‘প্রথম বাংলাদেশ বিএনপির দলীয় সংগীত হয় কিভাবে?’


বিনোদন প্রতিবেদন: প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০১৮, ০৭:২৮ পিএম
‘প্রথম বাংলাদেশ বিএনপির দলীয় সংগীত হয় কিভাবে?’

বিএনপি তাদের দলীয় সংগীত হিসেবে ব্যবহার করছে ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই গানটি। অনুমতি না নিয়েই গানটি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গানের শিল্পী ও সুরকার।

শিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহ ও সুরকার আলাউদ্দিন আলীর অভিযোগ, বিএনপি তাদের সঙ্গে কথা না বলেই গত প্রায় চল্লিশ বছর ধরে গানটি ব্যবহার করছে দলীয় সংগীত হিসেবে।

শাহনাজ রহমতউল্লাহ বলেন, “এটা কোনো দলের গান নয়। আমি গানটা কোনো দলের জন্য গাইনি।”

তিনি জানান, সত্তর দশকের শেষভাগে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নওয়াজিশ আলী খান প্রযোজিত ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে মনিরুজ্জামান মনিরের লেখা গানটি তিনি প্রথম পরিবেশন করেন। এরপর দেশজুড়ে গানটি ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে।

সেই গান কীভাবে বিএনপির দলীয় সংগীত হল- এই প্রশ্ন রাখেন শাহনাজ রহমতউল্লাহ, যিনি ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’ এর মত বহু জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানের শিল্পী।

তিনি বলেন, “এটা একটা দেশের গান। ‘প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ’ এখানে আমার দেশের কথা বলছি। ‘আমার আঙিনায় ছড়ানো বিছানো’-এখানে তো দেশের কথাই বলছি। তাহলে বিএনপির দলীয় সংগীত হয় কীভাবে?”

প্রায় একই ধরনের কথা বলেছেন গানটির সুরকার আলাউদ্দিন আলী। তিনি বলেন, “কীভাবে কীভাবে কখন এটা যে দলীয় সংগীত হয়ে উঠেছে এটা আমি নিজেও জানি না। পরে জানতে পারি বিষয়টা।”

তিনি অভিযোগ করেন, “গান ব্যবহারে এখন কেউ জিজ্ঞাসা করে না।… যখন খুশি ব্যবহার করে। কোনো অনুমতিও নেয় না, জিজ্ঞেসও করে না। কোনও ধন্যবাদও জানায় না।”

‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটির গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা। গানটির শিল্পী ও সুরকারের অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য গ্লিটজ জানতে পারেনি।

তবে চার বছর আগে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি লিখেছিলেন, ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচার হওয়ার পর তখনকার রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তাকে দুই দফা ডেকে নিয়ে কথা বলেন। ‘মোটামুটি শিক্ষিত বেকার শুনে’ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে অফিসার পদে চাকরি দেন। 

ওই সময়ই ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটিকে বিএনপির দলীয় সংগীত ঘোষণা করেন জিয়া। আর তার পছন্দের গীতিকার হিসেবে পরিচিতি পান মনিরুজ্জামান মনির।

বিএনপির ওয়েবসাইটে এখন গানটি রাখা হয়েছে ‘দলীয় সংগীত’ হিসেবে।  শিল্পী, গীতিকার ও সুরকারের নামও সেখানে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গানটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুরকার, গীতিকার ও শিল্পী-তিনজনেরই লিখিত অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে উনারা ফৌজদারি মামলাও করতে পারেন। 

গো নিউজ২৪/জাবু

বিনোদন বিভাগের আরো খবর