ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে বিএনপি, পিছিয়ে আ.লীগ!


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮, ০৬:০৭ পিএম আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮, ১২:০৭ পিএম
নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে বিএনপি, পিছিয়ে আ.লীগ!

ঢাকা : দুর্নীতির মামলায় কারাগারে বন্দি রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে মুক্ত করতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি।

খালেদার কারাবন্দি পরবর্তী বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিকল্পনাকে পজেটিভ ভাবে নিয়েছে সাধারণ মানুষ। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের নির্বাচনী প্রচারের কাজও সমানতালেই চলছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে যে কর্মসূচি পালন হচ্ছে, তার প্রতিটিতেই জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ আসছে। সবাই বলছেন, চেয়ারপারসনকে নিয়ে তারা নির্বাচনে যাবেন। এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় নেতাকর্মীসহ সম্ভাব্য প্রার্থীরা বেশি তৎপর। এদিক থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বিএনপি।

এছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দল সম্পর্কে ভালো বার্তা যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনের বিষয়ে দলটি যে ইতিবাচক, সে খবরও যাচ্ছে দেশবাসীর কাছে।

তারা বলছেন, খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন রাজপথমুখী হয়েছে। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলকে কেন্দ্র করে দল আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। নেতাকর্মীরা সক্রিয় হচ্ছেন। তারা রাজপথে নেমে আসছেন। তারা আত্মগোপন থেকে প্রকাশ্যে চলে আসছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আন্দোলন ইস্যুতে কথা বলছেন। তাদের এ সক্রিয়তা ও চাঙ্গাভাব আগামী আন্দোলন ও নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তারা।

আগে যেখানে তাদের নামানোই যেত না, এখন তারা পথে নামছেন। একসময় তৃণমূলের নেতারা কেন্দ্রের অনেক নেতার প্রতি অভিযোগের আঙুল তুলতেন। কেন্দ্র থেকে দায় চাপানো হতো অন্যদের ওপর। অনেক দিন থেকেই এভাবে পাল্টাপাল্টি চলছিল। কিন্তু দলের চেয়ারপারসনের কারামুক্তির দাবিতে সবাই আগের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামছেন। পালিয়ে থাকা, দায় চাপানো বা অভিযোগ করার প্রবণতাও কমছে। নেতাকর্মীরা বুঝতে পারছেন তাদের রাজপথে নামার বিকল্প নেই।

এদিকে খালেদাকে সাজা দেয়া হলে দেশে আবারো নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলো সকলে। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। মামলার রায়ে খালেদার ৫ বছর এবং তারেকসহ অন্য আসামীদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড প্রদানের পর এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া।

এ অবস্থায় তার মুক্তির দাবিতে অরাজকতার বদলে শান্তি পূর্ণ আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। রায় ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো নাশকতার ঘটনা ঘটেনি।

বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন এবং আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেন তারা। 

অপরদিকে আওয়ামী লীগ বলছে আন্দোলনের ক্ষমতা নেই বিএনপির তাই তারা শন্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে নিজেদের অক্ষমতাকে ঢাকতে চেষ্টা করছে।

এদিকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পেছনে বিএনপি যে যুক্তি দিচ্ছে তা হলো খোদ খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার সময় দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়ে গেছেন যেন কোনো অবস্থাতেই নাশকতা সৃষ্টি না করা হয়।

বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, তিনি নাকি এমন কথাও বলেছেন যে, আমার মুক্তির দাবিতে কেউ যেন একটি ঢিলও না ছুড়ে। আন্দোলনের নামে জনগণের জানমালের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিতে বলেছেন।

পাশাপাশি কোনো অনুপ্রবেশকারী যাতে নাশকতা সৃষ্টি করে দলকে বেকায়দায় ফেলতে না পারে, সেদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। 

এছাড়া কারাগারে বেগম জিয়ার সাথে যখন শীর্ষ নেতারা দেখা করেছেন তখন তিনি এও বলেছেন, কোনোভাবেই যেন আন্দোলন সহিংস রূপ না নেয়। কারণ সরকার নানাভাবে চেষ্টা চালাবে বিএনপিকে উসকে দেয়ার, কিন্তু তাতে আমাদের পা দেয়া চলবে না।

সেই সাথে লন্ডন থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানও শান্তিপূর্ণভাবে খালেদার মুক্তি এবং আগামী নির্বাচনে যাওয়ার জন্য আন্দোলনের পথ বাতলে দেন নেতাদের।

এই নির্দেশনার ভিত্তিতেই মুলত পরিকল্পনা সাজাচ্ছে শীর্ষ নেতারা। এদিকে চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের এমন নির্দেশে শীর্ষ নেতারাও বেশ খুশি বলে জানা গেছে।

দু’একজন ছাড়া দলের শীর্ষ নেতারাও মনে করেন শন্তিপূর্ণ আন্দোলন ছাড়া বিএনপির সামনে কোনো পথ খোলা নেই। তারা মনে করেন, এই মুহুর্তে আন্দোলনের নামে নাশকতা করলে তা সরকারের ষড়যন্ত্রকে বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।

তাদের মতে, সরকার চাইছে বিএনপি নাশকতা করুক। যাতে করে একদিকে যেমন নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের মনে বিএনপি সম্পর্কে একটা নেতিবাচক মনভাব তৈরি হবে অন্যদিকে মামলা-গ্রেফতারের মাধ্যমে সক্রীয় নেতাদের দমানো যাবে। তাই যদি হয় তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেও ভোটের মাঠে পরাজিত হবে।  

এবিষয়ে সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চেয়ারপারসনের কারামুক্তি ছাড়া এ মুহূর্তে আমরা কিছু ভাবছি না। তার কারামুক্তির আগ পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাব। এ ব্যাপারে চেয়ারপারসনসহ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। নেত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়ে গেছেন, আমরা হরতাল-অবরোধের মতো কোনো কর্মসূচিতে যাব না। নিয়মতান্ত্রিক এবং শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের যে প্রতিবাদ চলছে, তা অব্যাহত থাকবে। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনুপ্রবেশকারীরা যাতে নাশকতা চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের চাঙ্গাভাব ও সক্রিয়তা নিঃসন্দেহে আগামী দিনের নিরপেক্ষ সরকারের আন্দোলন বা নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। খালেদা জিয়াকে সরকার অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছে। এটি জনগণ মেনে নেয়নি। ফলে এ ইস্যুতে আমরাই রাজনৈতিকভাবে লাভবান হব।

 

গো নিউজ২৪/আই

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর
রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন