নতুন ইসি প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের: বিএনপি


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭, ১১:০৯ এএম
নতুন ইসি প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের: বিএনপি

সাবেক সচিব কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশন নিয়ে ‘নিরাশ ও হতাশ’ বিএনপি বলছে, এই নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে ২০-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, তাঁরা মনে করেন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের প্রতিফলন ঘটেছে। । বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সব মহল থেকে দাবি ছিল অনুসন্ধান কমিটির বাছাই করা ১০ জনের নাম জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। তাঁদের জীবন-বৃত্তান্ত ও কর্ম অভিজ্ঞতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা হবে। এ পন্থা অনুসরণ করা হলে কমিশন গঠন প্রক্রিয়াটি কিছুটা হলেও স্বচ্ছতা পেত। কিন্তু তা করা হয়নি। আমরা নিরাশ ও হতাশ হয়েছি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, শেষ মুহূর্তে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় সন্দেহ হলো, কাদের ইসিতে রাখা হবে, সেটি ছিল শাসক মহলের পূর্বপরিকল্পিত।

‘রাষ্ট্রপতির যেকোনো সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নেব’-প্রধানমন্ত্রীর এমন একটি উক্তি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন। সাংবিধানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী দুটো বিষয় ছাড়া (প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ) অন্য সব বিষয় রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য। সংগত কারণে আমরা মনে করতে পারি বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের প্রতিফলন ঘটেছে।

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, নুরুল হুদা যুগ্ম সচিব হিসেবে চাকরি জীবন শেষ করেন। অতিরিক্ত সচিব এবং সচিব হয়েছেন শুধুই কাগজে। অভিজ্ঞ সচিব ছাড়া কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এ ঘটনা নজিরবিহীন। রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়া এমন হওয়ার কথা না।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত নুরুল হুদাকে বাধ্যতামূলক অবসরের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দল সম্পর্কে তার মনে ক্ষোভ থাকতে পারে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ শাসনামলে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পেয়ে তিনি আওয়ামী লীগের প্রতি অনুরাগ পোষণ করতে পারেন। এ দুই বিপরীত পরিস্থিতির মধ্যে তিনি কতটুকু নিরপেক্ষতা অবলম্বন করবেন সে ব্যাপারে জনমনে যৌক্তিক প্রশ্ন রয়েছে। একটি নির্বাচন কমিশনের যাত্রার শুরুতে আস্থার সংকট ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যার জন্ম দিতে পারে।

ফখরুল অভিযোগ করেন, ১৯৯৬ সালে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক হিসেবে বিএনপি সরকারবিরোধী ‘জনতার মঞ্চে’র একজন সংগঠক ছিলেন। এমন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া সরকারি চাকরিবিধির লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্য দিকে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নুরুল হুদা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড নামের সরকারি একটি প্রকল্পের এমডি হিসেবে সরকারের লাভজনক পদে কাজ করেছেন। আমরা সরকারি চাকরি শেষে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিতদের নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত না করার প্রস্তাব করেছিলাম। এ জন্যই যে সাধারণ সরকারের আস্থাভাজনদেরই এসব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। আমরা চেয়েছিলাম কারও কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ কিংবা কারও প্রতি ক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি যেন ইসির মতো নিরপেক্ষ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ না পান। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাই হয়েছে। এসব কারণে জনমনে নুরুল হুদা সম্পর্কে নেতিবাচক উপলব্ধি সৃষ্টি হয়েছে।

নবনিযুক্ত ইসি সদস্য মাহবুব তালুকদারের নাম বিএনপি প্রস্তাব করেছিল বলে স্বীকার করেছেন বিএনপির মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খান এবং ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গো নিউজ২৪/জা আ 

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর