আজ নন্দিত নায়িকার জন্মদিন


বিনোদন প্রতিবেদক: প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮, ০৩:৫৬ পিএম
আজ নন্দিত নায়িকার জন্মদিন

‘এক সময়ের নায়িকা’ এ কথাটি এখন তার ক্ষেত্রে মানায়। কারণ অনেক দিন থেকেই ক্যামেরার সামনে নেই। মাঝে দু-একটি ছবিতে কাজ করলেও আগের মতো সাফল্য পাননি। দীর্ঘ এই বিরতিতে বেশ মুটিয়ে গেছেন তিনি। তারপরও তিনি ভক্তদের কাছে স্বপ্নের নায়িকা। হয়তো অনেকেই জানেন না স্বপ্নের সেই নায়িকার জন্মদিন আজ। 

এহতেশামের হাত ধরে ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মধ্যদিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় শাবনূরের। এই চলচ্চিত্রে শাবনূরের বিপরীতে অভিনয় করেন সাব্বির। এরপর জহিরুল হকের ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে সালমান শাহর সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেন তিনি। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই নায়িকাকে। একের পর এক হিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন ঢালিউডের জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী।

একটা সময় ছিলো শাবনূর মানেই সুপারহিট চলচ্চিত্র। শাবনূর মানেই দর্শকের সেরা পছন্দ। ভালোবেসে অনেকেই শাবনূরকে ঢাকাই ছবির রানী বলে ডাকেন। বর্তমানে চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকলেও বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে কথা বললে শাবনূরের নাম চলে আসে অনায়াসেই। তিনি নিজেকে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনন্য এক অভিনেত্রী হিসেবে।

জীবনের এই বিশেষ দিনটিতে ভক্তদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন তিনি। চলচ্চিত্রের সহকর্মীরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এই শুভেচ্ছা আর ভালোবাসাকেই জীবনের সেরা অর্জন বলে মনে করেন শাবনূর।

তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রই আমাকে আজকের শাবনূর বানিয়েছে। দেশে-বিদেশে যতো নাম-সুনাম সব দিয়েছে চলচ্চিত্র। আমিও কোনোদিন আমার জানামতে চলচ্চিত্রকে ছোট করিনি, খাটো করিনি। এখনো সিনেমা ও সিনেমার মানুষ আমার কাছে সবচেয়ে আপনজন।

আর এই সিনেমার হাত ধরে মানুষের যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি সেটাই আমার জীবনের সেরা উপহার। সবার কাছে দোয়া চাই যেন ছেলেকে নিয়ে ভালো থাকতে পারি। সবার জন্য আমিও অনেক দোয়া করি।’ পারিবারিক আয়োজনে আজ বাড়িতেই কাটবে শাবনূরের জন্মদিন। একান্তই কাছের কিছু মানুষের সঙ্গে দেখা হতে পারে। গল্প-আড্ডা আর স্মৃতিচারণে মুখর হবেন তাদের সঙ্গে।

১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে জন্মগ্রহণ করেন শাবনূর। তার পর্দার পেছনের নাম নুপুর। প্রথম চলচ্চিত্র কিংবদন্তি পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’। ১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর ‘চাঁদনী রাতে’ মুক্তি পায়।

তবে শাবনূরের মুগ্ধতার ইতিহাস শুরু হয় ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জহিরুল হক পরিচালিত ‘তুমি আমার’ ছবিটি দিয়ে। সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বেঁধে এই নায়িকা ১৪টি ছবি করেন। তার সবগুলোই রেকর্ড সংখ্যকভাবে ব্যবসায়িক সাফল্য পায়। এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সফল জুটিগুলোর অন্যতম। বলা হয়ে থাকে সালমান-শাবনূর জুটি ইন্ডাস্ট্রির মিথ।

পরবর্তীতে এদের আদর্শ মেনেই এখানে নায়ক-নায়িকার জুটি গড়ে উঠেছে। তবে সালমানের যুগে ওমর সানী, অমিত হাসান, আমিন খান, বাপ্পারাজদের সঙ্গেও অভিনয় করে সফলতা পান শাবনূর। সালমান মৃত্যু পরবর্তী সময়ে রিয়াজ, শাকিব খান ও ফেরদৌসসহ অনেক নায়কের সঙ্গেই অভিনয় করে সফল হন শাবনূর। তবে রিয়াজের সঙ্গে প্রায় অর্ধশত চলচ্চিত্রে জুটি বাঁধেন তিনি। এবং সবগুলো ছবিই ছিলো ব্যবসায়িকভাবে সফল এবং আলোচিত। বলা হয়ে থাকে, রিয়াজ-শাবনূর জুটির পর ঢাকাই চলচ্চিত্রে সার্বজনীনভাবে জনপ্রিয় সুপারহিট আর কোনো জুটি আসেনি।

এই জুটির ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘মোল্লাবাড়ির বউ’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘বুক ভরা ভালোবাসা’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিড়ে’, ‘মন মানে না’ ইত্যাদি ছবিগুলো মাইলফলক হয়ে আছে এদেশীয় চলচ্চিত্রে ব্যবসায়িক সাফল্যের ইতিহাসে।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে শাবনূরের সবচেয়ে বড় অর্জন ভক্ত-দর্শকের ভালোবাসা। পাশাপাশি অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো চলচ্চিত্রের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়া পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার ও সর্বাধিক ১০ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার।

ব্যক্তি জীবনে ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদের সঙ্গে শাবনূরের আংটি বদল হয় এবং ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাকে বিয়ে করেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন ও নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি ছেলে সন্তানের মা হন। তার ছেলের নাম আইজান নিহান।

গোনিউজ২৪/এআরএম

বিনোদন বিভাগের আরো খবর