ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপ জেতা হয়নি যে ছয় বিশ্বতারকার


গো নিউজ২৪ | আরিফুর রাজু প্রকাশিত: মে ২৪, ২০১৮, ০১:২৫ পিএম আপডেট: মে ২৪, ২০১৮, ০৭:৪২ এএম
বিশ্বকাপ জেতা হয়নি যে ছয় বিশ্বতারকার

নিঃসন্দেহে তারা একেক জন বিশ্বতারকা। বিশ্বফুটবলের অমর জ্যোতি। ফুটবল আকাশে যতদিন ছিলেন জ্বলেছেন আপন মহিমায়। ক্যারিয়ারের কোন কালেই তাদের ভাটা পড়েনি। যদিওবা কালক্রমে হেরেছেন, তবে জেগেছেন দ্বিগুণ শক্তিতে। চলেছেন দুর্বার গতিতে, হয়েছেন ফুটবলের মহামানব।

কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারে তাদের চলার পথটা স্তব্ধ করে দিয়েছে একটি ব্যর্থতা। তা হলো, কখনোই বিশ্বকাপ জেতা হয়নি তাদের। চীনের দুঃখ যেমন হোয়াং হো নদী, ঠিক তেমনই এই মহামানবদের দুঃখ বিশ্বকাপ।

আজ গো নিউজ পাঠকদের জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট না জেতা ছয় বিশ্বতারকার গল্প।

লিওনেল মেসি
সেই ১৯৮৬ থেকে ২০১৮। হিসাব বলছে, ৩২ বছর হলো কোন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জেতা হয়নি আর্জেন্টিনার।  ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনা যে দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে তা ম্যারাডোনার হাত ধরে। এরপর আর একজন ম্যারাডোনার সন্ধান পায়নি সাদা-আকাশি জার্সির দেশটি। যদিও সর্বশেষ ব্রাজিল বিশ্বকাপের চূড়ায় এসে জার্মানের কাছে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। আর সে কারণে ১১ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে একবারের জন্যও শিরোপায় চুমু দেয়া হয়নি মেসির।

এবার কি দুঃখ ঘুচবে?

দুঃখের ব্যাপার হলো, মেসির দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনবার কোপা আমেরিকা কাপ হেরেছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ক্লাব ক্যারিয়ারে একশো তে একশো মেসি। পাঁচবারের মতো জিতেছেন বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর। এছাড়া অগণিত পুরস্কার রয়েছে ঝুলিতে। কিন্তু একটা বিশ্বকাপ না পাওয়ার কষ্ট সবই ম্লান করে দিয়েছে। যদিও আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপে তার একটা সুযোগ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৬১টি গোল করেছেন মেসি। এছাড়া তার এসিস্টে গোল হয়েছে ১৭টি।

ইউসেবিও

১৯৬৬ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো অংশ নেয় বিশ্বখ্যাতি পাওয়া মোনালিসার সেই চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চির উত্তরসূরীরা। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া আসরটিতে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েও পর্তুগীজ তারকা ইউসেবির কারিকুরিতে বোকা বনে যায় ফুটবলবিশ্ব।

সেবার গ্রুপ-দুইয়ে থাকা পর্তুগাল সব বাধা টপকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে । আর সেমিতে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে। যদিও ম্যাচটি ঘিরে রয়েছে বিতর্ক। কথিত আছে, ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ খ্যাত ইউসেবিওকে রুখতে সেবার মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে স্বাগতিকরা।

ব্ল্যাক প্যান্থার খ্যাত ইউসেবিও।

আর ওটাই ছিল তার শেষ বিশ্বকাপ। বিদায় নেয়ার মুর্হুতে ইউসেবিও দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘আমি ছিলাম বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। দুনিয়ার সেরা গোলদাতা। আমি সব করেছি, পারিনি শুধু  বিশ্বকাপটা জিততে।’

প্রসঙ্গত, ক্যারিয়ারে ৭৪৫ ম্যাচে অবিশ্বাস্য ৭৩৩ গোল করেছেন ইউসেবিও। দেশের পক্ষে ৬৪ ম্যাচে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন ৪১বার। 

জিকো
আর্থার আন্তুনেস কোইম্ব্রা এর ডাক নাম জিকো।  ৫ ফুট সাড়ে সাত ইঞ্চি উচ্চতার এই এটাকিং মিডফিল্ডারকে পেলে পরবর্তী ব্রাজিলের ফুটবল রাজা হিসেবে গণ্য করা হত। অনেকেই তার মাঝে পেলের ছায়া দেখতে পেতেন।  এজন্য তাকে ডাকা হতো “দ্যা হোয়াইট পেলে”।

জিকোর সম্পর্কে স্বয়ং পেলে বলেছেন, “throughout the year,one player come closest to me is ZICO.” জিকো ছিলেন অসাধারণ ফ্রি কিক টেকার। তিনি দু’দিকেই বল বাঁকাতে পারতেন অসাধারণভাবে।

পেলে পরবর্তী সুপারস্টার।

কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো,  জিকো তিনবার দক্ষিণ আমেরিকার ‘প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার’, এমনকি একবার ‘ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার’ হলেও, ব্রাজিলকে একবারও বিশ্বকাপ এনে দিতে পারেননি। 

প্রসঙ্গত, দলের হয়ে ৮৮বার মাঠে নেমে ৬৬টি গোল করেছেন জিকো৷

ফেরেঙ্ক পুসকাস

১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মেক্সিকোর আন্তোনিও কারভাহাল খেলেছেন পাঁচটি বিশ্বকাপ। অথচ ১৭ বছর ব্যাপ্ত ফুটবলার জীবনে ফুটবল তারকা পুসকাস অংশগ্রহণ করেন মাত্র দুটি বিশ্বকাপে। তাও আবার দুটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন দুটি ভিন্ন দলের হয়ে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত বিশ্বে ১৯৪৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি কোনো বিশ্বকাপ। ১৯৫০ বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় পুসকাসের মাতৃভূমি হাঙ্গেরি। এভাবেই ১৯৫৪ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে হয় তাকে।

হতাশার নাম পুসকাস।

মজার ব্যাপার হলো, পঞ্চাশের দশকে হাঙ্গেরির ফুটবল টিমকে বিবেচনা করা হতো অন্যতম সেরা দল হিসেবে৷ ফেরেঙ্ক পুসকাস তখন সেদলের মধ্যমণি৷ টানা চারবছর দলটি কিনা কোন ম্যাচ হারেনি৷ অথচ ১৯৫৪ বিশ্বকাপে ফাইনালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির কাছে হেরে যায় হাঙ্গেরীয়রা, ফলে পুশকাসের কাছে বিশ্বকাপ অধরাই থেকে যায়৷

রাউল
রাউল স্প্যানিশ দলের অধিনায়ক ছিলেন৷ ছিলেন বড় তারকা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার দল বড় ট্রফি জিতেছে রাউল অবসর নেয়ার দু’বছর পর৷ ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেন তিনি৷ এর ঠিক দু’বছর পর ইউরোপীয়ান কাপ জেতে স্পেন, সেটা ছিল ১৯৬৪ সালের পর প্রথম শিরোপা জয়৷

প্রসঙ্গত, নিজের দেশের হয়ে ১০২ বার মাঠে নেমে ৪৪টি গোল করেছেন রাউল৷

ইয়োহান ক্রইফ
মেসির মতোই মন্দভাগ্যের অধিকারী ছিলেন ইয়োহান ক্রইফ৷ টানা ১৯৭৪ এবং ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল অবধি পৌঁছালেও শিরোপা জিততে পারেনি তার দেশ৷ অথচ ডাচ এই তারকাকে অনেকেই বিবেচনা করতেন সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে৷ এজ্যাক্স এবং এফসি বার্সেলোনার হয়ে মাঠে অনেক সফল ছিলেন তিনি৷

গোনিউজ২৪/আর

খেলা বিভাগের আরো খবর
সাকিব অধ্যায়ের ইতি টেনে তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক শান্ত

সাকিব অধ্যায়ের ইতি টেনে তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক শান্ত

বিপিএল থেকে সরে হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন মাশরাফি

বিপিএল থেকে সরে হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন মাশরাফি

কী রোগে ভুগছেন সাকিব, জানালো দেশের এবং বিদেশের চিকিৎসকরা

কী রোগে ভুগছেন সাকিব, জানালো দেশের এবং বিদেশের চিকিৎসকরা

T20 World Cup 2024 : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি

T20 World Cup 2024 : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি

উইজডেনের বর্ষসেরা একাদশ প্রকাশ, ভারতের জয়জয়কার

উইজডেনের বর্ষসেরা একাদশ প্রকাশ, ভারতের জয়জয়কার

১১০ রানে অলআউটের পরও দারুণ লড়াই করেই হারল বাংলাদেশ

১১০ রানে অলআউটের পরও দারুণ লড়াই করেই হারল বাংলাদেশ