ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নারী জাতির অহংকার নুসরাত, কলঙ্ক মিন্নি!


গো নিউজ২৪ | ইমতিয়াজ আমিন প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৯:৪৮ পিএম আপডেট: জুলাই ১৭, ২০১৯, ১০:০২ পিএম
নারী জাতির অহংকার নুসরাত, কলঙ্ক মিন্নি!

দুজনই নারী। একজনের নাম নুসরাত জাহান রাফি। যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে লড়াই করে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন নারী জাতির অহংকার। 

অপরজন আয়েশা সিদ্দিকী মিন্নি। সন্ত্রাসীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ আদালতের মাধ্যমে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। যদিও বিচার শেষ হওয়ার আগে অপরাধী বলা যাবে না তাকে। তবে সামাজিক মাধ্যমে চোখ রাখলে মিন্নির জড়িত থাকার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। 

তাছাড়া ঘটনার সঙ্গে মিন্নি জড়িত না থাকলে অথবা ঘটনা থেকে মিন্নিকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে দিলে এই হত্যাকাণ্ডের অন্য কোনো কারণ প্রতিয়মান হয়নি এখনো।   

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আলোচিত এই দুটি ঘটনা ১৭ কোটি মানুষের মনে দাগ ফেলে দিয়েছে। 

রিফাত হত্যার মাত্র দুই মাস আগে গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত জাহান রাফি নামের এক তরুণী। তার আগে ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। 

ঘটনার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে তুমুল ঝড় ওঠে। হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে জগে ওঠে মানুষ। দেশজুরে সভা-সমাবেশ, মিছিল-মানববন্ধনের প্রেক্ষিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার হন আওয়ামী লীগ নেতা, অধ্যক্ষ, ওসিসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা। যৌন হয়রানির প্রতিবাদকারী নুসরাত হয়ে উঠেন মুসলিম নারীদের আদর্শ।

নুসরাত হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলন

অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টারত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি শুরুতে মানুষের মনে আদর্শ স্ত্রী হিসেবে স্থান করে নিলেও ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে তার ভিন্ন চেহারা। 

ফেসবুক স্ট্যাটাস, হত্যাকারীর সঙ্গে জন্মদিন পালনের ভিডিও, হত্যাকাণ্ডে আগমুহুর্তে স্বামীর সঙ্গে না যাওয়া, নয়ন বন্ডের সঙ্গে বিয়ে, রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও নয়নের বাসায় যাওয়া ইত্যাদির কারণে সন্দেহ দেখা দেয় মানুষের মনে। 

সামজিক মাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য করতে থাকেন লাখো মানুষ। দাবি ওঠে মিন্নিকে গ্রেফতারের। গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হন মিন্নির শ্বশুর দুলাল শরীফও। যার প্রেক্ষিতেই বলা যায় গ্রেফতার করা হয় মিন্নিকে। 

এদিকে বুধবার আদালতে মিন্নি বলেন, স্যার আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই, ঐ দিন যে এই ঘটনা ঘটবে তা আমি জানতাম না। 

বিচারক কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মিন্নিকে উদ্দেশ্য করে জানতে চান তার কোনো বক্তব্য আছে কিনা? মিন্নি এসময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, স্যার আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই, ঐ দিন যে এই ঘটনা ঘটবে তা আমি জানতাম না। 

সামাজিক মাধ্যমে মিন্নি সম্পর্কে এরকম হাজারো নেতিবাচক মন্তব্য আছে

তদন্তকারী কর্মকর্তার বক্তব্য শেষে মিন্নি আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, বিভিন্ন সময় আসামিরা তাকে ফোনে বিরক্ত করতো ও ভয় ভীতি দেখাতো। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দিতো। তিনি আরও বলেন, 'আমি বা আমার পরিবার আসামিদের ভয়ে কোথাও মুখ খুলতে পারিনি। আমার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকারীদের বিচার চাই। আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। বক্তব্যের একপর্যায়ে বিচারক হত্যাকারীর কল লিস্টে তার নম্বর কিভাবে এলো জানতে চাইলে মিন্নি নিরব থাকেন। 

এখন দেখার পালা কী হয় বিচারে। দোষী হল নিঃসন্দেহে তিনি হবেন নারী জাতির কলঙ্ক। তবে এতে নারী সমাজের অপমানিত বা লজ্জিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা যে সমাজে মিন্নিরা আছেন, নুসরাতরাও সেই সমাজেই বসবাস করেন। তাদের নিয়ে গর্বিত হওয়াই যায়। 

গো নিউজ২৪/আই  

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ