ঢাকা : বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলাটি রাজনৈতিক না হলেও এর পেছনে যে রাজনীতি জড়িয়ে আছে বদ্ধ রুমের আলোচনায় তা কোনো পক্ষই অস্বীকার করবেন না হয়তো।
মামলার রায় ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলে আসছেন এর সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই এবং খালেদার সাজা হওয়ার পেছনে সরকারের কোনো হাত নেই।
অপরদিকে বিএনপির নেতারা বলে আসছেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এবং নির্বাচন থেকে খালেদা জিয়াকে দুরে রাখতেই তাকে কারাবন্দি করা হয়েছে। তাদের মতে এটা হচ্ছে সরকারের ষড়যন্ত্রের অংশ।
এদিকে কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন খুব শিগগিরই হচ্ছেনা তা স্পষ্ট। বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীই মনে করেন নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হবে না অথবা আদালত খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করলেই কেবল তার জামিন হতে পারে। কারো কারো মতে সমঝোতা ছাড়া খালেদা মুক্ত জীবনে ফিরতে পারবেন বলে মনে হয় না।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে কেবল একটি শর্তেই মুক্তি মিলতে পারে খালেদার। শর্তটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে ঘিরে।
তাদের মতে, তারেক রহমান যদি বিএনপির রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আর কখনো দেশে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দেন তবেই মিলতে পারে খালোদা মুক্তি।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খালেদা জিয়া নয়, আওয়ামী লীগের সামনে সবচেয়ে বড় দেয়ালটির নাম হচ্ছে তারেক রহমান। তারেক রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগের পথ কখনোই পরিস্কার নয়। আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত প্রজন্মের সামনে কখনো না কখনো বড় বাঁধা হয়ে দাড়াবেন তিনি।
এছাড়া বিএনপি যদি আগামী নির্বাচনে যায়ও তাহলেও খালেদা জিয়া তেমন কোনো প্রভাব বিস্তার করেতে পারবেন না বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। কেননা দেশের মানুষের কাছে খালেদা জিয়া একজন অদূরদর্শী নেত্রী। বিগত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তিনি সে প্রমাণ রেখেছেন। তাছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় গেলেও খালেদা জিয়া আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না সেটা তিনি নিজেই বলেছেন। অন্যদিকে দলের নেতাদের উপরেও তার তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তারেক রহমান রাজনীতি থেকে সরে গেলে সেটা স্পষ্ট হবে।
এসকল কারণে তারেক রহমানকে প্রধান টার্গেট ধরে এগুচ্ছে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে “কান টানলে যেমন মাথা আসে” তেমনি খালেদাকে ঘিরেই তারেক বদের মিশন সাজানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে তারেক রহমানকে নিয়ে খোদ খালেদা জিয়াও ভয়ে রয়েছেন। দুই ছেলের মধ্যে আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর খালেদা জিয়া সব কিছুর আগে একমাত্র ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি ভাবেন। খালেদা জিয়ার এই দুর্বলতা নিশ্চই ক্ষমতাসীনদের অজানা নয়। সেদিক থেকেও তাকে চাপে রাখা হতে পারে!
এখন দেখা যাক সামনের দিনগুলোতে আসলে কোন পথে হাটে রাজনীতি।
গো নিউজ২৪/আই