গ্রিক দেবী পুনঃস্থাপনে আমরা হতবাক: আহমদ শফী


নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৮, ২০১৭, ০৪:৩০ পিএম
গ্রিক দেবী পুনঃস্থাপনে আমরা হতবাক: আহমদ শফী

সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে ‘গ্রীক দেবির মূর্তি’ পুনঃস্থাপিত করাকে অত্যন্ত হতাশাজনক উল্লেখ করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর শায়খুল ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, দেবি থেমিসের ভাস্কর্য অপসারিত হয়েছে জেনে অসুস্থ শরীরেও আনন্দ পেয়েছিলাম এবং দেশবাসীর সঙ্গে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছিলাম। কিন্তু মাত্র দু’দিনের মাথায় যখন দেশবাসী রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস পবিত্র রমযানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, প্রথম রোযার তারাবীহ আদায় করে প্রশান্ত চিত্তে ঘরে ফিরেছিল, তখনই দেশবাসীর সাথে আমিও জানতে পারলাম থেমিস সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনে পুনঃ স্থাপিত হয়েছে। এমন সংবাদে সমগ্র দেশবাসীর সঙ্গে আমরা বিস্মিত হতবাক এবং বাকরুদ্ধ।

হফাজত আমীর বলেন, আমাদের সকল আবেদন নিবেদন এবং শান্তিপুর্ণ দীর্ঘ আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে থেমিসের পুনঃস্থাপন এটাই প্রমাণ করে, এদেশের মানুষের সম্মিলিত আকাংখাকে সরকার বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছে না। তিনি বলেন, বলেন, থেমিস সুপ্রিম কোর্টের সামনে থাকবে, নাকি পিছনে থাকবে, এইটা কোন ইস্যু কখনো ছিলো না। নামাযের সময় কালো কাপড়ে মুড়ে দেয়া হবে কি হবে না; এইটাও ইস্যু ছিলো না। ইস্যু ছিলো, থেমিস থাকবে কি থাকবে না।

ইখানে মধ্যপন্থা নেয়ার কোন সুযোগ নাই। আমরা বার বার বলেছি, ইসলামে ইনসাফ বা ন্যায়ের ধারণা একটি মৌলিক ধারণা বা গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এমনকি ইনসাফ কায়েম ছিলো বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্যও। সেই ন্যায়ের বা ইনসাফের কোন প্রতীকায়ন যদি গ্রীক ঐতিহ্য থেকে ধার করা হয়, তবে প্রকারান্তরে এটাই ধরে নেয়া হয় যে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যে ও ধর্মে ন্যায়ের কোন ধারণা বা অবস্থান ছিল না। এটা উপনিবেশিক ভাবাদর্শ।

হেফাজত আমীর বলেন, আমরা আমাদের ঈমান ও আক্বিদার জমিনে দাঁড়িয়ে এই উপনিবেশিক ভাবাদর্শের বিরুই বলেছি। অথচ সেক্যুলার মিডিয়া আমাদের যুক্তি বার বার উপেক্ষা করেছে। আমাদের এই যুক্তির কথা তাদরেকে বার বার জানানো হলেও তারা প্রকাশ করে না। এমনকি আমরা এও বলেছি, দেবী থেমিস আধুনিক রাষ্ট্র ধারণায় বিচার বিভাগের যে অবস্থান, তারও পরিপন্থী।

তিনি বলেন, থেমিস অপসারণে যখন আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলাম। রমযানের আগেই কোন সংঘাত ছাড়াই থেমিস অপসারণে ভেবেছিলাম সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে, ঠিক তখন মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র মাস রমযানের প্রথম রাত্রে থেমিসকে পুনঃস্থাপন করে জাতির ধর্মীয় বিশ্বাস ও আবেগের সাথে তামাশা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি খবর পেয়েছি থেমিস পুনঃস্থাপনের প্রতিবাদ জানাতে গভীর রাতেও তৌহিদি ছাত্র-জনতা প্রেসক্লাবে সমেবেত হয়েছেন। তাঁরা সেখানে রাস্তায় সাহরী করেছেন । রমযানের প্রথম রাতেও তাঁরা তাঁদের পরিবারের সাথে সাহরী করতে পারেন নাই। এটা অতি হতাশা ও বেদনার। শুধু তাই নয়, আমি শুনেছি প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশি হামলা হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকে। এই সংবাদে আমি মর্মাহত এবং ক্ষুদ্ধ।

আহমদ শফী বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আবারো অনুরোধ জানাই। আজকের মধ্যেই সকল গ্রেপ্তারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই এবং কার উস্কানিতে হামলা হয়েছে, তার তদন্ত করে দোষীদের বিচার চাই। সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহবান জানাই, নাগরিকদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আমাদর জাতীয় চেতনা ও ঐতিহ্য নিয়ে তামাশা বন্ধ করে গ্রীকদের দেবী থেমিসকে চিরতরে দেশ থেকে অপসারণ করুন । ইসলাম বিরোধী নানা কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দিয়ে দেশকে আল্লাহর আযাব ও গজবের দিকে দয়া করে ঠেলে দিবেন না। আমার বিশ্বাস, পরম করুণাময় আল্লাহ সবাইকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার তাওফীক দেবেন।


গো নিউজ২৪/এএইচ

জাতীয় বিভাগের আরো খবর