ভয়ঙ্কর আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’


কক্সবাজারে প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৩০, ২০১৭, ০৪:১৬ এএম
ভয়ঙ্কর আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’

কক্সবাজারে উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। রাত সাড়ে তিনটার পর থেকে কক্সবাজারে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে মোরা প্রথম আঘাত হানতে শুরু করেছে। এই সময় প্রচণ্ড বেগে বাতাস শুরু হয়। বাতাসের গতি ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। 

দেশের উপকূলজুড়ে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে জলোচ্ছ্বাসে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কক্সবাজারে দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার অতিক্রম করতে পারে।

সেন্টমার্টিন ও শাহাপরীর দ্বীপের লোকজন অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গেছে। এখনো পর্যন্ত কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'মোরা' আরও শক্তিশালী হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। মঙ্গলবার সকালে এটি উপকূলে আঘাত হানতে পারে। 

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় আবহাওয়া অধিদফতরের এক বার্তায় একথা বলা হয়েছে। একই সাথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বার্তায় আরো বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় 'মোরা' আরও সামান্য উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।

বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় মোরা চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। এছাড়া নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেত পুনরায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৫ নম্বর পুনঃ ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় 'মোরা' এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে সোমবার বিকাল থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিমড়বাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় 'মোরা' অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বিশেষ বার্তায়।
 


গো নিউজ২৪/এএইচ

এ সম্পর্কিত আরও সংবাদ


জাতীয় বিভাগের আরো খবর