কী আছে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে?


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০১৭, ০১:০৭ পিএম
কী আছে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে?

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশের সুফল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছে দিতে যশোরে যাত্রা শুরু হল ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি’ পার্কের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৩০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ টেকনোলজি পার্কের উদ্বোধন করেন।

সফটওয়্যার তৈরি, কল সেন্টার সেবা, ফ্রিল্যান্সিং, গবেষণা ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন কাজ হবে এই পার্কে।  সেখানে খুলনা বিভাগের দশ জেলার পাঁচ হাজার তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে আশা করছে সরকার। 

২০১০ সালের ডিসেম্বরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই জেলায় বিশ্বমানের একটি তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তার চার বছরের মাথায় ২০১৪ সালের এপ্রিলে বেজপাড়া শংকরপুর এলাকায় ২ লাখ ৩২ হাজার বর্গফুট জমির ওপর ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি’ পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কযশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে রয়েছে ডেটা সংরক্ষণের জন্য দেশের দ্বিতীয় সার্ভার স্টেশন। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত প্রথম সার্ভার স্টেশনে কোনও সমস্যা হলে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ডেটা এখান থেকেই উদ্ধার করা যাবে।

পার্কের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পাঁচ মাস আগেই ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ পার্কের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুমোদন চেয়ে ৫৫টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাই শেষে সেখান থেকে ৩৯টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’ খুব শিগগিরই এই আইটি পার্কের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ‘স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে তরুণদের বিনামূল্যে পুরো একটি ফ্লোর বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। খুলনা বিভাগের ১০ জেলাকে টার্গেট করেই যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক  নির্মাণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশের আইটি শিল্প উদ্যোক্তারা এখানে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। এ পার্কে মূলত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং, কল সেন্টার, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আর অ্যান্ড ডি) কাজগুলো হবে।’ 

২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে একটি বিশ্বমানের আইটি পার্ক স্থাপনের ঘোষণা দেন। এরপর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে যশোরের বেজপাড়া শংকরপুর এলাকায় এই আইটি পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১২ দশমিক ১৩ একর জমির ওপর আইটি পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৩০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই হাইটেক পার্কে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

১৫ তলা এমটিবি ভবন (প্রতিটি ফ্লোরে ১৪ হাজার বর্গফুট হিসেবে দুই লাখ ৩২ হাজার বর্গফুট স্পেস),ফাইভ স্টার মানের ১২ তলা ডরমেটরি ভবন, অত্যাধুনিক কনভেনশন সেন্টারের সঙ্গে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং ব্যবস্থা। জলাবদ্ধতা নিরসনে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেনেজ ব্যবস্থা। জাপানি উদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী ডরমেটরি ভবনের ১১ তলার পুরোটাজুড়ে আন্তর্জাতিকমানের জিম স্থাপন করা হয়েছে। আর সবগুলো ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ভূমিকম্প প্রতিরোধক কম্পোজিট (স্টিল ও কংক্রিট) কাঠামোতে। রাখা হয়েছে ৩৩ কেভি পাওয়ার সাব-স্টেশন, ফাইবার অপটিকাল ইন্টারনেট লাইন এবং অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের সুবিধা।

ধারণা করা হচ্ছে, ১২ হাজার লোকের আয়ের উৎস হবে এই পার্ক। প্রকল্পের সার্ভে প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পার্কে রয়েছে ডেটা সংরক্ষণের জন্য দেশের দ্বিতীয় সার্ভার স্টেশন। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত প্রথম সার্ভার স্টেশনে কোনও সমস্যা হলেও সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ডেটা এখানে সংরক্ষিত থাকবে। যেকোনও সময় যেকোনও প্রয়োজনে এখান থেকেই ডেটা উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এখানে রয়েছে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সরবরাহ ব্যবস্থা।

ভারত থেকে আনা অপটিকাল ফাইবারের সংযোগ এ পার্ক থেকেই শুরু হবে, যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ১২ তলা ডরমেটরি ভবনের ছাদে বসানো হয়েছে স্যোলার প্যানেল সিস্টেম। ফলে যেকোনও ধরনের বৈদ্যুতিক গোলযোগে বিকল্প হিসেবে এই স্যোলার প্যানেল ব্যবহার করা হবে।

গো নিউজ২৪/এবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের আরো খবর