদ। ইমাদ ওয়াসিম, আনোয়ার আলীদের পাকিস্তান দলটি দ্বিতীয়বারের মতো জয় করে সবাইকে চমকে দেয়। ওই আসরের ফাইনালে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল রোহিত শর্মা, রবীন্দ্রর জাদেজাদের ভারত। 

এক বছরের মাথায় জাতীয় দলে অভিষেক উইকেটরক্ষক এ ব্যাটসম্যানের। কিন্তু শুরুর দিকে ভালো করতে না পারায় দল থেকে বাদ পড়েন সরফরাজ। এরপর ফিরে এসেছেন। দলকে দিয়েছেন সাফল্য। প্রথমে সহ-অধিনয়ক এরপর অধিনায়ক। ২০১৬ সাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর শহীদ আফ্রিদির কাছ থেকে ক্রিকেটের সব থেকে ছোট্ট ফরম্যাটের দায়িত্ব বুঝে নেন সরফরাজ। দায়িত্ব নিয়েই বাজিমাত সরফরাজের। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম ছয়টি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েন। চলতি বছরের শুরুতে আজহারের থেকে নেন ওয়ানডের দায়িত্ব। ওয়ানডেতেও একই সাফল্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কিছুদিন আগেই পাকিস্তান হারিয়েছে ২-১ ব্যবধানে।

ছোট্ট ক্যারিয়ারের সফল অধিনায়কের হাত ধরেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নাম লেখাতে যাচ্ছে পাকিস্তান। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সাফল্য সেমিফাইনাল। ২০০০, ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে গৌরবের এ আসরের শেষ চারে উঠেছিল পাকিস্তান। কিন্তু প্রতিবারই ফাইনালের টিকিট পেতে ব্যর্থ প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। পাকিস্তান ক্রিকেটপ্রেমিরা বিশ্বাস করে এবার ট্রফির ফাইনাল জিতবে পাকিস্তান। ফাইনালের ভাবনা একটু পরই ভাবতে হবে তাদেরকে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সবথেকে হাইভোল্টেজ ম্যাচে আগামী ৪ জুন মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। ফেভারিট পাকিস্তান ভারতকে হারাতে পারলে শুরুতেই এগিয়ে যাবে।

আনপ্রেডিকটেবল পাকিস্তানের এ টুর্নামেন্টে হারানোর কিছু থাকবে না। নতুন অধিনায়কের নেতৃত্ব দলটি মাত্র গড়ে উঠছে।সিনিয়র ক্রিকেটারদের অবসর এবং একাধিক খেলোয়াড় ফর্মে না থাকায় পাকিস্তানের দলটিকে ফেভারিট বলা যাচ্ছে না। তবে দলে রয়েছে একাধিক ম্যাচ জয়ী তারকা। নিজেদের দিনে তারা সেরা। মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিকের সঙ্গে রয়েছেন আজহার আলী ও আহমেদ শেহজাদ। বোলিং বিভাগে রয়েছে এক ঝাঁক পেসার। ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ আমির ও জুনায়েদ খান যেদিন জ্বলে উঠবেন সেদিন কপাল খারাপ ব্যাটসম্যানদের!

সবার নজর থাকবে বাবর আজমের দিকে। তরুণ এ ক্রিকেটার সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ক্রিকেট উপহার দিয়েছেন। ধারাবাহিকভাবে রান করছেন। ২২ বছর বয়সি এ ক্রিকেটার ২৬ ওয়ানডেতে পেয়েছেন ৫ সেঞ্চুরির স্বাদ। গত মাসেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ১২৫ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দিয়েছেন।বিশ্বমঞ্চে কেমন পারফরম্যান্স করেন সেটাই দেখার। চাপে থাকবেন পেসার মোহাম্মদ আমির। ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে শাস্তি পাওয়ার পর ১৫ ওয়ানডে খেলেছেন আমির। সাফল্য বলতে পেয়েছেন মাত্র ২০ উইকেট। নজরকাড়া বোলিং করেছেন তা বলা দুরহ। ইংলিশ কন্ডিশন তার জন্য আদর্শ। ভারত, শ্রীলঙ্কা কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় পেতে হলে আমিরকে জ্বলে উঠতেই হবে। তার উপরই নির্ভর করতে পাকিস্তানের বোলিং সাফল্য।

ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে আটে রয়েছে পাকিস্তান। এবার টুর্নামেন্টে ভালো করতে না পারলে রেটিং পয়েন্ট নিশ্চিত কমে যাবে প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। সরাসরি বিশ্বকাপে অংশ নিতে হলে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেরা আটে থাকতে হবে তাদেরকে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সাফল্যর উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। দেখা যাক যুব বিশ্বকাপের মতো বিশ্বমঞ্চে সরফরাজের হাত ধরে বড় কোনো সাফল্য পায় কি না ওয়াসিম আকরাম, ইনজামাম-উল-হকের উত্তরসূরীরা! বাজিরদরে পাকিস্তান পিছিয়ে। কিন্তু দলটি যখন পাকিস্তান তখন অনেক কিছুই সম্ভব। বরাবরই তারা আনপ্রেডিকটেবল!

পাকিস্তানের ম্যাচ:
৪ জুন: প্রতিপক্ষ ভারত
৭ জুন: প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা
১২ জুন:  প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা

প্রস্তুতি ম্যাচ:
২৭ মে: প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ
২৯ মে: প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।
গো নিউজ২৪/এআর

খেলা বিভাগের আরো খবর