প্রথমবারের মতো প্রয়াত ব্রিটিশ রাজবধূ প্রিন্সেস ডায়ানার যৌন জীবন নিয়ে একটি রেকর্ডিংয়ের অংশ প্রকাশ করতে যাচ্ছে দেশটির চ্যানেল ফোর টেলিভিশন। তাদের ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্কাইভে ডায়ানার অনেকগুলো ভিডিও রেকর্ডিং রয়েছে বলে গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে স্বামী যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে তিনি যৌন জীবন নিয়ে যেসব আলোচনা করেছেন, তা প্রচার করা হবে কি না- সে বিষয়ে কিছু জানায়নি টিভিটি। এদিকে এ নিয়ে যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে ঐতিহাসিক কেনসিংটন রাজপ্রাসাদে যাওয়ার অনুমতি ছিল চ্যানেল ফোরের। সেখানেই তারা ওইসব ভিডিও ধারণ করেছে। তাতে রয়েছে ডায়ানার কণ্ঠ বিষয়ক কোচ ও ব্রিটেনে থাকা মার্কিন অভিনেতা পিটার সেটেলেনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অন্তরঙ্গ আলোচনা।
একজন টিভি প্রযোজক এসব ভিডিও টেপকে ‘ডিনামাইট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ এগুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এর আগে ব্রিটিশ কোনো টেলিভিশনে এ ধরনের ভিডিও কখনো প্রচার করা হয় নি। প্রিন্সেস ডায়ানাকে নিয়ে দীর্ঘ একটি ফিচার ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে চ্যানেল ফোর। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘ডায়ানা: ইন হার ওউন ওয়ার্ডস’। ডকুমেন্টারিটি আগস্টের প্রথম দিকে প্রচার করার পরিকল্পনা নিয়েছে ওই চ্যানেল।
তাতে অবশ্য সরাসরি যৌন জীবন নিয়ে প্রিন্সেস ডায়ানার যেসব কথা আছে, তা প্রচার করা হবে কি না- তা জানাতে অস্বীকার করেছে চ্যানেল ফোর কর্তৃপক্ষ। পিটার সেটেলেন যখন ডায়ানার কণ্ঠ বিষয়ক কোচ ছিলেন, তখনকার ২১ ঘণ্টার ফুটেজ রয়েছে তাদের কাছে। সেটেলেন যখন কোচের দায়িত্ব পালন করেন, তখন প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।
২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসি এ সংক্রান্ত কিছু অংশ প্রচার করে। তাতে প্রিন্সেস ডায়ানাকে প্রিন্স চার্লস সম্পর্কে বলতে শোনা যায়, ‘ও ছিল বাজে। খুব বাজে। তবুও শারীরিক সম্পর্ক ছিল। এটা ছিল। তা সাত বছর আগে থেকে যেন সরে গিয়েছিল। বিবেক আমাকে বললো- এটা শুধুই একটা বাজে ব্যাপার। তার কাছ থেকে এমনটা কখনো চাওয়ার নয়। প্রতি তিন সপ্তাহে একবার...। আমি ভাবতে থাকলাম এবং তারপর আমি একটি কৌশল শুরু করলাম। আমাদের বিয়ে হওয়ার আগে প্রতি তিন সপ্তাহে একবার সে তার প্রিয়তমার (ক্যামিলা, বর্তমানে ডাচেস অব কর্নওয়াল ও প্রিন্স চার্লসের দ্বিতীয় স্ত্রী) কাছে যেতো। সে (প্রিন্স চার্লস) তো আমাকে প্রতি সপ্তাহে প্রতিদিন ফোন করতো। তারপর সে তিন সপ্তাহ আমার সঙ্গে কথাই বলতো না। এটা খুব বাজে ব্যাপার। আমাকে তা মেনে নিতে হতো। আমি মনে করতাম, ঠিক আছে। আমি আমার স্বামীকে বলতাম, কেন তোমার জীবনে এই নারী? জবাবে সে আমাকে বলেছিল, আমি এমন প্রিন্স অব ওয়েলস হতে চাই না, যার একজন মিস্ট্রেস থাকবে না।’
এ প্রসঙ্গে সেটেলেন বলেন, প্রিন্সেস ডায়ানা কখনোই চান নি যে ভিডিওগুলো প্রকাশ্যে আসুক। ২০০৪ সালে এনবিসি যখন তা প্রচার করবে তার আগে রাজকীয় এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে রিপোর্ট করেছিল টেলিগ্রাফ। তাতে বলা হয়েছিল, প্রকাশকরা বা ডকুমেন্টারি নির্মাতারা যেভাবেই এটা উপস্থাপন করুক তাতে কোনো অসুবিধা নেই। এতে অবশ্যই প্রিন্সেস ডায়ানার সন্তান ও প্রিন্স চার্লস অস্বস্তিতে পড়বেন।
গো নিউজ২৪/ আরএস