বেশি পাস করলেও অপরাধ, কম করলেও অপরাধ


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০১৮, ০৫:৫৪ পিএম
বেশি পাস করলেও অপরাধ, কম করলেও অপরাধ

ঢাকা : বেশি পাস করলেও অপরাধ, কম পাস করলেও অপরাধ। আসলে আমরা এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে খাতা দেখার মান ঠিক রাখতে গিয়ে পাসের সংখ্যা কিছুটা কম হবে এটা স্বাভাবিক। কথাগুলো বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পরীক্ষার ফলাফল তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ও ১০টি বোর্ডের প্রধান। সে সময়ই ফলাফলের সার্বিক চিত্র ফুটে উঠে পরিসংখ্যানে। সেখানে এক দফা কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। জানান, শিক্ষার সংখ্যাগত মান উন্নয়নের পর এবার গুণগত মান উন্নয়নে নজর দিয়েছেন তারা। খাতা দেখায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে কমছে পাসের হার।

এরপর দুপুরে আবার সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রী। সেখানেও পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ ক্রমাগত কমার বিষয়ে প্রশ্ন রাখা হয় তার কাছে।

আর এই প্রশ্ন শুনে খানিকটা অসহায় বোধ করেন নাহিদ। বলেন, আগে বেশি পাস করতো বলা হতো ভালভাবে খাতা দেখা হয়নি। আবার এখন কম পাস করেছে এখন বলা হচ্ছে পাসের হার কমে গেল কেন?

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রাথমিক থেকে শুরু করে ডিগ্রি পরীক্ষায় পাসের হার ক্রমাগত বেড়েছে। সে সময় শিক্ষাবিদরা দাবি করে আসছিলেন, সিজিপিএ পদ্ধতি চালুর পর খাতা দেখায় উদার মনোভাবের কারণে এত বেশি পরীক্ষার্থী পাস করছে।

এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ব্যাপকভাবে পরীক্ষার্থীদের ফেল করার খবর আসলে শিক্ষার মান নিয়ে কথা উঠে। তবে দুই বছর ধরে শিক্ষামন্ত্রী স্বীকার করছেন, খাতা দেখায় উদার মনোভাব ছিল আগে।

চলতি বছর পাসের হার কমার বিষয়ে অন্য একটি প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, তা আমরা আরও বেশি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব।

তবে আপনারা জানেন, আমরা যখন শুরুর দিকে দায়িত্ব নেই তখন সারাদেশে সাড়ে আট হাজার স্কুলে গণিতে ও ইংরেজিতে একজনও পাস করেনি। আমরা সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা করেছি। এখন আর সেই অবস্থা নেই।

আমরা শূন্য পাস করা সেইসব স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোচিং এর মাধ্যমে শূন্য পাসের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমিয়ে এনেছি। এটার অনেক উন্নতি হয়েছে। এ বছর সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

বিশেষ করে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণে বাধ্যতামূলক করা সহ বেশকিছু পদক্ষেপ আমাদের পরীক্ষাকে সুন্দর করেছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ও সর্বোচ্চ জিপিএ-দুটোই কমেছে। এবার প্রতি ১০০ জনের মধ্যে পাস করেছে ৬৬.৬৪ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৬৮.৯১ শতাংশ। অর্থাৎ এবার পাসের হার কমেছে ২.২৭ শতাংশ।

এবার জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ২৯ হাজার ২৬২ জন, যা গত বছরের তুলনায় আট হাজার ৭০৭ জন বা শতকরা ২০ শতাংশ কম। ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ জিপিএ ফাইভ পায় ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন।

গত বছরের ফলাফলও তার আগের বছরের চেয়ে খারাপ হয়েছে। ২০১৬ সালের তুলনায় ওই বছর পাসের হার কমে ৫.৭ শতাংশ। ২০১৬ সালে পাস করে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৭৪.৭ শতাংশ।

গত বছর জিপিএ ফাইভের সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় কম ছিল ২০ হাজার ৩০৭টি। ২০১৬ সালে ৫৮ হাজার ২৭৬ জন পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ জিপিএ পায়। পরের বছর সেটা কমে ৩৮.৮৪ শতাংশ।

 

গো নিউজ২৪/আই

জাতীয় বিভাগের আরো খবর