নাগরিকত্ব বিল ভারতের ধর্ম নিরপেক্ষ অবস্থান দুর্বল করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, ০৪:৪৬ পিএম
নাগরিকত্ব বিল ভারতের ধর্ম নিরপেক্ষ অবস্থান দুর্বল করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখান থেকে পদস্খলন হলে ভারতের ঐতিহাসিক অবস্থান দুর্বল হয়ে যাবে।

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ড. মোমেন।
 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, এ ব্যাপারে যে কথা উঠেছে, সেগুলো সত্য না। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ধর্মীয় নির্যাতন হয় না। আমাদের দেশে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের কেউ নির্যাতিত হয় না।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বিদেশ থেকে আমাদের অনেক লোক দেশে ফিরে আসছে, তার কারণ হচ্ছে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছি এবং এখানে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে আমাদের।

সব ধর্মের লোকদের সমান দৃষ্টিতে দেখা হয় জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের (অন্য ধর্মের লোকদের) সমানভাবে একই দৃষ্টিতে দেখি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে। কে, কোন ধর্মের সেটা নিয়ে আমরা কোনো বিচার করি না। বিচার করি, সে বাংলাদেশের নাগরিক কিনা বা তার যোগ্যতার মাপকাঠি। আমাদের সব রকমের চাকরি-বাকরিতে সকল ধর্মের লোক রয়েছে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে।’

ভারতের দেওয়া তথ্য সত্য নয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত যে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে, কথাটা সত্য না।  যারা তথ্য দিয়েছেন তারা সত্য বলেননি। 

আবদুল মোমেন বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। দুই দেশের মধ্যে এখন অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চলছে, যা সোনালি অধ্যায় নামে পরিচিত। আমাদের দেশের মানুষ আশা করে ভারত এমন কিছু করবে না, যা আমাদের জনগণের দুশ্চিন্তার কারণ হবে।

এদিকে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের শুনানি প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন ড. মোমেন। 

তিনি বলেন, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। অং সান সু চিকে জেল থেকে বের করতে আমি একাধিকবার রাস্তায় সমাবেশ করেছি। তিনি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতীক ছিলেন। তার এমন অধঃপতন হয়েছে দেখে আমার দুঃখ লেগেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাতজন নোবেলজয়ী তাকে (অং সান সু চি) আহ্বান জানিয়েছেন তিনি যেন সত্য কথা বলেন। আমরা খুব গর্বিত গাম্বিয়ার মতো দেশ আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলাটি নিয়ে এসেছে।

ড. মোমেন বলেন, আমরা চাই রোহিঙ্গারা তাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে সুন্দর জীবন যাপন করুক। আমরা চাই এ ধরনের দুর্ঘটনা ও নির্যাতন আর হবে না। এ জন্যই জবাবদিহিতা দরকার। ওআইসি’র সদস্য হয়ে এবং নীতিগত কারণে আমরা চাই না কোনো লোক শোষিত হোক।

গো নিউজ২৪/আই

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর