কাতারে সেনাঘাঁটি বন্ধ করবে না তুরস্ক


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০১৭, ১০:৪৮ এএম
কাতারে সেনাঘাঁটি বন্ধ করবে না তুরস্ক

কাতারে নির্মিত তুরস্কের সেনাঘাঁটি বন্ধে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন আরব দেশগুলোর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে আঙ্কারা। তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফিকির ইজিক দেশটির এক টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আরব রাষ্ট্রগুলোর দাবি প্রত্যাখ্যানের কথা জানান।

তিনি বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সেনাঘাঁটি। এজন্য কারও মনক্ষুণ্ন হওয়া উচিত নয়। তুরস্কের এনটিভিকে ফিকির ইজিক আরও বলেন, সৌদি জোটের ঘাঁটি বন্ধের আহ্বান এখনও আমি দেখিনি। তবে ২০১৪ সালে কাতারের সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের বিষয়টি বিবেচনায় আনার কোনও পরিকল্পনা তুরস্কের নেই। এ চুক্তির আওতায় কাতারে ঘাঁটি তৈরি করেছে তুরস্ক।

কাতারে তুর্কি সামরিক ঘাঁটি পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এটি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে দোহার সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্কের বিষয়ে নাক গলানো হয়েছে বলে মনে করছে তুরস্ক।

সৌদি আরবের নেতৃত্বে চার আরব দেশের পক্ষ থেকে কাতারের কাছে যে ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, তার মধ্যে কাতারে তুর্কি সামরিক ঘাঁটি বন্ধের কথাও বলা হয়েছে। কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার শর্ত হিসেবে এই ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেছে সৌদি জোট।

‘সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের’ অভিযোগে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী চারটি আরব রাষ্ট্র ২২ জুন ১৩ দফা দাবির একটি তালিকা দিয়েছে দোহাকে। এতে আল জাজিরা টেলিভিশন বন্ধ এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করাসহ আরও কিছু দাবি পূরণের কথা বলা হয়েছে। ওইসব দাবির তালিকায় আরও আছে: কাতারে নির্মিত তুরস্কের সেনাঘাঁটি বন্ধ করা এবং যেসব ব্যক্তিকে তাদের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়া হয়েছে, তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়া। ১০ দিনের মধ্যে এসব শর্ত মেনে নেয়ার জন্যও বলা হয়েছে কাতারকে।

আরব বিশ্বের ইসলামি আন্দোলন মুসলিম ব্রাদারহুড, হিজবুল্লাহ, আল কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের সঙ্গেও সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বলা হয়েছে দেশটিকে। অবশ্য কাতার আগে থেকেই বলে আসছে, এসব সংগঠনের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। কাতার শর্তগুলো মেনে নিলে প্রথম বছর প্রতি মাসে একবার দেশটির কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা হবে। দ্বিতীয় বছরে তিন মাস পরপর এটা করা হবে এবং পরবর্তী ১০ বছর বাৎসরিকভাবে কাতারকে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

আরব দেশগুলোও দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, কাতার ইসলামপন্থিদের সহায়তার দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ দেখিয়ে আসছে দেশগুলো। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই দলটি বর্তমানে নিষিদ্ধ। ব্রাদারহুড রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করে এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাদের এই আদর্শকে হুমকি হিসেবে দেখে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো।

২০১২ সালে মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ব্রাদারহুড নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলেও ২০১৩ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। এরপর থেকে ব্রাদারহুড সমর্থকদের ওপর চালানো হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর নির্যাতন। এতে সমর্থন দেয় সৌদি সরকার।

গো নিউজ২৪/ আরএস

এ সম্পর্কিত আরও সংবাদ


আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর