বঙ্গভবনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬, ০৭:২৬ এএম
বঙ্গভবনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ আজ। বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৈঠকে বিএনপির ১৩ দফা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে। এ সময় রাষ্ট্রপতির কাছে বিশিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তির নামের একটি তালিকা দিতে পারে বিএনপি।

 
বিএনপি ছাড়াও চারটি রাজনৈতিক দলকে ইসি পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনার জন্য বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন রাষ্ট্রপতি। 

আজ রোববার বিকেলে বিএনপির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আলোচনার মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর ২০ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টি, ২১ ডিসেম্বর এলডিপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং ২২ ডিসেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাকি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে পর্যায়ক্রমে ডাকা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।


বিএনপির একাধিক নেতা জানান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিখিত বক্তব্য দেবেন। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ১৩ দফা প্রস্তাব সংবলিত বইটিও রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেবেন তিনি। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রথমে বিএনপির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের তালিকা পাঠানো হয়। পরে প্রতিনিধি সংখ্যা বাড়ানো হয়।


সূত্র জানায়, নতুন ইসি গঠনের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে সার্চ কমিটি করতে কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের নামের তালিকাও করেছে বিএনপি। এ ব্যাপারে খালেদা জিয়া দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন। গতকাল শনিবার রাতেও খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে এক বৈঠক হয়। দলের নীতিনির্ধারকরা বিতর্কমুক্ত ও দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এমন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দিয়ে সার্চ কমিটি গঠনের কথা প্রস্তাবে থাকছে। তাদের মধ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব করা হবে। সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী, ফজলুল করিম, সৈয়দ জেআর মোদাচ্ছির হোসেন ও মাইনুর রেজা চৌধুরীর নাম প্রস্তাবের তালিকায় থাকতে পারে বলে সূত্র জানায়। এ ছাড়া এক বা একাধিক বিশিষ্ট নারীর নাম ও প্রস্তাবের কথাও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।


এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, সার্চ কমিটির কাঠামোর ওপর আগামী রাজনীতির অনেক কিছু নির্ভর করছে। সরকার আন্তরিক হলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করবে। অন্যথায় মনে করব সরকার সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না।


গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাষ্ট্রপতি সংলাপের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও আস্থাশীল নির্বাচন কমিশন গঠনে উদ্যোগ নেবেন বলে প্রত্যাশা করছে বিএনপি। সত্যিকার অর্থে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে পারে, সেই ধরনের কমিশন চায় দেশবাসী। সমগ্র জাতির প্রত্যাশাই ব্যক্ত হয়েছে বিএনপির ১৩ দফা প্রস্তাবে।


খালেদা জিয়া গত ১৮ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন নির্বাচন কমিশন ও সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে তার দলের ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। যার মূল কথা ছিল 'সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের' মতৈক্যের ভিত্তিতে নতুন ইসি গঠন করতে হবে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী ৬ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে গিয়ে খালেদা জিয়ার ওই প্রস্তাবের কপি পেঁৗছে দেন।


বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এ জন্য নতুন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করছেন রাষ্ট্রপতি।

 

গো নিউজ ২৪/ এস কে 

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর