দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শুরু করা সামরিক মহড়ায় চটেছে উত্তর কোরিয়া। ওয়াশিংটনের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের উত্তেজনা কয়েকদিন বন্ধ থাকলেও আবার শুরু হয়েছে সেই বাগযুদ্ধ। মার্কিন প্রশাসনের ‘বেপরোয়া আচরণ’ অনিয়ন্ত্রিত পরমাণু যুদ্ধে ডেকে আনছে বলে মন্তব্য করেছে কিম প্রশাসন।
গত ৪ ও ২৮ জুলাই দুটি আইসিবিএমের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র। ৫ আগস্ট সেই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এরপর থেকেই পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটন উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। শুরু হয় দুই দেশের শীর্ষ নেতার পারস্পরিক হুমকিধামকি। ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কিম। প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি গুয়ামে চলতি মাসেই হামলা করা হবে বলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
পরে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে পিয়ংইয়ং। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানানো হয়। এদিকে সোমবার থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে মার্কিন বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ায় উত্তাপ বেড়েছে অনেকটা। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মার্কিন সেনাদের ওপর যেকোনো মুহূর্তে হামলা চালাতে পারে তাদের সেনারা। এমনকি ‘গুয়াম, হাওয়াই কিংবা মূল মার্কিন ভূখণ্ড- কোনো জায়গায়ই নির্মম হামলা এড়াতে পারবে না’ বলে মন্তব্য তাদের।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি গণমাধ্যম ‘রোডং সিনমুন’ এই তথ্য জানিয়েছে। বার্ষিক ওই মহড়াকে পিয়ংইয়ং ‘আগ্রাসন’ হিসেবেই দেখছে। রোডং লিখেছে, ‘উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পরমাণু যুদ্ধের মহড়া আসলে অনিয়ন্ত্রিত পরমাণু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার হাতে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) আছে, যা যে কোনো জায়গা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে সরাসরি আঘাত করতে সক্ষম।’
এতে আরো বলা হয়, ‘কোরিয়ান পিপলস আর্মি সতর্ক আছে। শত্রুর মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত। প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধের সামান্যতম ইঙ্গিত পেলেই দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক উত্তেজনা সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর সবচেয়ে আলোচিত খবর। এই বুঝি যুদ্ধে জড়িয়ে যায় দুই দেশ! চলছে হুমকি আর পাল্টা হুমকি। এ নিয়ে উদ্বেগে আছে প্রতিবেশী দেশগুলোও। পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে ক্ষতি যে হবে অপূরণীয়, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এরইমধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন দ্বীপ গুয়ামে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে কিমের বাহিনী। কিম জং-উন হামলার পরিকল্পনা পাস করলে হুয়াসং-১২ রকেট জাপানের ওপর দিয়ে গুয়াম থেকে ৩০ কিলোমিটার (১৭ মাইল) দূরে সাগরে গিয়ে পড়বে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু হলে খবর আছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গো নিউজ২৪/ আরএস
