ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সোনারগাঁও হেটেলের খাবার চাইলেন মইনুল!


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০১৮, ০৮:৫১ পিএম আপডেট: অক্টোবর ২৩, ২০১৮, ০৮:৫২ পিএম
সোনারগাঁও হেটেলের খাবার চাইলেন মইনুল!

ঢাকা: মানহানি মামলায় আটকের পর ডিবি হেফাজতে সকালের নাস্তায় সোনারগাঁও হোটেলের খাবার খেতে চান ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। মঙ্গলবার গ্রেফতার অভিযান পরিচালনাকারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

তিনি জানান,  ডিবি হাজতে তিনিসহ ১৮ জন আসামি ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী সকলের জন্য ডিবি ক্যান্টিনের ১৩ টাকার খাবার সরবরাহ করা হয়। খাবারের মেন্যুতে ছিল পাঙ্গাস মাছের ঝোল, ভাত আর সবজি। ব্যারিস্টার মইনুল এসব খাবার দেখে ডিবি কর্মকর্তাকে ডেকে বলেন, ‘আমার জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেন। আমি টাকা দেব। এসব খাবার আমি খেতে পারব না। প্রয়োজনে সোনারগাঁও হোটেল থেকে খাবার নিয়ে আসেন।

জবাবে ওই ডিবি কর্মকর্তা বলেছেন, না স্যার, আইন অনুযায়ী সকল আসামি যে খাবার খাবেন আপনাকেও তাই দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি সকলের সঙ্গে ওই খাবার খান।

ডিবির ওই কর্মকর্তা জানান, সোমবার (২২ অক্টোবর) দুপুরের পর রংপুরে দায়ের হওয়া মামলার ওয়ারেন্টের কপি হাতে পাওয়ার পরপর ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতারের জন্য ডিবির অভিযান শুরু হয়। প্রথমে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন হাইকোর্টের যে বেঞ্চে জামিন নেন সেখানে যাওয়া হয়। তাকে না পেয়ে হাইকোর্টের বাইরে অপেক্ষা করে ডিবির ওই টিম।

এরপর তার অবস্থান শনাক্ত করা হয় আসলে তিনি কোথায় অবস্থান করছেন। বিকেল ৫টার দিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন তার গুলশানের বাসায় প্রবেশ করার অবস্থান শনাক্তের পরপরই সেখানে ডিবির পুলিশ টিম হানা দেয়। সেখানে না পেয়ে উত্তরার দিকে যায় তারা।

প্রথমে বোঝা যাচ্ছিল না যে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কোথায় অবস্থান করছেন। এরপরই জানা যায়, মইনুল হোসেন আ স ম আবদুর রবের উত্তরার জসিম উদ্দিন রোডের বাসায় ঢুকেছেন। পরে সেখানে যায় গোয়েন্দা পুলিশ।

প্রথমেই বাসায় নক করলে আবদুর রবের স্ত্রী তানিয়া রব ডিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জানালার ওপাশ থেকে কথা বলেন। জানতে চান, আপনারা কারা? জবাবে ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, আমরা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় থেকে এসেছি। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন আপনাদের বাসায় অবস্থান করছেন। তাকে বের করে দেন। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে। আমরা তাকে নিতে এসেছি। এরপর তানিয়া রব বলেন, আচ্ছা ঠিক আছে, মামলা যেহেতু আছে, তাহলে তো আপনারা তাকে তো নিয়েই যাবেন। ওনি একটু ঘাবড়ে গেছেন। বয়স্ক মানুষ। প্রেসার বেড়ে গেছে। আপনারা নিচের তলায় বসেন, আমি ওনাকে নিয়ে আসছি।

নিচ তলার রুমে ডিবি কর্মকর্তারা মিনিট ১৫ বসেন, এরপরও উনি না এলে তারা সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে যান। এরপর দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে তা ধাক্কা দিয়ে খুলে ভেতরে যান। তখন ওই কক্ষে তারা আসম আবদুর রব, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনসহ অনেকেই দেখতে পান।

আ স ম আবদুর রব চিৎকার করে ওঠেন। বলেন, ‘আমি আবদুর রব, আপনারা আমার বাসায় কেন প্রবেশ করেছেন? আপনারা কারা? এই মুহুর্তে বেরিয়ে যান এখান থেকে।’ তখন ডিবি কর্মকর্তারা নিজের পরিচয় পত্র দেখিয়ে বলেন, ‘স্যার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন স্যারের বিরুদ্ধে মামলার ওয়ারেন্ট আছে। আমরা তাকে নিয়ে যেতে এসেছি। এরপরেও আ স ম আবদুর রব চিৎকার করে বলেন, আমার বাসা থেকে আপনারা একজনকে ধরে নিয়ে যাবেন। এটা অন্যায়। কি প্রমাণ আছে আপনাদের কাছে। 

ডিবি কর্মকর্তারা ওয়ারেন্টের কপি দেখালে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, আমাকে আইন শেখান, এটি তো কোনো মামলা নয়। এই মামলায় তো গ্রেফতারি হয় না। আপনারা অন্যায়ভাবে আমাকে নিয়ে যেতে এসেছেন। 

ডিবি কর্মকর্তা বলেন, গাড়িতে মইনুল জিজ্ঞাসা করেন, আমাকে নিয়ে গিয়ে কী করবেন? ডিবিতে রাখবেন নাকি আদালতে পাঠাবেন? তখন ডিবি কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। মইনুল তখন খুশি হয়ে বলেন, তাহলে তো আমি জামিন পেয়ে যাব। আমাকে তো আটকাতে পারবেন না। তাহলে আপনাদের লাভ কী?

রাত ১০টার দিকে ডিবি কার্যালয়ের হাজতখানায় অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে রাখতে গেলে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, ‘আমাকে এখানেই রাখবেন? আসামিদের সঙ্গে আমাকে থাকতে হবে? অন্য কোনো ব্যবস্থা করা যায় না? থাকতে তো অনেক কষ্ট হবে মনে হচ্ছে।’ তখন ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, আপনাকে আইন অনুযায়ী এই হাজতখানাতেই অন্যান্য আসামিদের সঙ্গেই থাকতে হবে।

গ্রেফতারের পর ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন আর কি বলেছেন জানতে চাইলে ডিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, তার ভুল হয়েছে। তাকে আঘাত করে কথা বলতে চাননি। এজন্য তিনি অনুতপ্ত বলেও জানান। আরেক আইনজীবীকে দিয়ে মাসুদা ভাট্টিকে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন এমন কথা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, আমি নিজে বা অন্য কাউকে দিয়ে মাসুদাকে লিগ্যাল নোটিস পাঠাইনি।

এর আগে কখনো জেলে গিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে ব্যারিস্টার মইনুল ডিবি কর্মকর্তাদের বলেছেন জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন তাকে জেলে যেতে হয়েছিল। ওই সময় তিন মাস জেলে ছিলেন তিনি।

গো নিউজ২৪/আই

জাতীয় বিভাগের আরো খবর
টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়