শিরোনাম দেখে যে কাররই চোখ কপালে উঠে যাওয়ার কথা।সবাই বলবেন নাইজেরিয়া তো ফুটবলের দেশ। রশিদি ইয়েকিনি, জে জে ওকোচা, নোয়ানকো কানুদের দেশ। নাইজেরিয়ার কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশ্বকাপ ফুটবলের কথা। এ দেশের বেশির ভাগ খেলাপ্রেমীর কাছে নাইজেরিয়া মানেই ফুটবল। সামনের দিনগুলোতে তা পাল্টে যেতে পারে। কারণ, দেশটি এখন ক্রিকেটও খেলছে। শুধু তা-ই নয়, নাইজেরিয়া সুযোগ পেয়েছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার। আফ্রিকা অঞ্চল থেকে ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছে দেশটি।
হোক না ছোটদের বিশ্বকাপ, তবু তো বিশ্বকাপ-ই। শনিবার (২৩ মার্চ) অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আফ্রিকান অঞ্চল বাছাইপর্বের শেষ দিনে সিয়েরা লিওনকে ২ উইকেটে হারিয়ে চূড়ান্তপর্বের টিকিট কেটেছে নাইজেরিয়ার যুবারা।
প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৮ রানে গুটিয়ে যায় সিয়েরা লিওন অনূর্ধ্ব-১৯ দল। তাড়া করতে নেমে ৮৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদেও পরেছিল নাইজেরিয়া। শেষ পর্যন্ত ৩৬ বল হাতে রেখে ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় দেশটির ‘জুনিয়র ইয়েলো গ্রিনস’রা ( অনূর্ধ্ব-১৯ দল)। ছেলেদের সিনিয়র দলকে ডাকা হয় ‘ইয়েলো গ্রিনস’।
নাইজেরিয়ায় ব্যাট-বল মাঠে গড়ানোর ইতিহাস কিন্তু বেশ পুরোনো। ব্রিটিশদের হাত ধরে খেলাটি জায়গা পেয়েছে নাইজেরিয়ায়। দেশটিতে স্বীকৃত প্রথম প্রীতি ম্যাচ খেলা হয়েছে ১৯০৪ সালে। সেই ম্যাচে নাইজেরিয়াকে ২২ রানে হারিয়েছিল তখনকার গোল্ড কোস্ট (ঘানা)। সে যাই হোক, ওই ম্যাচের প্রায় ১১৫ বছর পর এবারই প্রথমবারের মতো খেলাটির কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে জায়গা করে নিল নাইজেরিয়া। ফুটবল এখনো দেশটিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। তবে গত প্রায় এক দশক ধরেই নাইজেরিয়ান ক্রীড়াঙ্গন ঢাকা পরেছিল দেশটির জঙ্গি সংগঠন বোকো হারামের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে। ক্রিকেট আবার নতুন করে হাসি এনে দিয়েছে নাইজেরিয়ানদের মুখে।
২০০২ সালে আইসিসির সদস্যপদ পায় নাইজেরিয়া। তখন দেশটিতে খেলার উপযোগী মাঠের সংখ্যা খুব কম ছিল। আইসিসি, দেশের বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকমহল আর সরকারের সাহায্য নিয়ে ধীরে ধীরে উঠে এসেছে নাইজেরিয়ার ক্রিকেট।
নাইজেরীয় সরকার কেবল ক্রিকেট দলের বিদেশ সফরের সময় ব্যয় নির্বাহ করে। বাকি খরচ পৃষ্ঠপোষক আর আইসিসির মাধ্যমে দিয়ে থাকে বোর্ড। এই প্রতিকূলতার মধ্যেই ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বে জায়গা করে নিল দেশটি। নাইজেরিয়া ক্রিকেট ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডামস উকেনে বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেট এমন উচ্চতায় পৌঁছেছে যেখানে এর আগে আমরা কখনো যেতে পারিনি।’
গোনিউজ২৪/এএস