সংসদে তোপের মুখে অর্থমন্ত্রী


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০১৭, ০৩:৪৭ পিএম
সংসদে তোপের মুখে অর্থমন্ত্রী

গত ১ জুন প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনের পরথেকে এ নিয়ে আলোচনায় মন্ত্রীসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সমালোচনা করে আসছেন। সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানোর ঘোষণা, ব্যাংক আমনাতে বাড়তি আবগারি শুল্ক, ভ্যাট নিয়ে তারা অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন।

আজও সংসদে তোপের মুখে পড়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।  সোমবার বাজেট আলোচনায় আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন। বাজেট আলোচনার শুরুতে অর্থমন্ত্রী সংসদে উপস্থিত থাকলেও এক পর্যায়ে তাকে আর সেখানে দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বাজেট নিয়ে সারাদেশে আলোচনার ঝড় চলছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এটা নির্বাচনি বাজেট নয়। তাহলে অর্থমন্ত্রী কবে নির্বাচনি বাজেট দেবেন? আগামী বাজেট কার্যকর হবে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে। তখন বর্ষা শুরু হবে। সেপ্টেম্বরে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় গেলে, অক্টোবরে নির্বচনের তফসিল। এবারই নির্বাচনমুখী বাজেট করা উচিত ছিল। বলা যায় অর্থমন্ত্রী এবার নির্বাচন বিরোধী বাজেট করেছেন। অর্থমন্ত্রী কী কারণে কার স্বার্থে ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক করেছেন জানা নেই।’

১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাবের বিরোধিতা করে হানিফ বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী ভ্যাট আরোপ করেছেন গণহারে। পৃথিবীর ইতিহাসে এক বছরে ৩০ শতাংশ বাড়তি ভ্যাট নেওয়ার নজির নেই। এটা যৌক্তিক নয়।’

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের উন্নতি হয়েছে ঠিকই, অনেক লাইন হয়েছে। কিন্তু রমজানের সময়, সেহেরির সময় আমার এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। দিনে যদি ১৪-১৫ বার যদি বিদ্যুৎ যায়। এগুলো ঠিক করার উদ্যোগ নিন।’

আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বাজেট দিয়েছেন ভালো কথা। কিন্তু জনগণের কষ্ট আওয়ামী লীগ মেনে নিতে পারে না। আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করুন। আপনার কিছু কথা বার্তা সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। আপনি কম কথা বলেন। বয়স হয়ে গেছে কখন কী বলে ফেলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাজেটে সমস্যা থাকলে দেখা হবে। আপনি বললেন, একলাখ টাকা যার আছে সে সম্পদশালী। চার হাজার কোটি টাকা কোনও টাকা না হলে একলাখ টাকা, টাকা হয়ে গেল?’

সেলিম বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর টাকা নিয়ে গেলো। প্রয়োজনে ভ্যাটের আওতা বাড়ান। সব প্রতিষ্ঠানকে ইসিআর মেশিন দেন। যাতে ভ্যাট দিতে বাধ্য থাকেন। ঢালাওভাবে ভ্যাট বিশ্বে কোথাও নেই।’

বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সামনে নির্বাচন আসছে। অর্থমন্ত্রী তার আগে জনগণকে বিভ্রান্ত করে দিলেন। আগামী নির্বাচনে আল্লাহ তাকে (অর্থমন্ত্রী) সুযোগ দেবে কিনা জানি না। কিন্তু যাদের আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেবে তারা যাতে নির্বাচন করতে পারে সেটা খেয়াল করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এটা মরার ওপর খাড়ার ঘা। সুদ এমনিতেই কম। সঞ্চয়পত্রে সুদের হার যাতে না কমানো হয়। এটা কমালে ঠিক হবে না। ১০ শতাংশ বাড়ালে খরচ হবে এক হাজার কোটি টাকা। কিন্তু উপকার পাবে লাখ লাখ মানুষ। এটা সিনিয়র সিটিজেনরা পান। তারা কোথাও হাত পাততে পারেন না। অনেক শ্রেণির মানুষকে ভর্তুকি দেন। ঋণ খেলাপিদের বিশাল লিস্ট দিছেন। কই তাদের তো ধরতে পারেন না। ব্যাংকের টাকা পাচার বন্ধ করতে পারছেন না। আর নিম্ন মধ্যবিত্তের ওপর কর চাপিয়ে দিচ্ছেন। এটার প্রতিবাদ করছি।’


গো নিউজ২৪/এএইচ

জাতীয় বিভাগের আরো খবর