কুমিল্লায় প্রিজাইডিং অফিসারের কান্না


প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০১৭, ০৩:৩৪ পিএম
কুমিল্লায় প্রিজাইডিং অফিসারের কান্না

কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হঠাৎ করেই দখল হয়ে গেছে ৭ নং ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। অভিযোগ রয়েছে ‘ওপর থেকে আসা নির্দেশ’ তামিল করতে গিয়ে কেন্দ্রটি হঠাৎ করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী শূন্য হয়ে পড়ে। আর এসময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রিসাইডিং অফিসারের কাছ থেকে জোর করে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে সিল মারতে থাকে। এ সময় কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং অফিসার মো. দিদারুল ইসলামকে জাল ভোট না দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ জানাতে ও ব্যর্থ হয়ে নীরবে কাঁদতে দেখা গেছে।

বুধবার দুপুর পৌনে একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ফিরে আসেনি। কেন্দ্রটিতে ২ হাজার ২০ ভোট রয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা স্থানীয় ভোটার আবদুল করিম, আবুল হোসেন, সোহেল রানা জানান, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ৭ নং ওয়ার্ডের গোবিন্দুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল থেকে সুষ্ঠুভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হলেও দুপুর পৌনে একটার দিকে ভোটারের উপস্থিততি কমে যায়। এসময় হঠাৎ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শূন্য হয়ে পড়ে।

ঠিক এসময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার ভাই এমরান হোসেনের নেতৃত্বে  ২০-২২ জন সমর্থক কেন্দ্রটিতে ঢুকে প্রিজাইডিং অফিসার মো. দিদারুল ইসলামকে জানান, ‘আমাদের ওপর থেকে পাঠানো হয়েছে। আমাদের ঢুকতে দেন।’

গোবিন্দপুর কেন্দ্র দখল হওয়ার পর নীরবে চোখের জল ফেলেন প্রিজাইডিং অফিসার মো. দিদারুল ইসলাম 

প্রিজাইডিং অফিসার এতে রাজি না হওয়ায় তারা উচ্চবাচ্য শুরু করেন। তারা সরকারদলীয় প্রার্থীর সমর্থক তাই তাদের ইচ্ছেমতো ব্যালট পেপার দিতে হবে এসব দাবি করতে থাকেন।

কেন্দ্রটিতে ওই সময়ে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভোটার জানান, প্রিসাইডিং অফিসার তাদের দাবিতে সম্মত না হয়ে তাদের বের হয়ে যেতে বলেন। এসময় তারা প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। ঠিক এসময় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভাই ও স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খানের ছেলে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে একটি ফোন ধরিয়ে দেন। ফোনের কথপোকথনের পর প্রিসাইডিং অফিসার দিদারুল ইসলাম হতাশ হয়ে পড়েন আর তার টেবিল থেকে ব্যালট বই নিয়ে ইচ্ছেমতো সিল মারতে থাকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা।

এ সময় প্রিজাইডিং অফিসারকে বলতে শোনা যায়, ‘ আই অ্যাম নট সেফ’। তিনি তার টেবিলে বসে এসব ঘটনা দেখে নীরবে কাঁদতে থাকেন।বা. ট্রি.

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর