বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভাণীসহ অন্য শীর্ষ নেতাদের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে দেশটির তদন্ত সংস্থা সিবিআই’র বিশেষ আদালত। লখনউতে সিবিআইর ওই আদালত আদভাণী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী, মুরলী মনোহরসহ মোট ১২ নেতাকে জামিন দেয়।
বারো অভিযুক্ত নেতাকেই পঞ্চাশ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেন বিচারক। অভিযুক্তরা অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। তবে সে বিষয়ে এখনো কোনো রায় দেয়নি আদালত। অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের অব্যাহতির আবেদন আদালত মেনে না নিলে তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে শুনানি শুরু হবে।
ওইসব বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বাবরি ধ্বংস করার জন্য উন্মত্ত জনতাকে উস্কানি দেয়া এবং ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার পর দায়ের করা মামলায় তাদের প্রত্যেকের নাম ছিল। ইতিমধ্যে এই মামলায় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেয়া দুই বছর সময়সীমার কথা মাথায় রেখে সিবিআইকে কাজ করতে হচ্ছে।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল শীর্ষ আদালত সিবিআইর বিশেষ আদালতকে নির্দেশনামা জমা পরার এক মাসের মধ্যে এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের নির্দেশ দেয়।
প্রসঙ্গত, আদভানিসহ অন্য বিজেপি নেতাদের দাবি ছিল, রামের জন্মভূমিতে মুঘলরা বাবরি মসজিদ তৈরি করেছিল। সে জন্যই মসজিদ ধ্বংস করে হিন্দুরা সেখানে মন্দির নির্মাণের দাবি তোলে। ওই ঘটনার পর এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, মসজিদের কাছে এক জনসভায় দাঁড়িয়ে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেন অভিযুক্ত নেতা-নেত্রীরা। সেই বক্তব্যের নেপথ্যে মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা ছিল বলেও দাবি তাদের।
এতদিন ধরে মসজিদ ভাঙার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ২০ জনের বিরুদ্ধে এলাহাবাদে বিচারপ্রক্রিয়া চলছিল। তবে তাদের সঙ্গে বিজেপির এই জ্যেষ্ঠ নেতাদেরও বিচার হওয়া উচিত বলে দাবি জানিয়েছিল সিবিআই।
২০১০ সালে তাদের দাবি খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে সিবিআই। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া রায়েই বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা চলবে বলে রায় দিয়েছে আদালত।
মামলায় অভিযুক্ত অন্য বিজেপি নেতারা হচ্ছেন: বিনয় কাটিয়ার, বিষ্ণুহরি ডালমিয়া, সতীশ প্রধান, সিআর বনশাল, সাধ্বী রীতম্ভরা, আরভি বেদান্তি, জগদীশ মুনি মহারাজ, বিএল শর্মা, নিত্যগোপাল দাস, ধর্ম দাস ও সতীশ নাগার।
গো নিউজ২৪/ আরএস