টাকার অভাবে মিলাদের জিলেপি দিয়েই মেয়েকে মিষ্টি মুখ


মাদারীপুর প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০১৮, ০৯:৫২ এএম
টাকার অভাবে মিলাদের জিলেপি দিয়েই মেয়েকে মিষ্টি মুখ

দিনমজুর বাবার ভাঙা ঘরে আশার আলো নিয়ে এসেছে কন্যা কাকলী। সে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার এইচএসপি পরীক্ষায় একমাত্র জিপিএ-৫ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী।

ভালো ফলাফলের উচ্ছ্বাস আনন্দ ও বেদনা হয়ে ঝরে পড়ছে চোখ দিয়ে। পরের বাড়িতে কাজ করা মা মেয়ের এ সাফল্যে পুরো বাড়িজুড়ে সুন্দর আগামীকে ঘিরে অভাবের হানা। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সংকটে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ এখন কাকলীর জন্য দুঃস্বপ্ন।

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ থেকে বিনা বেতনে লেখাপড়া করেছে কাকলী। এসএসসিতে পাচ্চর বালিকা বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করে। দফায় দফায় পদ্মা নদীভাঙন আক্রান্ত কাকলীর নিঃস্ব পরিবারটি উপজেলার পাচ্চরে একচালার একটি খুপড়ি ঘরে বসবাস।

৫ ভাইবোনের সংসারে বাবা হারুন মাদবর দিনমজুর। অন্যের জমিতে দিনমজুরি দিয়েই চলে সংসার। মেয়ের ফলাফলে খুশি হয়েছেন, নিজে মিষ্টি কিনতে পারেননি, কিন্তু মসজিদ থেকে পাওয়া একটা জিলাপি যত্ন করে বয়ে এনেছেন, মেয়েকে মিষ্টিমুখ করাবেন বলে। শেষে খুড়িয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছে হাতে এক পিচ জিলাপি। মসজিদ থেকে দেওয়া ওই জিলাপিটাই বাবা না খেয়ে এনেছে মেয়ের ভালো ফলাফলের জন্য।

কাকলীর মা তাসলিমা বেগম অশ্রুজড়িত কণ্ঠে বলেন, কামলা দিয়ে ৭ জনের সংসার চালানোই কঠিন। অদম্য মেধাবী কাকলী আক্তার বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, কলেজ ও স্কুলের স্যারদের সহযোগিতায় অনেক কষ্ট করেই পড়ছি। নিজে চেষ্টা করছেন প্রাইভেট পড়িয়ে কিছু রোজগার করতে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন।  

এই প্রসঙ্গে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, কাকলী আক্তার অদম্য মেধাবী ওর পাশে আমরা শুরু থেকেই ছিলাম। সবাই ওর জন্য এগিয়ে এলে ও অনেক এগিয়ে যাবে।

গো নিউজ২৪/এমআর

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর