ধর্ষণ আবার সমঝোতায় হয় নাকি !!


ফারজানা আক্তার প্রকাশিত: মে ৮, ২০১৭, ০৩:৪১ পিএম
ধর্ষণ আবার সমঝোতায় হয় নাকি !!

গহনা পরতে কোন মেয়ে না ভালোবাসে ! গহনা মেয়েদের সৌন্দর্য কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়। যখনি গহনার কথা মাথায় আসে তখন একটা নামই চোখের সামনে চলে আসে।  আপন জুয়েলার্স ! নারীর সৌন্দর্য রক্ষায় আপন জুয়েলার্স ! নারীদের সৌন্দর্য রক্ষার পাশাপাশি আপন জুয়েলার্স নারীদের সম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। কাজটা করেছে আপন জুয়েলার্সের মালিকের সুযোগ্য ছেলে !

আজ ধর্ষক ছেলের জন্য বাবার সম্মান নিয়ে টানাটানি ! ছেলের পাপের শাস্তি বাবার হতে পারে না । কিন্ত বাবা যখন ছেলের পাপের পক্ষে সাফাই গায় তখন সেটাকে কি বলে ? অন্যায়কারী আর অন্যায়কারীর সাহায্যকারী যদি সমান পাপী হয়, তাহলে অন্যায়ের সাফাই গেয়ে যে পাশে দাঁড়ায় সেও তো সমান অপরাধী হবার কথা ! এই ধর্ষকটা জেনে গেলো তার সব অপরাধের পক্ষে সাফাই গাওয়ার এক্যজন আছে। এখন তার যখন যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াতে পারবে ! এই সমাজে একটা ধর্ষকের সংখ্যা বাড়িয়ে দিলো এক বাবা ! আহারে পিতা, টাকা বাইনাইলা তুমি কিন্ত সু-সন্তান বানাইতে পারলা না !

আপন জুয়েলার্সের মালিক বলেছে যা হয়েছে সমঝোতায় হয়েছে ! ফেইসবুকে অনেকের কমেন্টস দেখলাম, "মেয়ে দুইজন নাকি বড়লোকের ছেলে দেখেই নাচতে নাচতে হোটেলে গেছে।  এখন নাকি টাকার জন্য এমন করছে !অনেকে আবার বলছে যাওয়ার আগে মনে ছিলো না এখন ইত্যাদি ইত্যাদি "! এখন আপনারা কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দেন আপনাদের কোনো বান্ধবী আছে ? বন্ধু - বান্ধবীরা মিলে কারো জন্মদিন পালন করেছেন ? কোথাও ঘুরতে গেছেন ? কোনো পিকনিকে ? কখনো প্রেম করেছেন ? কাউকে মন থেকে ভালোবেসেছেন ? এই যে এতগুলো প্রশ্ন করলাম নিশ্চয় কোনোটার না কোনটার উত্তর হাঁ হবে ! কখনো কি মনে ইচ্ছে জেগেছে আপনার বান্ধবী বা প্রেমিকাকে ধর্ষণ করার ? যদি জেগেই থাকে তাহলে আমাকে বলেন এইখানে মেয়েটার কি দোষ ? দোষ তো আপনার মনের, আপনার মনে ইচ্ছে জেগেছে।যদি পোশাক নিয়ে কথা বলেন তাহলে বলবো - ভুল, পোশাক কখনো ধর্ষণ আটকাতে পারে না তার প্রমান তনু।

ধর্ষণ কি সেটা আগে জানুন। মনে করেন আপনি একজনের স্বামী। আপনার বউ কোনো কারণে আপনার কাছে যেতে চাচ্ছে না। আপনি তাকে জোর করলেন , এটাই ধর্ষণ। নিজের বউ বলে আপনি জোর করে কিছুই করতে পারবেন না।  মনে রাখবেন একজনের ইচ্ছায় অন্য জনের অনিচ্ছায় আপনি তার সাথে যৌন সম্পর্কিত যা করবেন সেটাই ধর্ষণ। হোক সেটা চোখের, হাতের, মনের সবটাই ধর্ষণ।  মেয়ে দুইজন যদি আগে তাদের সাথে নিজেদের ইচ্ছায় কিছু করেও থাকে সেই পর্যন্ত সেটা ধর্ষণ নয়। যখনি মেয়েদের ওপর জোর করা হয়েছে সেটা ধর্ষণ কোনো আপোষ বা সমঝোতা নয়।

মনে আছে আলীর কথা ! এই যে মেয়ে আয়েশাকে নিয়ে ট্রেনে ঝাঁপ দিলো। সে মেয়ের সুবিচারের জন্য ধারে ধারে ঘুরেছে। সে যখন ব্যর্থ হয়েছে তখন রাগে - দুঃখে, নিজের ব্যর্থতাই আত্মহত্যা করছেন। সাথে মেয়েকেও নিয়ে গেছেন।  তিনি মনে হয় জেনে গিয়েছিলেন টাকার পাহাড় গড়া কিছু ধর্ষক ছেলের সুযোগ্য বাবা রয়েছে এই সমাজে। তারা টাকার জোরে ধর্ষণকে আপোষ বা সমঝোতা বানিয়ে দিতে পারে। আপনার মুখ উজ্জ্বল করা ছেলের পাপের কিছু শাস্তি কি নিবেন আপোষ বা সমঝোতাকারী  বাবা !

 

মতামত বিভাগের আরো খবর