২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস


জাতীয় ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২১, ১১:৪৯ পিএম
২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস

শরীয়তপুরের সখিপুর থানার নরসিংহপুর ফেরি ঘাট এলাকায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়। ঘাটে দীর্ঘ সময় আটকা থাকায় তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া গরু জবাই করে বিক্রি করে দিচ্ছে অনেক গরুর ব্যাপারীরা। আজ শুক্রবার বিকেলে ফেরি ঘাটে ট্রাক টার্মিনাল সড়কের মুখে এপর্যন্ত তিনটি গরু জবাই করে বিক্রি করা হয়েছে। 

যশোর থেকে চারটি গরু নিয়ে লক্ষ্মীপুর যাচ্ছিলেন গরু ব্যবসায়ী নুরুল আলম। বৃহস্পতিবার ফেরি ঘাটের কাছাকাছি খায়েরপট্টি এলাকায় দীর্ঘ যানজটে পরে তাঁর ট্রাকটি। একই জায়গায় পশু বোঝাই ট্রাকসহ তাঁকে আটকা থাকতে হয় একদিনেরও বেশি সময়। ১২ ঘণ্টা প্রচেষ্টায় শুক্রবার দুপুরে ট্রাকটি আসে ফেরি ঘাটের টার্মিনাল সড়কে। খোলা সড়কে তীব্র দাবদাহে তাঁর ৩টি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। 

অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যায় একটি গরু। আরেকটির অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক গরুটি জবাই করে বিক্রি করে দেন তিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্রেতা ধরতে ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয় ওই গরুর মাংস। 

নুরুল আলম বলেন, মারা গেলে বড় ধরনের লোকসানে পরতে হতো। তাই গরুটি জীবিত থাকা অবস্থাতেই জবাই করে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই। এখন যে দাম পেয়েছি তাতে লোকসান কিছুটা কমে আসবে। 

ঘাটে আটকা পড়া গরু ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিনে ঘাটে অসুস্থ হয়ে ১৮টি গরু মারা গেছে। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পরে আরও ৩২টি গরু। অসুস্থ হয়ে পড়া আরও তিনটি গরু স্থানীয়দের সহায়তায় জবাই করে বিক্রি করে দেন ব্যবসায়ীরা। ২৭০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস পেয়ে ক্রয় করে নিয়েছেন অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ। 

নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় এক ইট ভাটা শ্রমিক বলেন, বাজার থেকে ১ কেজি গরুর মাংস কিনতে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা খরচ করতে হয়। এত দামে গরুর মাংস খাওয়া আমাদের হয়ে ওঠে না। চোখের সামনেই তাপের কারণে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়া জীবিত গরু জবাই করে বিক্রি করায় অর্ধেক দামে ক্রয় করেছি। 

চরসেনসাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জিতু মিয়া ব্যাপারী বলেন, ঘাটে গরু ও গরু ব্যবসায়ী অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে ঘাটে ছুটে যাই। তাৎক্ষণিকভাবে ঘাট এলাকায় অসুস্থ গরুর বিশ্রামের জন্য গাছের ছায়ায় খোলা জায়গার ব্যবস্থা করে দিই। গরু অসুস্থ হলেও বিশ্রাম ও সুস্থতায় ব্যবস্থা নেওয়ায় অনেক গরু সুস্থ হয়েছে। ৬ /৭টি গরু মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। 

নরসিংহপুর ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল মোমেন বলেন, কোরবানি সামনে রেখে ঘাটে গরু বহনকারী যানবাহনের চাপ বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে আড়াই শ পশু বোঝাই ট্রাক পারাপার করা হচ্ছে। ঘাটে এক সঙ্গে অনেক ট্রাক আসায় পারাপারে সময় লাগছে। বেশ কিছু গরু অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে ঘাটে কোন গরু জবাই বা বিক্রি করা হয়নি। ঘাট থেকে দূরবর্তী কোথাও গরু জবাই করে বিক্রি করা হয়েছে কিনা তা জানা নেই। নরসিংহপুর পশুবাহী যানবাহন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। ছয়টি ফেরিতে যানবাহন পারাপার করা হলেও সংকট নিরসনে ঘাটে নতুন করে একটি ফেরি যুক্ত করা হয়েছে। 
 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর