ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৫ উপায়ে দেশে এখনও করোনা ঠেকানো যায়


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২০, ০৮:১৮ পিএম
৫ উপায়ে দেশে এখনও করোনা ঠেকানো যায়

বাংলাদেশে আজ করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ মারা গেছে। এতদিন ধরে বাংলাদেশে চল্লিশের আশেপাশে ছিল, মাত্র একদিন পঞ্চাশ ছাড়িয়েছিল মৃত্যুর সংখ্যা। আজ একলাফে তা ৬৪ জন-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। একই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে আরো কিছু মানুষ। যারা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন তাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে কিনা নিশ্চিত নয়।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যে হিসেব সেই হিসেব বেড়েছে লাফিয়ে। এক লাফে মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ জন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে।

অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ২১ জন বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা যে ভবিষ্যৎবানী করেছিলেন সেটাই সত্য হতে যাচ্ছে। 

চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে, আক্রান্ত বাড়তে থাকলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। কারণ করোনায় ৮০ ভাগ লোকই নূন্যতম চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠে। ১০ ভাগ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয় এবং অন্তত ৫ ভাগ রোগীদের আইসিইউ এবং অন্যান্য সাপোর্টের দরকার হয়। কিন্তু যখনই রোগীর সংখ্যা বাড়বে, তখন বাংলাদেশে যে পরিমাণ আইসিইউ এবং অক্সিজেন সাপোর্টের পরিমাণ আছে তা অপ্রতুল হওয়ায় কারণে মৃত্যুর হার বাড়বে। এখন বাংলাদেশ সেই মৃত্যুর মিছিলের অপেক্ষা করছে কিনা তা নিয়েও উদ্বেগ-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। 

এখন মৃত্যুর মিছিল ঠেকানোর জন্য আমাদের সামনে শেষ সুযোগটি রয়েছে এবং এখনই আমাদের জরুরী ভিত্তিতে কিছু কাজ করতে হবে। যে কাজগুলো করলে মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে পারবো। এই কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে-

সংক্রমিত এলাকা দ্রুত লকডাউন করা

১৫ জুন জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা শহর এবং বাংলাদেশকে সংক্রমণের ভিত্তিতে তিনটি জোনে ভাগ করবে। রেড জোন, ইয়েলো জোন এবং গ্রিন জোন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছু এলাকায় নামকাওয়াস্তে লকডাউন ছাড়া কার্যকর কোন লকডাউন করা হয়নি। অথচ দেশে যে সংক্রমণ হয়েছে তাঁর ৪০ ভাগের বেশি শুধু ঢাকা মহানগরীতে।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে, ঢাকা মহানগরীকে অন্তত ১৪ দিনের জন্য লকডাউন করা দরকার। যদিও এখন পর্যন্ত এই ধরণের কোন চিন্তাভাবনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নেই বলেই মনে হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অতি সংক্রমিত এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করতেও ব্যর্থ হচ্ছে। আর এই বাস্তবতায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, দ্রুত সংক্রমিত এলাকাগুলোকে লকডাউন করতে হবে এবং ভালো হয় যদি দীর্ঘ এলাকা জুড়ে যেমন ঢাকা মহানগরী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ইত্যাদি এলাকাগুলোকে লকডাউন করা সম্ভব হয়। এখন স্পষ্ট যে, সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের কোন বিকল্প নেই।

স্বাস্থ্যবিধি মানার উপর কঠোরতা আরোপ

এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সরকার জনগণকে বিভিন্নভাবে সচেতন করার চেষ্টা করছে। তবে মানুষ সরকারের এসব সচেতনতা থোরাই কেয়ার করছে। অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও সামাজিক বিধি মেনে চলার উপরে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে হবে। যেমন সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পরা ইত্যাদি বিষয়ে কঠোরতা আরোপ করা অত্যন্ত জরুরী। বিশেষ করে বাজার-হাটসহ জনবহুল এলাকাগুলোতে যেন কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয় সে ব্যাপারে জোর দিতে বলেছেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করা

বাংলাদেশে করোনায় গুরুতর আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা আমাদের নেই এটা আমরা সবাই জানি। যেটুকু ব্যবস্থা রয়েছে সেটুকু যেন সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় এবং যারা আক্রান্ত তাঁদের জন্য যেন হাইফ্লো অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা যায় এবং আইসিইউ যাঁদের দরকার তাঁদের জন্য যেন আইসিইউ সেবা নিশ্চিত করা যায় সেই ব্যবস্থাপনাটা দ্রুত করতে হবে। বিশেষ করে এখনো যেসব হাসপাতাল করোনা চিকিৎসায় যুক্ত হয়নি সেসব হাসপাতালকে দ্রুত করোনা চিকিৎসায় যুক্ত করা জরুরী বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিশ্চিত করা

সবথেকে বড় সঙ্কট দেখা যাচ্ছে ঢাকার বাইরে। যারা মারা যাচ্ছে তাঁদের একটি বড় অংশই বাড়িতে বসে মারা যাচ্ছে এবং হিসেব করলে দেখা যায় এসব মৃত্যুর অধিকাংশই ঢাকার বাইরে। অর্থাৎ তাঁরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না বা ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নেই। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার এবং বিভিন্ন জেলায় আইসিইউ ইউনিট করা দরকার।

প্রবীণদের ঘরে থাকা নিশ্চিত করা দরকার

এখন ষাটোর্ধ্ব কারও ঘরের বাইরে যাওয়া কোনভাবেই উচিত নয়। তাঁদের বাইরে যাওয়া বন্ধ করা দরকার। এজন্য সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিককের দায়িত্ব রয়েছে। কারণ করোনায় মৃত্যুর হার বাংলাদেশের পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিকদের মাঝেই সবথেকে বেশি। একারণে যারা প্রবীণ তাঁরা যেন ঘরে থাকে এবং কোনভাবেই করোনা আক্রান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

গোনিউজ২৪/এন

জাতীয় বিভাগের আরো খবর
টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়