মায়ের করোনা টেস্ট করতে এসে মার খেলো ছেলে, ২ আনসার প্রত্যাহার


নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২০, ০৩:৩১ পিএম
মায়ের করোনা টেস্ট করতে এসে মার খেলো ছেলে, ২ আনসার প্রত্যাহার

রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে ব্যর্থ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে মারধর করেন সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে দুই আলোকচিত্র সাংবাদিকের ওপরও হামলা করেন তারা, ভেঙে ফেলেন একজনের ক্যামেরার প্রটেক্টরও। এবার ঘটনায় জড়িত দুই আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আনসারের উপপরিচালক মেহেনাজ তাবাস্সুম রেবিন। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার পর সেখান থাকা দুই আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মুগদা জেনারেল হাসপাতাল আনসার ক্যাম্পের সহকারী কমান্ডার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ক্যাম্প থেকে আনসার সদস্য আফসারসহ দুজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।  

শাওন হোসেন নামের মুগদা মডেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী জানান, তার মা ক্যানসারে আক্রান্ত। কেমোথেরাপি দেওয়ার জন্য করোনাভাইরাস আক্রান্ত কি না তার প্রতিবেদন লাগে। গত ২০ জুন তিনি তার মায়ের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে যান। তবে সে নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন না পাওয়ায় দুবার নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে অভিযোগ জানান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা আবার পরীক্ষার জন্য বলেন। সেজন্য গতকাল শুক্রবার ফের পরীক্ষার জন্য মাকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন।

শাওন বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ৪০ জনের পরীক্ষা করার কথা, কিন্তু আমার মায়ের সিরিয়াল ছিল ৩৬ নম্বর। ৩৩ নম্বর সিরিয়াল চলে যাওয়ার পর হঠাৎ করে আনসার সদস্যরা এসে বলে, আজ আর হবে না। এরপরে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা (আনসার) বলে, ৪০ জন হয়ে গেছে। তাই আর হবে না। তখন আমি প্রতিবাদ করলে আনসার সদস্যরা আমাকে কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে পাশে আনসার ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারতে উদ্যত হয়। আমাকে দুটি চড়ও মারে এবং গালাগাল করে।’

এ সময় শাওনকে মারধরের ছবি তুলতে গেলে দৈনিক দেশ রূপান্তরের আলোকচিত্র সাংবাদিক রুবেল রশীদ এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের আলোকচিত্রী জয়ীতা রায়ের ওপরও আনসার সদস্যরা হামলা করেন। এতে রুবেল রশীদের ক্যামেরার প্রটেক্টর ভেঙে গেছে।

বিষয়টি নিয়ে মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রলয় কুমার সাহা বলেন, ‘মুগদা হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সাথে আনসার সদস্যদের ঝামেলা হয়েছে। সেখানে ছবি তোলার সময় সাংবাদিকের ওপরে হামলা করা হয়েছে বলে সংবাদ পেয়ে থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকের ওপরে হামলা বা ক্যামেরা ভাঙচুরের বিষয়ে কেউ এখনো থানায় কোনো অভিযোগ করতে আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গো নিউজ২৪/আই

জাতীয় বিভাগের আরো খবর