ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এবার লাভের মুখ দেখছে রাসেলের ইভ্যালি!


গো নিউজ২৪ | জাতীয় ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১, ১০:৩৪ এএম
এবার লাভের মুখ দেখছে রাসেলের ইভ্যালি!

ডিসকাউন্ট অফারে লোকসানি ব্যবসা আর করছে না ইভ্যালি। ইতোমধ্যেই ইভ্যালি বদলেছে ব্যবসার ধরন। নতুন স্লোগানে শুরু হয়েছে ‘প্রায়োরিটি ক্যাম্পেইন' এবং 'টি ১০' ক্যাম্পেইন। বহুল আলোচিত ই-কমার্স সাইটটি গত ৩০ মে এবং ২ জুলাই থেকে পর্যায়ক্রমে এসব ক্যাম্পেইনের আওতায় বাজারে প্রচলিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে (এমআরপি) ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। এর মাধ্যমে গ্রাহকের প্রতি অর্ডার থেকেই ইভ্যালির অ্যাকাউন্টে যোগ হচ্ছে মুনাফা।

প্রতিষ্ঠানটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি এবং অর্জিত মুনাফা থেকেই গ্রাহক ও মার্চেন্টদের আগের পাওনা পরিশোধ করা হবে। এজন্য সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী, নজরদারিতে থেকে প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর আয়-ব্যয় ও পুরনো গ্রাহকের পাওনা পরিশোধে অগ্রগতি জানাতেও তারা প্রস্তুত। তবে এখনই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখিত ছয় প্রশ্নের পূর্ণাঙ্গ জবাব দিতে তৈরি নয় ইভ্যালি। গত ৩১ জুলাই এক লিখিত জবাবে মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করেছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল।

এর আগে গত ১৯ জুলাই ইভ্যালিকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই নোটিশে ছয় প্রশ্ন উল্লেখ করে ১ আগস্টের আগেই এগুলোর জবাব চাওয়া হয়।
 
মন্ত্রণালয়ের প্রথম প্রশ্ন ছিল, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে মোট ৪০৭ কোটি টাকা দায়ের বিপরীতে ইভ্যালির কাছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা চলতি সম্পদ থাকার কারণ কী? বাকি টাকা ইভ্যালির কাছে আছে কি না। থাকলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে, না থাকলে দিতে হবে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা।

দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রাহকের কাছে মোট দায়ের পরিমাণ কত, গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া অর্থের বিনিময়ে যে পণ্য দেয়ার কথা, সেগুলোর বর্তমান অবস্থা কী এবং এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

তৃতীয় প্রশ্ন, ১৫ জুলাই পর্যন্ত মার্চেন্টদের কাছে দায়ের পরিমাণ কত এবং তা পরিশোধের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

চতুর্থত, ব্যবসা শুরুর পর থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে ইভ্যালি কী পরিমাণ টাকা নিয়েছে, মার্চেন্টদের কত অর্থ পরিশোধ করেছে এবং প্রশাসনিক ও অন্যান্য খাতে কী পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে?

পঞ্চম প্রশ্ন ছিল, ইভ্যালির ব্যবসা পদ্ধতি এবং বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা কী?

এবং ষষ্ঠ প্রশ্ন ছিল, ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা এবং ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন কোনো ব্যবসা পদ্ধতি বা কার্যক্রম ইভ্যালিতে এখনও আছে কি না, থাকলে কী?

এ বিষয়ে ইভ্যালির দেয়া জবাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শেষ তিনটি প্রশ্নের আংশিক উত্তর দিয়েছে ইভ্যালি। বাকিগুলোর পূর্ণাঙ্গ জবাবের জন্য জন্য চাওয়া হয়েছে ছয় মাস সময়।

চিঠিতে দায়-দেনা, মূলধন ও পাওনা পরিশোধ সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে ইভ্যালি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ১৬ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে ইভ্যালির বিষয়ে যে ঘাটতি তথ্য এসেছে, তা প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করে না। কেননা, ওই সময় তদন্ত দল ইভ্যালির কাছ থেকে যেসব হিসাব চেয়েছিল, সময় স্বল্পতা এবং তাদের প্রদত্ত ফরম্যাট অনুযায়ী ইভ্যালি সম্পূর্ণরূপে তখন তা সরবরাহ করতে সক্ষম হয়নি।

বর্তমান পরিস্থিতিতেও মার্চেন্টদের দায়-এর সঠিক পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি। এর কারণ হিসেবে ইভ্যালি বলেছে, প্রতিটি মার্চেন্টের অর্ডারের বিপরীতে ডেলিভারির বর্তমান অবস্থা যাচাই, ডেলিভারি করা পণ্য গ্রাহকের যথাযথভাবে পাওয়ার নিশ্চয়তার প্রমাণ, ত্রুটিপূর্ণ পণ্যের অভিযোগ নিষ্পত্তি, পূর্ববর্তী বিলের সমন্বয়সহ নানা বিষয়াদি এর সঙ্গে জড়িত। এই পরিস্থিতিতে ৫ হাজারের বেশি মার্চেন্টের জন্য হিসাব সম্পন্ন করা একটি সময় সাপেক্ষ বিষয়।

ইভ্যালি বলেছে, ‘এ অবস্থায় আমরা একটি তৃতীয় নিরপেক্ষ নিরীক্ষক দ্বারা আমাদের সম্পূর্ণ আর্থিক হিসাব বিবরণী এবং কোম্পানির ভ্যালুয়েশনসহ উপস্থাপন করতে চাই। এর জন্য ছয় মাস সময় চাই। নিরীক্ষা শেষ করার সময় পেলে চাহিদা অনুযায়ী আর্থিক বিবরণীতে আমাদের যাবতীয় হিসাব, যথা, কোম্পানির মোট সম্পদ, দেনার পরিমাণ, মার্চেন্টদের মোট দেনার পরিমাণ, মার্চেন্টদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী ক্রেডিট লাইনের যাবতীয় বিবরণ প্রদান করা হবে।’

তবে এই সময়ের মধ্যে ইভ্যালি আগের প্রতিশ্রুত পণ্যের ডেলিভারি ক্রমান্বয়ে সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রতি ১৫ দিন অন্তর তারা পণ্য ডেলিভারির অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়কে দিতে প্রস্তুত।

ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল

চিঠিতে বর্তমান ব্যবসা পদ্ধতি ও আগের লোকসানি অবস্থা থেকে উত্তরণের রূপরেখাও তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বর্তমানে ইভ্যালি ডিজিটাল কমার্স পলিসি ২০২০ (সংশোধিত) এবং ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘বর্তমান অবস্থা হতে উত্তরণের লক্ষ্যে ইভ্যালি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পণ্যে প্রচুর ডিসকাউন্ট দেয়া বন্ধ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্যাম্পেইন ‘সাইক্লোন’ অফার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে ৩০ মে শুরু করা হয়েছে ‘প্রায়োরিটি ক্যাম্পেইন’ এবং ২ জুলাই থেকে চলছে ‘টি ১০’ ক্যাম্পেইন। এসব ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে গ্রাহককে ২৪ ঘণ্টার ভেতরে পণ্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে এবং এক্ষেত্রে গ্রাহকরা এমআরপি মূল্যে পণ্য কিনছেন। ফলে এই বিক্রয়লব্ধ কার্যক্রমে ইভ্যালি প্রতি অর্ডারে মুনাফা অর্জন করছে।’

পাশাপাশি মার্চেন্টদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবসা বাড়ানোর চেষ্টার কথাও জানানো হয়েছে চিঠিতে। এতে বলা হয়, ‘ইতোমধ্যে আমরা ১ হাজার কোটি টাকার একটি বিনিয়োগ চুক্তি করেছি। যার মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২০০ কোটি টাকা এবং পর্যায়ক্রমে বাকি অর্থ বিনিয়োগ হবে। এই অর্থ ইভ্যালির বর্তমান আলোচ্য ঘাটতি পুরোপুরি নিরসনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

এ বিষয়ে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘আমাদের ন্যূনতম ছয় মাস সময় দরকার। এই সময়ের মধ্যে আমরা ভোক্তাদের পূর্ব প্রতিশ্রুত বকেয়া পণ্য সরবরাহ শেষ করবো। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য এবং চাহিদা অনুযায়ী তথ পূর্ণাঙ্গরূপে উপস্থাপনে সক্ষম হবো।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ডব্লিউটিও সেল) এবং ডিজিটাল ই-কমার্স সেলের প্রধান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইভ্যালি মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়েছে। তবে মন্ত্রণালয়ের যে ধরনের চাহিদা ছিল, চিঠিতে তারা পরিপূর্ণ তথ্যের সরবরাহ করেনি। তারা পূর্ণাঙ্গ তথ্যের জন্য ছয় মাস সময় চেয়েছে। ইভ্যালিকে সময় দেয়া হবে কিনা, দিলে সেটি কতদিন বা কত মাস এবং গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ কী হবে, সেসব প্রশ্নের সমাধান মিলবে এ সম্পর্কিত কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে। এ বিষয়ে এখনই মন্তব্য করার সময় আসেনি।’

সূত্রঃ নিউজবাংলা

জাতীয় বিভাগের আরো খবর
টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়