আরব জাতিগুলো হামাসকে একটি ‘বৈধ প্রতিরোধ আন্দোলন’ হিসেবে দেখে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখে না বলে মন্তব্য করেছেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি।
শনিবার মস্কো সফরকালে রুশ গণমাধ্যম রাশিয়া টুডে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি। কাতার হামাসকে সহায়তা দেয়- এমন অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখে। কিন্তু আরবদের কাছে এটি একটি বৈধ প্রতিরোধ আন্দোলন। আমরা হামাসকে সহায়তা করি না, ফিলিস্তিনি জনগণকে করি।’
২০০৭ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ফিলিস্তিনের গাজা শাসন করে আসছে হামাস। ছোট্ট এই উপত্যকাটিতে বাস করে ২০ লাখের মতো মানুষ। প্রায় ১ দশক ধরে কঠোর ইসরায়েলি অবরোধের মুখে আছে গাজা।
এর আগে বুধবার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের জানান, উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বহাল করতে চাইলে হামাস এবং মুসলিম ব্রাদারহুডকে সহায়তা দেয়া বন্ধ করতে হবে কাতারের। ব্রাদারহুড এবং হামাসকে সমর্থন দিয়ে কাতার মিসর ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে দুর্বল করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সৌদি আরবের এ ধরনের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে হামাস। কাতারে হামাসের উপস্থিতির কারণ, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সহায়তা দেয়া। সংগঠনটির রাজনৈতিক নেতারা দেশটিকে অবস্থান করেন। তাছাড়া ফিলিস্তিনের ঐক্যকে এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করেই তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে বলে কাতারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ৫ জুন ‘সন্ত্রাসবাদে সমর্থন’ দেয়ার অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব এবং তার মিত্র মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন। পরে এই তালিকায় যুক্ত হয় মালদ্বীপ এবং লিবিয়া ও ইয়েমেনের পশ্চিমা সমর্থিত সরকার। ওই অভিযোগকে শুরু থেকেই ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করে আসছে কাতারি প্রশাসন।
আরব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, কাতার ইসলামপন্থিদের সহায়তার দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ দেখিয়ে আসছে দেশগুলো। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই দলটি বর্তমানে নিষিদ্ধ। ব্রাদারহুড রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করে এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাদের এই আদর্শকে হুমকি হিসেবে দেখে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো।
২০১২ সালে মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ব্রাদারহুড নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলেও এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। এছাড়া ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলন হামাসসহ কয়েকটি শিয়া সংগঠনকে কাতার সহায়তা করে বলেও অভিযোগ আছে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে। যদিও কোনো চরমপন্থি সংগঠনকে সহায়তা দেয়ার অভিযোগ বারবার অস্বীকার করে আসছে কাতার সরকার।
গো নিউজ২৪/ আরএস