অস্ত্রধারী সেই নিয়াজুল এখন কোথায়?


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০১৮, ০৯:১৯ এএম
অস্ত্রধারী সেই নিয়াজুল এখন কোথায়?

নিয়াজুল ইসলাম খানপ্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলাকারী নিয়াজুল ইসলাম খানকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। নিয়াজুল কোথায় আছেন সে তথ্যও নেই পুলিশের কাছে। তবে পুলিশ খুঁজে না পেলেও বাদী হয়ে গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অস্ত্র ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ দাখিল করেছেন নিয়াজুল।

জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অস্ত্রধারী নিয়াজুলকে তাঁরা খুঁজছেন। পেলেই আইনের আওতায় আনা হবে। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ শামীম ওসমানের চার ক্যাডারের একজন হিসেবে নারায়ণগঞ্জবাসী নিয়াজুলকে আগে থেকেই চিনতেন। প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলার পর এখন আলোচিত নিয়াজুল।

গণমাধ্যমে অস্ত্র হাতে ছবি প্রকাশ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে আর তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। নগরীর উত্তর চাষাঢ়ার বাড়িতে বা শিবু মার্কেটে নিজের রেস্তোরাঁয়ও ছিলেন না নিয়াজুল।

বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টার দিকে উত্তর চাষাঢ়ার বাড়িতে গিয়েও নিয়াজুল ইসলামের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তাঁদের ঝুটের ব্যবসা পরিচালনাকারী ব্যবস্থাপক পরিচয় দেওয়া খোকা মিয়া বলেন, এখানে নিয়াজুল ইসলাম থাকেন না। তাঁর ছোট ভাই রিপন ও তাঁর ভাতিজা রাতুল এখানে থাকেন। খোকা মিয়া নগরীর চাষাঢ়া রেললাইন এলাকায় পাশের ঝুট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যেতে বলেন।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ওই অফিসের দেয়ালে শামীম ওসমানের ‘৪ খলিফা’ (সারোয়ার, মাকসুদ, লাল ও নিয়াজুল) বিশাল ছবি লাগানো হয়েছে। পাশে নিয়াজুল ইসলামের ছবি একটি ছোট ফ্রেমে রয়েছে। এখানে কথা হয় নিয়াজুল ইসলামের ছোট ভাই ইসলাম খান রিপনের সঙ্গে।

রিপন বলেন, তাঁর ভাই ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় ওই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তাঁর ভাইয়ের লাইসেন্স করা অস্ত্রটি ছিনতাই হয়েছে। বুধবার তাঁর মাধ্যমে নিয়াজুল ইসলাম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে কী আছে জানতে চাইলে ইসলাম খান রিপন বলেন, বড় ভাই কী লিখেছেন, আমি কিছু জানি না। নিয়াজুল ইসলাম বর্তমানে কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই দিনের ঘটনায় তাঁর ভাই (নিয়াজুল) গুরুতর আহত হলে চিকিৎসার জন্য ভারত গেছেন বলে দাবি করেন তিনি।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই দিনের হামলায় আহত জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানসহ ১৭ জনকে আসামি করে মডেল থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ওই দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় কেউ কোনো মামলা করেনি। বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারকারীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অস্ত্রধারী নিয়াজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। নিয়াজুলের লিখিত অভিযোগটি জিডি হিসেবে নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

এদিকে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিয়াজুলকে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রিয়াজুলকে গনধোলাই দেয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ওই ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখছে। আইভীকে নয়, বরং নিয়াজুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশে আইভী সমর্থিতরা ঘটনার দিন তার ওপর হামলা চালিয়েছিল বলে দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ও গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে আসা এক ভিডিওচিত্রে।

গোনিউজ২৪/কেআর

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর