ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে যেসব আলোচনা হলো


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৩, ০৯:১৬ পিএম
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে যেসব আলোচনা হলো

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতার সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আওয়ামী লীগ-বিএনপির অবস্থান, রাজনৈতিক সংলাপের সম্ভাব্যতা এবং মার্কিন দূতাবাসের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে বাংলা ট্রিবিউনকে।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) পৌনে ১২টা থেকে প্রায় ২টা পর্যন্ত রাজধানীর গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় বৈঠকটি শুরু হয়। এতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. আলী আরাফাত (এম এ আরাফাত), বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল।

বৈঠক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে ওয়াশিংটনের অবস্থানের নানান দিক নিয়ে কথা বলেছেন। এই নীতির কেমন প্রভাব পড়তে পারে সেটিও আলোচনায় উঠে আসে। এর সূত্র ধরেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিন দলের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। নির্বাচন নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের ভূমিকাও আলোচনার টেবিলে উঠে। এ ছাড়া তিন দলের নেতাদের কাছ থেকে রাজনৈতিক সংলাপের সম্ভাব্যতা নিয়ে কথা হয়। এসব বিষয়ে দলগুলোর নেতারা দলীয় অবস্থান অনুযায়ী নানান দিক নিয়ে কথা বলেছেন।

বৈঠকের বিষয়বস্তু জানতে চাইলে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এম এ আরাফাত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বৈঠকে নতুন মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আমাদের বলেছেন— এই ভিসা নীতি কোনও দল, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়। যারাই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দেবে এবং সহিংসতা করবে, তাদের বিরুদ্ধে এটি কার্যকর হবে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত ভিসানীতি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বলেছি— সরকার ও আওয়ামী লীগ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। সেটি শুধু কথার কথা নয়, আমরা করে দেখাবো। যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে বাধা ও সহিংসতা চায় না, আমরাও চাই না— সেটি পিটার হাসকে জোর দিয়ে বলেছি আমরা।

এম এ আরাফাত আরও বলেন, বিএনপি নেতারা তাদের চিরাচরিত অভিযোগগুলো করেছে। তারা দাবি করেছে, তারা জ্বালাও-পোড়াও করেনি। দেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। সরকার তাদের ডিস্টার্ব করছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা জিতবে. এসব বলেছে।

বিএনপির উত্থাপিত অভিযোগগুলোর জবাব আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ভিসানীতির ওপর আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করেছি। বৈঠকে টকশোর মতো বিতর্ক তৈরি করতে চাইনি। আমরা আমাদের কথা বলেছি, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি তাদের কথা বলেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত সবার কথা শুনেছেন। পরে পিটার হাস বলেছেন— ‘কিছু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে পারবে, সবকিছু তো সম্ভব নয়’।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত ভিসা নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই নীতি ক্ষমতাসীনদের ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে বড় ধরনের ‘সিগন্যাল’।

কেন স্বাগত জানাচ্ছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত এসেছে। আমরা এটাকে (যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি) ওয়েলকাম করছি এই কারণে যে নির্বাচন নিয়ে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মানুষের যে শঙ্কা, অন্তত এই ধরনের একটি পদক্ষেপ আমি মনে করি আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”

বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। এ সময় মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘মার্কিন সরকার বাংলাদেশের জন্য যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত জানতে চেয়েছে। প্রতিটি দলই তাদের মতামত দিয়েছে। নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একদল আরেক দলের সম্পর্কে বলেছে।’

চুন্নু আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন ভিসা নীতির উদ্দেশ্য বোঝা গেছে, তারা একটা ফেয়ার ইলেকশন চায় এবং নির্বাচনটা যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়। এই ব্যাপারে আমাদের দলও একমত।’

এদিকে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পেজেও বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়, “আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এমন ব্যক্তিদের ভিসা সীমিত করার এই নতুন ভিসা নীতি সবার জন্য প্রযোজ্য। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।"

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর
রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন