ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মায়াবী হ্রদের ভয়ানক স্মৃতি!


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২০, ০৭:৩৫ পিএম
মায়াবী হ্রদের ভয়ানক স্মৃতি!

প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটকে ভরে যায় এই হ্রদ। বোটিং, স্কিইং, মাছ ধরাসহ রয়েছে আরও নানা রোমাঞ্চকর কার্যকলাপ। লেকের সুদূর-বিস্তৃত নীল জলে হারিয়ে যান পর্যটকেরা। প্রকৃতি এখানে এতটাই মায়াবী যে, লেকের দিকে শুধু তাকিয়ে থেকেই কাটিয়ে ফেলা যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

কিন্তু জানেন কি এই মায়াবী লেকের উৎপত্তিতে লুকিয়ে রয়েছে ভয়ানক এক বিপর্যয়। অনেক প্রাণের ‘বিনিময়’ পাহাড়ের বুকে গজিয়ে উঠেছে এই হ্রদ। সেই ইতিহাস জানলে শিহরণ জাগতে বাধ্য।

হ্রদের এই জায়গাতেই ছিল পাকিস্তানের গিলগিট বেলিচিস্তানের হুনজা গ্রাম। পাহাড়ি পথ বেয়ে স্কুলে পড়তে যেত ছোট ছেলেমেয়েরা। কারাকোরাম পর্বতের নীচ দিয়ে গাড়ি ছুটত সড়ক ধরে। আর এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যেত খরস্রোতা হুনজা নদী।
২০১০ সালে ভয়ানক ভূমিধস হয় এই এলাকায়। চারপাশের কারাকোরাম পর্বত থেকে বিশাল আকারের প্রচুর পাথর হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে গ্রামের উপর। মুহূর্তে ধুলিসাৎ হয়ে যায় গোটা গ্রাম।

বিশালাকার পাথর হুনজা নদীর গতিপথেও বাধা তৈরি করে। ওই অংশে নদী যেন আচমকাই থমকে দাঁড়িয়ে যায়। প্রাকৃতিক পাথুরে বাঁধ তৈরি হয়ে যায় নদীর গতিপথে।

ভয়ঙ্কর এই ভূমিধসের পর কয়েক দিন নিস্তব্ধ ছিল প্রকৃতি। প্রায় পাঁচ মাস এ ভাবেই চলছিল। গ্রামবাসীদের যারা বেঁচেছিলেন, প্রত্যেকেই নিজেদের জীবন গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ছোট ছোট ঘর বেঁধে ফের থাকতে শুরু করেছিলেন সেখানে।

কিন্তু এরপরও যে আরও ভয়ানক কিছু অপেক্ষা করছে তাদের জন্য, তা তারা কল্পনাও করতে পারেননি। পাঁচ মাস পর ফের শুরু হয় দুর্যোগ। নদীর গতিপথে পাথরের বাঁধ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বাধা পাওয়ায় নদীর জলস্তর ক্রমে বাড়তে শুরু করেছিল। ২০১০ সালের জুন মাসে বাঁধ ছাপিয়ে যায়।

হুনজা ছাড়া পাহারের নীচের আরও চারটি গ্রামের উপর যেন অভিশাপ নেমে আসে। আইনাবাদ, শিশকত, গুলমিট এবং গুলকিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় জলের ঢেউয়ে। ভেসে যায় শতাধিক বাড়ি, দোকান, স্কুল, হোটেল, কারখানা। মারা যান বহু মানুষ। গৃহহীন হয়ে পড়েন ছ’হাজার। দুর্যোগের মধ্যে আটকে পড়েছিলেন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, প্রশাসন থেকেও কোনো রকম সাহায্য পাঠানোও সম্ভব হয়নি ওই এলাকায়। একদিকে আবহাওয়া অত্যন্ত খারাপ ছিল, তাই হেলিকপ্টারে ত্রাণ পাঠানো যায়নি। আবার জলের নীচে ডুবে গিয়েছিল কারাকোরাম হাইওয়ের ২৫ কিলোমিটার অংশ। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ছয়টি সেতু। সে কারণে সড়ক পথেও সাহায্য পাঠানো যায়নি।

এই ভাবে ২০১০ সালে হুনজা নদীর গতিপথ আটকে সৃষ্টি হয়ে যায় আত্তাবাদ হ্রদের। ২১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই হ্রদ। গভীরতা ১০৯ মিটার।

২০১০ সালের দুর্যোগ ক্রমশ বিস্মৃত হয়ে এসেছে। হ্রদের মায়াবী রূপে হারিয়ে যাচ্ছেন পর্যটকেরা। কিন্তু পাহাড়ি সেই গ্রামগুলোর টুকরো টুকরো স্মৃতি আজও হয়তো বুকের ভেতর বয়ে চলেছে আত্তাবাদ হ্রদ। জলের নীচে খুঁজলে মিলতে পারে ভয়ঙ্কর সেই দিনের টুকরো টুকরো কিছু সাক্ষী। 

সূত্র: আনন্দবাজার

গো নিউজ২৪/আই

পর্যটন বিভাগের আরো খবর
৩ ঘণ্টায় কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন, ভাড়া ২৫০০ টাকা

৩ ঘণ্টায় কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন, ভাড়া ২৫০০ টাকা

টাউন হল ভেঙে নতুন কমপ্লেক্স বানাতে চান আ.লীগ নেতারা

টাউন হল ভেঙে নতুন কমপ্লেক্স বানাতে চান আ.লীগ নেতারা

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে অত্যাধুনিক রণতরী উদ্বোধন কাল

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে অত্যাধুনিক রণতরী উদ্বোধন কাল

সহজেই সাজেক যাওয়ার পথ তৈরি হল

সহজেই সাজেক যাওয়ার পথ তৈরি হল

সংসদ লেকে দৃষ্টিনন্দন নৌকা, ব্যয় ৪০ লাখ টাকা

সংসদ লেকে দৃষ্টিনন্দন নৌকা, ব্যয় ৪০ লাখ টাকা

সবার জন্য মাসে ১ দিন চিড়িয়াখানায় বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ

সবার জন্য মাসে ১ দিন চিড়িয়াখানায় বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ