বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সামনে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের মডেল হিসেবে গণ্য হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বর্তমানে বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় আসীন হয়েছে। ভবিষ্যতেও দুই দেশ সব সহযোগিতা বিদ্যমান রাখবে এবং দু’দেশের এই সম্পর্ক বিশ্বে মডেল হিসেবে গণ্য হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবন স্থাপনের সুযোগ করে দেওয়ায় সেদেশের সরকার, পশ্চিম বাংলা সরকার এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষসহ সে দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাঙালির জীবনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরে অবদান ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।
কবি গুরুর এই সৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি বাঙালির জীবনে তিনি উজ্জ্বল বাতিঘর।
বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কবিগুরুর হাতে গড়া এক অনন্য প্রতিষ্ঠান এই শান্তিনিকেতন। প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে বৃহত্তর বিশ্বকে গ্রহণের উপযুক্ত করে তোলার জন্য জ্ঞানদান করার উদ্দেশ্যে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক পুরোনো। ১৯৯৯ সালে বিশ্বভারতী আমাকে দেশিকোত্তম ডিগ্রি প্রদান করে। আমার ইচ্ছে ছিল এখানে বাংলাদেশ বিষয়ে চর্চার জন্য একটি আলাদা জায়গা থাকুক।
২০১০ সালে আমার ভারত সফরের সময় এই ভবনটি স্থাপনের ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত এটি আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে- বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে বাংলাদেশ ভবন স্থাপনের সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার, ভারত সরকার এবং সর্বোপরি ভারতের বন্ধুপ্রতীম জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এর আগে শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট সফরসঙ্গীদের নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা।
বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে কলকাতা থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার উত্তরে বীরভূম জেলার বোলপুর শান্তি নিকেতনে যান। বিশ্ব ভারতীর উপাচার্য প্রফেসর সবুজ কলি সেন শান্তিনিকেতনে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
বাংলাদেশ সময় ১২টা ৫৫ মিনিটে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এখান থেকে শেখ হাসিনা কলকাতা ফিরে জোড়াসাকো ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন। সন্ধ্যায় হোটেল তাজ বেঙ্গলে কলকাতা চেম্বার নেতারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসানসোলে যাবেন। সেখানে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ সমাবর্তনে তাকে সম্মানসূচ ডিলিট ডিগ্রি দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বর্ণপদক দেবেন। এরপর কলকাতায় ফিরে নেতাজী সুবাস বসু জাদুঘর পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা। সেদিনই দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
গো নিউজ২৪/আই