ইউক্রেনিয়ান ফেমিনিস্ট গোষ্ঠী ফেমেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বহুল প্রচলিত যৌন-পর্যটন এবং পুরুষ-প্রাধান্যবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ফেমেন-এর সমাজকর্মীরা মিছিল করে, ফ্ল্যাশ-মব বা হঠাৎ-প্রতিবাদ সংগঠিত করার জন্য বহুল প্রচলিত।
তারা বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কাজ করে আলোচনায় থাকেন। নারী অধিকারের কথা বলে এ সংগঠনটির সদস্যরা কখনও নগ্ন হয়ে আবার কখনও অর্ধনগ্ন হয়ে রাজপথে নামে। আর এ আন্দোলনের জন্যই বিশ্বব্যাপী আলোচিত নারীবাদী সংগঠন ‘ফেমেন’।
সর্বশেষ তাদের এক সদস্য ঘটালেন ভয়াবহ এক বিতর্ক ঘটনা। সাথে মন্তব্য জুড়ে দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে ভয়াবহ মন্তব্য। এ দলেরই এক সদস্য বড়দিনে ভ্যাটিকানের ‘যিশু’ ছিনতাই করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন। তবে তার আগেই চিৎকার করে জানিয়ে দেন, ‘ঈশ্বর একজন নারী’।
এর আগে, ফেমেন’ সংগঠনের দুজন প্রতিবাদীকে ২০-২৫ জন পুরুষ নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে ১৪ সেপ্টেম্বর প্যারিসে। তাদের অপরাধ, তারা একটি ‘মুসলিম কনফারেন্স’-এর স্টেজের ওপর শরীরের ঊর্ধাঙ্গে কোনো জামা কাপড় না পড়েই উঠে পড়েছিল। ওই দু-জন মহিলা, একজনের বয়স ২৫, আরেকজনের ৩১; পরে তাদের পুলিশ গ্রেফতার করে — কনফারেন্সে তারা সাবোতাজ করার চেষ্টা করছিল — এই অভিযোগে।
যে ‘বিতর্কিত’ সম্মেলন চলাকালীন এই ঘটনাটি ঘটে, সেটি হচ্ছিল প্যারিসে, কট্টরপন্থী মুসলিম সংগঠনের ডাকে। বিষয় ছিল — ‘মেয়েদের ভূমিকা’। ফেমেন সমাজকর্মী ইনা শেভচেঙ্কোর কথায়, ফেমেন-এর মেয়েরা সম্মেলনের মঞ্চে উঠে পড়ে এবং মাইক টেনে নিয়ে বলতে শুরু করে। ইনার অভিযোগ, তখন মঞ্চে দু-জন আলোচনা করছিল — ‘বৌ-দের পেটানো উচিত কি না’ — এই বিষয়ে।
ফেমেন-এর দু-জন সমাজকর্মী শ্রোতাদের মধ্যে ছিলেন বোরখা পরে। সেই বোরখা খুলে রেখে, ঊর্ধাঙ্গের পোশাকও খুলে রেখে তারা মঞ্চে উঠে পড়ে। একজন মহিলা নিজের শরীরের ওপরের অংশে স্লোগান লিখে নিয়ে গিয়েছিল, ‘আমিই আমার নিজের প্রফেট’। আরেকজন মহিলার ঊর্ধাঙ্গে লেখা ছিল, ‘কেউ আমাকে দমাতে পারবে না।’
তারা মঞ্চে উঠে মাইকে তাদের মতামত আরবী এবং ফরাসীতে বলতে শুরু করেছিল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাদের দৃষ্টির বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় টানতে টানতে। একজনকে তো এলোপাথারি লাথি ঘুঁষি মারতে দেখা যায় স্পষ্ট।
শেভচেঙ্কো মিডিয়াকে আরো বলেন, দর্শকরা ওই মহিলাদের কাঁচা গালাগাল করতে শুরু করে, ‘নোংরা বেশ্যা’ ইত্যাদি বলে, এবং তাদের ‘খতম’ করার ভয় দেখায়। এই সম্মেলনে বিভিন্ন বক্তারা মহিলাদের চিরাচরিত ভূমিকা আলোচনা করছিল এবং তাদের মেয়েলি দিকগুলোর প্রশংসা করছিল, যেমন রান্নাবান্না করা, ঘরের জন্য শপিং করা।
গো নিউজ২৪/এবি