আজ থেকে ভারত-বাংলাদেশ সপ্তাহে ৫৬টি ফ্লাইট চলবে


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২০, ১১:৩৭ এএম
আজ থেকে ভারত-বাংলাদেশ সপ্তাহে ৫৬টি ফ্লাইট চলবে

করোনার কারণে দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ থাকার পর আকাশপথে 'এয়ার বাবল'-এর আওতায় আজ বুধবার থেকে চালু হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ ফ্লাইট। বিশেষ ব্যবস্থায় দুই দেশের মধ্যে সপ্তাহে ৫৬টি ফ্লাইট চলবে।

বাংলাদেশের তিনটি ও ভারতের পাঁচটি বিমান সংস্থা কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই ও মুম্বাইয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। আকাশপথে ভারত যেতে ৭২ ঘণ্টা আগের করোনা নেগেটিভ সনদসহ বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। তবে স্থল ও রেলপথে সাশ্রয়ী যোগাযোগ চালুর ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

করোনা সংক্রমণ রোধে গত ১২ মার্চ থেকে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ভারত। ফ্লাইট বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রোগী ও আটকে পড়া উভয় দেশের নাগরিকরা। দীর্ঘ বিরতির পর ফ্লাইট চালুর উদ্যোগে তাদের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। পর্যটক ছাড়া ৯টি ক্যাটাগরির যাত্রীরা ভ্রমণের সুযোগ পাবে। রোগীর সঙ্গে প্রথমে একজন সহযোগী অনুমোদন দিলেও পরে এ ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে ভারত।

বেবিচক সূত্র জানায়, 'এয়ার বাবল' চুক্তির অধীনে বাংলাদেশ ও ভারত ২৮টি করে ৫৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এতে সপ্তাহে পাঁচ হাজার জনের মতো যাত্রী উভয় দেশে যাতায়াত করতে পারবে। বাংলাদেশের প্রস্তাবে উভয় দেশের যাত্রীদের জন্য ৭২ ঘণ্টা আগের করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে। ভারতের স্পাইস জেট, ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া, গোএয়ার, ভিস্তারা-এই পাঁচ এয়ারলাইনস দিল্লি-কলকাতা-চেন্নাই-মুম্বাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে তালিকা দিয়েছে। অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ঢাকা-দিল্লি, দিল্লি-ঢাকা, ঢাকা-কলকাতা ও কলকাতা-ঢাকা রুটে, ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস ঢাকা-কলকাতা, কলকাতা-ঢাকা, ঢাকা-চেন্নাই, চেন্নাই-ঢাকা রুটে এবং নভোএয়ার ঢাকা-কলকাতা ও কলকাতা-ঢাকা রুটে বিমান পরিচালনা করবে।

এয়ার বাবল নিয়ে চুক্তি প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক বলেন, 'দুই দেশের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এয়ার বাবল নিয়ে সম্মত হয়েছে। চিঠিপত্র লেনদেনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি হবে না।'

আজ থেকেই ঢাকা-চেন্নাই-ঢাকা, চট্টগ্রাম-চেন্নাই-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে শিডিউল ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। ১৬৪ আসনের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ দিয়ে চেন্নাই ও কলকাতা রুটের ফ্লাইটগুলো পরিচালিত হবে।

এদিকে কম খরচে চলাচলের জন্য পরিচিত ভারতের বিমান সংস্থা স্পাইস জেট আগামী ৫ নভেম্বর থেকে ঢাকা হতে ভারতের বিভিন্ন রুটে পরিষেবা চালু করবে বলে জানিয়েছে।

ভারত ভ্রমণে যত নিয়ম: বাংলাদেশ থেকে যে যাত্রীরা ভারতে যাবে তাদের নভেল করোনাভাইরাস নেগেটিভ সনদ থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এসংক্রান্ত নির্দেশনায় বলেছে, ট্যুরিস্ট ভিসা ছাড়া বাকি সব ক্যাটাগরির ভিসাধারী বাংলাদেশি যাত্রীরা আকাশপথে নির্ধারিত রুটে ভারতে ভ্রমণ করতে পারবেন। গত ১২ মার্চ যে ভিসাগুলো স্থগিত করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ট্যুরিস্ট ও মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া বাকি সব ক্যাটাগরির ভিসা আকাশপথে নির্ধারিত রুটে ভ্রমণের জন্য সচল করা হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় সব কূটনৈতিক বা অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীরা ভারত সফরে ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পাবেন। ভারতের যেকোনো নাগরিক ও 'ওভারসিজ সিটিজেনশিপ অব ইন্ডিয়া (ওসিআই)' কার্ডধারীরাও এয়ার বাবল সুবিধায় ভারতে যেতে পারবে।

ভারতীয় হাইকমিশনের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত ভ্রমণ তারিখের অন্তত তিন দিন (৭২ ঘণ্টা) আগে যাত্রীদের অনলাইন পোর্টাল 'এয়ার সুবিধা' সেল্ফ রিপোর্টিং ফরম পূরণ করতে হবে। ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভারত ভ্রমণকারী সব আন্তর্জাতিক যাত্রীকে ফ্লাইটে ওঠার আগে 'সেল্ফ রিপোর্টিং' ফরম পূরণ করতে হবে। ভারতে যাওয়ার পর তাদের ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন পালন করতে হতে পারে-এমন বিষয়ে পোর্টালে সম্মতি জানাতে হবে যাত্রীদের।

কোয়ারেন্টিনে থাকা থেকে অব্যাহতি প্রত্যাশী যাত্রীদের ফ্লাইটে ওঠার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে 'এয়ার সুবিধা' পোর্টালে আবেদন করতে হবে। সেই আবেদনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত অনলাইনে জানানো হবে এবং সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অব্যাহতি প্রাপ্য ক্যাটাগরিগুলো হচ্ছে গর্ভবতী নারী, পরিবারের কারো মৃত্যু হয়েছে এমন যাত্রী, গুরুতর শারীরিক অসুস্থতা (রোগের তথ্য দিতে হবে), ১০ বছরের কম বয়সী সন্তানের সঙ্গে ভ্রমণকারী মা-বাবা এবং করোনা নেগেটিভ সনদ (কেবল আরটি-পিসিআর টেস্ট)। 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর