ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্রী টিকেট প্রাপ্তি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় এক বিমানকর্মী


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০১৯, ০৪:৪৪ পিএম
ফ্রী টিকেট প্রাপ্তি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় এক বিমানকর্মী

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বিমান গঠিত হয়। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সে কর্মরত বাংলাদেশি বৈমানিক, ক্রু ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে গড়ে তোলা হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি এটি গঠিত হলেও ৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম ফ্লাইট অপারেট করে। ভারত থেকে পাওয়া একটি ডিসি-৩ বিমানের পরীক্ষামূলক ফ্লাইট ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ দুর্ঘটনায় পড়ে পাইলট ও ক্রুরা নিহত হন। শোনা যায় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের প্রায় ২৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ১৪ জন পাইলট ও ক্রু বিমান গঠিত হবার পর বিনা বেতনে কাজ করেন দীর্ঘদিন। কেননা বিমানের তখন বেতন দেবার ক্ষমতাও ছিল না। সময়ের পরিক্রমায় বিমান দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর ৪ টি মহাদেশে পাখা মেলেছে। 

একটা কথা আমাদের জনগণের অধিকাংশই জানেন না যে, বিমান সরকারের কাছ থেকে একটি ফুটো পয়সাও গ্রহণ করে না বা বিমানের জন্য দেশের বাজেটে একটি কানা কড়িও বরাদ্দ থাকে না। বিমান পরিচালিত হয় বিমানের নিজস্ব আয়ে। বিমান উড়োজাহাজ কেনার কিস্তিসমূহ পরিশোধ করে নিজস্ব টাকায়। উপরন্তু বিমানকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক সরকারের আমলে রাঘব বোয়ালরা কোটি কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য ও লুটপাট করে থাকে বলে সুবিদিত অভিযোগ আছে।

বিমান একসময় অভিজাত শ্রেণির বাহন ছিল। সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল আকাশ পথে ভ্রমণ। মানুষজন মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমান দেখতো ঘাড় উঁচু করে বিপুল আগ্রহে। বিমানের চাকরিও খুব আকর্ষণীয় ছিল। আমাদের ছেলেবেলায় দেখতাম লাক্স সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিজয়িনীদের অনেকেই নিজ জীবনের লক্ষ্য বিষয়ে বলতো বিমান বালা হতে চায় তারা। 

বিমানে দুই প্রকারের কর্মচারী কাজ করে। একদল আকাশে আরেক দল মাটিতে। মাটির কর্মচারীরা গ্রাউন্ডস স্টাফ বলে পরিচিত। গ্রাউন্ডস সার্ভিসের চাকরিগুলোও খুব আকর্ষণীয় ছিল। দেশের বাইরের স্টেশনগুলোতে পোস্টিং ছিল৷ শোনা যায় এক সময় নাকি বিমানের কর্মচারীদের  ইউনিফর্মের কাপড় আসতো প্যারিস থেকে। আর ছিলো ফ্রী টিকেটের সুবিধা। যে সময় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিমান চোখেই দেখতে পেত না তখন বিমান কর্মচারীরা দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াতো বিমানে চড়ে। 

এই সমস্ত আকর্ষণের কারণে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে পাশ করা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা আসতো বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারী হয়ে। অনেকেই বিসিএস ক্যাডার সার্ভিস ছেড়েও বিমানের চাকরিতে থেকে গেছেন। বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মান ছিল সমাজে। বিমানের স্টাফ শুনলে বাড়িওয়ালারা নির্দ্বিধায় বাড়ি ভাড়া দিত।  সমাজের গণ্যমান্য লোকেরা দাওয়াত করে খাওয়াতো বিমানের স্টাফদের। বিদেশি দূতাবাসগুলোও খাতির যত্ন করতো। ভিসা পাওয়া যেত খুব সহজেই। 

এই সবই এখন ইতিহাস। এখন বিমান স্টাফ পরিচয় দেওয়া যায় না কোথাও। সবাই ছিঃ ছিঃ করে। নানান কটু কথা শোনায়। এর দায় বিমান পরিচালনায় যারা যুক্ত তাদের এবং পাশাপাশি গণমাধ্যমের। বিমানের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরও। কিন্তু এদেশের গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের আনুকূল্য পাওয়া দূরে থাক বিমান সব সময় এদের কাছ থেকে বৈরিতা ও অযৌক্তিক সমালোচনার শিকার হয়েছে। এর কিছুটা তাদের অজ্ঞতাপ্রসূত আর কিছুটা অসদুদ্দেশ্যে। 

'বিমান' বাংলা ভাষার একটি শব্দ। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়াও 'বিমান' উড়োজাহাজ অর্থেও ব্যবহৃত হয়। এছাড়া মানুষ যে কোন এয়ারলাইন্সকে 'বিমান' মনে করত এবং এখনো করে। শুধু তাই নয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস সহ বিমানবন্দরে কর্মরত যে কোন সংস্থার লোকজনকে মানুষ বিমানের লোক বলে ভুল করতো। এখনো এই ভ্রান্তি চলমান। সাংবাদিকরাও এই ভুল করে থাকে। এইভাবে বিমান ও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সকল নেতিবাচক ঘটনার দায়ভার বিমানের নামে প্রচারিত হতে থাকে। বিমান যাত্রী পরিবহণ করে। সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে আসে বিমান, অন্য সংস্থাওগুলোর এই সুযোগ কম। তাই সাধারণ মানুষজন সকল অনিয়ম, সকল সমস্যার জন্য বিমানকেই দায়ী করতে থাকে। এভাবে মানুষের মাঝে, গণমাধ্যমে বিমানের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হতে থাকে। ব্যাপারটা শুধু এইরকমভাবে ব্যাখ্যা করলে পুরো সত্য প্রকাশ পায় না আসলে। বাংলাদেশ বিমানের নীতি- কাঠামো, পরিচালনার দুর্বলতা,  কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অদক্ষতা, দুর্নীতি, অনিয়ম,  উদাসীনতা, দায়হীনতার বোধ ইত্যাদিও আছে।  
তবে বিমানের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরিতে এগুলোর ভূমিকার চেয়ে সংবাদ পরিবেশনে গণমাধ্যমগুলোর নেতিবাচক সুর বেশি দায়ী।  যে সমস্ত দোষ ত্রুটি নিয়ে বিমান মন্দ ভাবমূর্তির শিকার তার চেয়ে অনেক বেশি দোষ ত্রুটি নিয়ে অনেক দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা 'সুনাম' অর্জন করে চলেছে। এই ব্যাপারটি বিমান সংশ্লিষ্ট লোকেরা এবং ফ্রিকোয়েন্ট ট্রাভেলারগণ খুব ভাল করে জানেন। 

বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা তৈরি হয়েছে আন্তর্জাাতিক ও দেশীয় শ্রম আইনের আলোকে। বিমানের কার্যক্রম যেহেতু দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিস্তৃত তাই বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চুক্তি, প্রটোকল ও কনভেনশন বিমানকে মেনে চলতে হয়।  
জাতিসংঘ অধিভুক্ত IATA এবং ICAO এর নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়। পৃথিবীর অন্যান্য এয়ারলাইন্সের মত বিমানের স্টাফদের জন্যেও রয়েছে বিনামূল্যে এবং ছাড়কৃত মূল্যে বিমান টিকেটের সুবিধা। এই টিকেটগুলো নানান শর্তযুক্ত। যেমন কিছু টিকেট আছে সাবজেক্ট টু লোড (SUBLO)। অর্থাৎ অর্থমূল্যে টিকেট কাটা যাত্রীগণ সবাই বিমানে উঠবার পরও যদি আসন খালি থাকে তাহলে ভ্রমণে ইচ্ছুক বিমান স্টাফকে ভ্রমণ করতে দেওয়া হয়। প্রতিবছরের জন্য একটি টিকেট বরাদ্দ থাকে যেটি নট সাবজেক্ট টু লোড (NOSUB)।  অর্থাৎ অন্যান্য রেভিন্যু যাত্রীর মতই তার আসনটি নিশ্চিত থাকবে।  এরকম নিশ্চিত টিকেট বিমানকর্মীরা এক বছরে একটিই পায়। এবং এটি কর্তৃপক্ষের একাধিক স্তরের অনুমোদন ও নিরীক্ষা  সাপেক্ষে পাওয়া যায়। 
আজকের বাজারে এই ছাড়কৃত মূল্যে পাওয়া টিকেটের অনেকগুলোতেই বাজারমূল্যের প্রায় অর্ধেক টাকা পড়ে যায় বিভিন্ন ট্যাক্সের কারণে। যেমন ঢাকা- সৈয়দপুর রুটে একটি রেভিন্যু টিকেটের মূল্য ২৫০০ টাকা হলে ৮৫% ছাড়ে বিমানকর্মীদের জন্য তা পাওয়া যায়  ৯০০ টাকায়। এর মধ্যে ৫২৯ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স রয়েছে। ঢাকা-কোলকাতা রুটে এই হার আরো বেশি। অথচ এক সময় অনেকগুলো ট্রাভেল ট্যাক্স থেকেও বিমানকর্মীরা অবমুক্তি পেত। 

বিমান কর্মীদের এই সব সুবিধায় সরকারী বেসরকারি অনেকেরই চোখ ব্যথা করতে থাকে। অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়। তাই বিমানকর্মীদের এই টিকেট সুবিধা বন্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে একটি বিশেষ মহল। উদ্দেশ্যমূলকভাবে  গণমাধ্যমের লোকজনকে সরবরাহ করা হচ্ছে বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট ও তথ্য। বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে সেগুলো। অথচ ট্রেড ফ্যাসিলিটি হিসেবে এরকম বিশেষ সুবিধা অন্যান্য সংস্থাতেও প্রচলিত আছে। ব্যাংকে যারা চাকরি করেন তাঁরা বিশেষ রেয়াতি হারে ঋণ পেয়ে থাকেন। 
সেনাবাহিনীর সৈনিকেরা নাম মাত্র মূল্যে খাদ্য সামগ্রী পেয়ে থাকেন। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের জন্য বিশেষ চিকিৎসা সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সংরক্ষিত কোটা সুবিধা ভোগ করে থাকেন।

শুধু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নয় সারা বিশ্বের সকল বিমান সংস্থা তার কর্মীদের জন্য রেয়াতি টিকেট দিয়ে থাকে। এমনকি নিজ বিমান সংস্থা ছাড়াও অন্য বিমান সংস্থার কর্মীদের জন্যেও রেয়াতি টিকেটের ব্যবস্থা রয়েছে বিশ্বজুড়ে। 

বিমানের কাছ থেকে শুধু বিমানকর্মীরাই ফ্রী টিকেট পান না, প্রতি বছর বেশ কিছু টিকেট দেওয়া হয় সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে। এছাড়া বিভিন্ন সময় সাংবাদিক,সরকারী কর্মকর্তাদের অনেকেই ফ্রী টিকেট পেয়ে থাকেন। অতীতে এক কালে সরকারী সফরের কোটি কোটি টাকা বিমানকে পরিশোধ করা হয় নাই। বকেয়া থেকে গেছে।

২৮ জুলাই,২০১৯ দৈনিক প্রথম আলোতে সারফুদ্দিন আহমেদ নামের একজন একটি উপসম্পাদকীয় লিখেছেন বিমান কর্মীদের ফ্রী টিকেট নিয়ে। সারফুদ্দিন সাহেব ফ্রী টিকেটের বিষয়টি বুঝতে পারেননি এবং বোঝার কোন চেষ্টাও করেছেন বলে মনে হয় না। 
বিমানকর্মীরা গত দশ বছর ধরে নয়, বিমানের জন্মলগ্ন থেকেই এই সুবিধা পেয়ে আসছে। এবং এই সুবিধা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, বিধি প্রথা অনুসারেই বিমানকর্মীদের দেওয়া হচ্ছে। বিমানকর্মীরা শুধু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছেই নয়, সৌদি এয়ারলাইন্স,সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, থাই এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, গাল্ফ এয়ার, কুয়েত এয়ারওয়েজ,টার্কিশ এয়ারলাইন্স, মালিন্দো, শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স, ইত্তেহাদ, এয়ার ইন্ডিয়া ইত্যাদি বিদেশী এয়ারলাইন্স থেকেও রেয়াতি হারে টিকেট পেয়ে থাকে। সারফুদ্দিন সাহেব কি সেটা জানেন? 

বিমানকর্মীরা এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যে গণমাধ্যমের বিমাতাসুলভ মনোভাবের শিকার -এটি খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায় সারফুদ্দিন আহমেদ সাহেবের উপসম্পাদকীয়টির ভাষা ও সুর দেখে। জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থার কর্মীদের  একটি বৈধ প্রাপ্য সুবিধার সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি 'ফাউ' 'পুরা ফাউ' বিমান সংস্থা গিলে খাওয়া ইত্যাদি যে কদর্য ভাষা ও ভাষাভঙ্গি ব্যবহার করেছেন তা একজন গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে আশা করা যায় না। 

ফ্রী টিকেট বিষয়ে বিমান কর্মীদের মধ্যে ব্যক্তি বিশেষ অন্যায্য সুবিধা নিয়ে থাকলে সেটির তদন্ত ও বিচার হওয়া যৌক্তিক। কিন্তু ঢালাওভাবে বিমানকর্মীদের একটি আইনসঙ্গত সুবিধার পেছনে লাগা ঠিক নয়। বিমান লীজ, মেইন্টেনেন্স, পার্টস ক্রয়, রুট নির্ধারণ, বিমানের অন্যান্য খাতের ব্যয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাথে বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি ইত্যাদির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের পেছনে না ছুটে গণমাধ্যম ছুটে চলেছে বিমানকর্মীদের ন্যায়সঙ্গতভাবে পাওয়া বছরে ৭ কোটি টাকার টিকেটের বিভ্রান্তিকর হিসেবের পেছনে। পেশাগত প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা, যাত্রী সাধারণের চাহিদানুযায়ী সেবাদান ইত্যাদির প্রয়োজনেও বিমানকর্মীদের বিমানভ্রমণ করতে হয় - এটি সবার বিবেচনায় থাকা উচিত।

বিধি মোতাবেক একজন বিমানকর্মী ১ বছরে ১ টি নিশ্চিত টিকেট এবং ১৯ টি অনিশ্চিত টিকেট মিলে মোট ২০টি টিকেট পেয়ে থাকে। বিমানে কম বেশি ৬ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে। তাহলে ১০ বছরে বিমানকর্মীদের দেওয়া ফ্রী টিকেটের পরিমাণ কত হওয়া উচিত? ১২ লক্ষ টিকেট। বাস্তবে তা হয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে ৪৫ হাজার টিকেটের কথা । প্রাপ্য হলেও আর্থিক সঙ্গতি, ছুটি ইত্যাদির কারণে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই বছরে ২০টি টিকেট ব্যবহার করেন না। উল্লেখ করা সঙ্গত হবে যে রেয়াতি টিকেটের এই সংখ্যা (২০ টি) মাত্র কয়েক বছর আগে নির্ধারিত হয়েছে। তার আগে এটি নির্দিষ্ট করা ছিল না। প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন সংখ্যক টিকেট নেয়া যেত।

একটা তথ্যকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা যায়। ইতিবাচক বা নেতিবাচকভাবে । আপনার যুক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে। আপনি চোখ কপালে তুলে বিস্ময়ের চূড়ান্ত  প্রকাশ করে বলতে পারেন- পঁয়-তাল্লিশ হা-জা-র???!!! আবার এভাবেও বলতে পারেন--মাত্র পয়তাল্লিশ হাজার। যেখানে বিমানকর্মীরা যেখানে প্রায় ১২ লক্ষ রেয়াতি টিকেটের দাবীদার সেখানে আপনি ৪৫ হাজার নিয়ে চোখ কপালে তুলছেন যার ৯৫ শতাংশ টিকেট ফ্লাইটের শেষ মুহুর্তে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে ব্যবহারযোগ্য। বিমানকর্মীদের ন্যায্য টিকেট সুবিধাকে অন্যায্য, বিমানের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণ করার জন্য মহল বিশেষ হীন অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। তিলকে তাল করছে। একটি স্বাভাবিক বিষয়কে অস্বাভাবিক প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। 

স্বাধীনতার পর থেকে বঙ্গবন্ধুর ভালবাসায় ধন্য হয়ে বিমানের কর্মীদের হাতেই তিল তিল করে গড়ে উঠেছে বিমান। বিমানের আজকের যা কিছু অর্জন তার পুরোটাই সম্ভব হয়েছে বিমানকর্মীদের ঐকান্তিক পরিশ্রমে। বিমানের শ্রমিকদের এমনও দিন গেছে টানা ২ থেকে ৩ দিন অফিসেই থেকে যেতে হয়েছে কাজের চাপে, বাসায় যাওয়া হয়নি। এখনো এই শ্রমচিত্রের খুব বেশি পরিবর্তন ঘটেনি। সুতরাং ট্রেড ফ্যাসিলিটি হিসেবে বিমানকর্মীদের রেয়াতি টিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলতে হলে বিষয়টি নিয়ে আদ্যোপান্ত ভেবে বলা উচিত।

(নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক এক বিমানর্কমী)

গো নিউজ২৪/আই
 

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ