ঢামেকে ৮১ মরদেহ, শনাক্ত ৪১


নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯, ০৩:২২ পিএম
ঢামেকে ৮১ মরদেহ, শনাক্ত ৪১

পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের ১৫ ঘণ্টা পর আগুন নিভিয়ে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

এদিকে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও ঢামেক হাসপাতালের মর্গে জমা হয়েছে ৮১টি মরদেহ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, এখন পর্যন্ত কলেজ ও হাসপাতালের দুই মর্গে মোট ৮১টি মরদেহ রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে আমাদের ৬৭টি ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেক ব্যাগেই রয়েছে একাধিক মরদেহ। সব মিলিয়ে এসব ব্যাগ থেকে পাওয়া ৭০টি মরদেহ রাখা হয়েছে ঢামেক মর্গে। এর বাইরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে ১১টি মরদেহ।

ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, যে ৮১টি মরদেহ আমরা পেয়েছি, এর মধ্যে ৪১টি মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি মরদেহগুলো এতটাই পুড়ে গেছে যে সেগুলো সরাসরি শনাক্ত করার অবস্থায় নেই। সেগুলোকে ফিংগারপ্রিন্ট বা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে।

পরিচয় শনাক্ত হওয়া নিহতরা হলেন- রাজু (৩০), তার ভাই মাসুদ রানা (৩৫), সিদ্দিকুল্লাহ (৪৫), আব বকর সিদ্দিক (২৭), আলী মিয়া (৭৫), মোশাররফ হোসেন (৩৮), কামাল হোসেন (৫২), ইয়াসিন খান রনি (৩২), জুম্মন (৬৫), এনামুল হক (২৮), মজিবর হাওলাদার (৪৫), মুফতি ওমর ফারুক (৩৫), মোহাম্মদ আলী (৩২) ও তার ভাই আবু রায়হান (৩১), তার ছেলে আরাফাত (০৩), ইমতিয়াজ ইমরোজ (২৪), হেলাল (৩০), ওয়াফিউল্লাহ (২৫), সোনিয়া (২৮), স্বামী মিঠু (৩৫), তাদের ছেলে শাহিদ (০৩), রহিম দুলাল (৪৫), হিরা, নাসির, মঞ্জু, আনোয়ার, কাওচার, শায়লা খাতুন, আরমান হোসেন রিমন, মামুনুর রশীদ, আবু তাহের, রুবেল হোসেন, সৈয়দ সালাউদ্দিন, মুসা, ইলিয়াস মিয়া, মিজানুর, আসিফ, মো. হোসেন বাবু, খলিলুর রহমান সিরাজ, নূর ইসলাম হানিফ, নবীউল্লাহ খান।

এদিকে মরদেহের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ঢামেকে সেগুলোর স্থান সংকুলান সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মর্গে ১২টি, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ১০টি ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও ছয়টি মরদেহ পাঠানো যাবে। এর বাইরে অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও যতগুলো সম্ভব মরদেহ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেগুলো শনাক্তের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চুড়িহাট্টার ওয়াহিদ চেয়ারম্যানের চারতলা ভবনটিতে প্রথমে আগুন লাগে, এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি, পেছনের একটি এবং সরু গলির বিপরীত পাশের দুটি ভবনে। আগুন লাগার পরপরই চার তলা ভবনটির সামনে থাকা বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ ঘটে। ওই সময় রাস্তায় থাকা কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায়। আগুনের সময় রাজমনি হোটেলের সামনের রাস্তায় কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণের পর ওই গ্যাস সিলিন্ডারেও আগুন লেগে ভবনে ও রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। এর পর অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর ১০টি ইউনিট সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিটের সংখ্যা ৩৭টিতে গিয়ে দাড়ায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে কর্মীর সংখ্যা ছিলো ২০০ জন।

গো নিউজ২৪/আই

জাতীয় বিভাগের আরো খবর