ঋতুবতী হওয়ায় গোয়ালঘরে বন্দি, অতঃপর...


ওমেন’স কর্নার ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০১৭, ০৬:৫১ পিএম
ঋতুবতী হওয়ায় গোয়ালঘরে বন্দি, অতঃপর...

নেপালে ঋতুবতী এক তরুণীকে 'অপবিত্র' আখ্যা দিয়ে গোয়ালঘরে আটকে রাখার সময় সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে তার। নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ডাইলেখের প্রত্যন্ত একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত তরুণীর নাম তুলসি শাহি। তার বয়স ১৮ বছর। স্থানীয় প্রথা মেনে ঋতুস্রাব চলার চারদিন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার প্রথা 'ছৌপদী' অনুযায়ী তুলসিকে গোয়ালঘরে রাখা হয়েছিল।

এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে গোয়ালঘরে তাকে সাপে কামড়ায়। এরপর তাকে হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে রেখে ওঁঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করা হয়। এতে দ্রুত তার অবস্থার অবনতি হলে সাত ঘণ্টার মাথায় তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় মেয়র সূর্য বাহাদুর শাহি বলেন, তুলসির মাথা ও পায়ে সাপ কামড় বসালেও কুসংস্কারাচ্ছন্ন পরিবার ঋতুবতী মেয়েকে হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে রেখে টোটকা চিকিৎসা দেয়।

এক পর্যায়ে অবস্থার অবনতি হলে তুলসিকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সাপে কাটার 'অ্যান্টিভেনিন' চিকিৎসার সুযোগ ছিল না। এর ফলে বিনা চিকিৎসায় তুলসির মৃত্যু হয় বলে জানান বাহাদুর শাহি।

উল্লেখ্য, 'ছৌপদী' প্রথা মানতে গিয়ে নেপালের বহু ঋতুবতী কিশোরী ও তরুণীর মৃত্যুর শিকার হচ্ছে। এ কারণে ২০০৫ সালে এই প্রথাকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে এখনও এর প্রচলন রয়েছে।

ছৌপদী অনুযায়ী ঋতুবতী মেয়েরা 'অপবিত্র'। তারা কোনও খাবার স্পর্শ করলে তা অপবিত্র হয়ে যায়। বাড়ির গরু-ছাগলে তাদের স্পর্শ লাগলে সেসবের দুধ অপবিত্র হয়ে যায়। এমনকি নিজ পরিবারের সদস্যদের স্পর্শ করতে পারে না ঋতুবতী মেয়েরা।

২০১৫ সালে নেপালের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়েল প্রতিবেদন অনুযায়ী নেপালের মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলে ১৫-৪৯ বছর বয়সী মেয়েদের অর্ধেকই ছৌপদী প্রথা পালন করে। এটি পালন করতে গিয়ে মেয়েদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

চলতি মাসে তুলসি ছাড়াও গত ডিসেম্বরে মারা যায় ১৫ বছরের কিশোরীর রোশনি তিরুয়ার। রোশনি শীতের মধ্যে গোয়ালঘরে ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে আগুন জ্বালালে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যায়। এর আগে গত বছরের জুন মাসে ২১ বছরের এক তরুণী ছৌপদী পালনের সময় মারা যায়।

গো নিউজ২৪/এএইচ

ওমেন`স কর্নার বিভাগের আরো খবর