ভাস্কর্য ইস্যুতে উত্তপ্ত রাজপথ


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৭, ০৩:৪০ পিএম
ভাস্কর্য ইস্যুতে উত্তপ্ত রাজপথ

সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজপথ উত্তপ্ত রয়েছে।  আজ শুক্রবার পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে বাম ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো।

আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা মূর্তি পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছে। 

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে ছাত্র সমাজ রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের মাজার গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। ব্যারিকেড ভেঙে তারা সামনে এগুতে চাইলে পুলিশ জল কামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম কর্মী আরিফ নূরসহ ৪ জনকে আটকও করে পুলিশ।  দুপুর ১২টার পর উদ্ভূত এ পরিস্থিতি ১টা নাগাদ স্বাভাবিক হয় আসে।

এদিকে, নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের বাইরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠন। সেখান থেকে ভাস্কর্য অপসারণের বিরোধিতাকারীদের আল্লাহ-রাসূলের ‘শত্রু’ আখ্যায়িত করা হয়।  

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহসচিব এ টি এম হেমায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল মক্কায় মূর্তি অপসারণের মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। ঢাকা শহর মসজিদের শহর। এ শহরে মূর্তি থাকতে পারে না। হাইকোর্টের মতো জায়গায় অন্য ধর্মের মূর্তি কোনোভাবে থাকতে পারে না।’

সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

বেশ কিছু দিন ধরে গ্রিক দেবী থেমিসের মূর্তিটি সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল হেফাজতে ইসলাম। হেমায়েত উল্লাহ বলেন, যারা বিরোধিতা (ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার) করছে তারা নগণ্য। পীর-ওলামা-মাশায়েখরা যদি রাস্তায় বের হয় তবে তাদের জায়গা হবে বঙ্গোপসাগরে। 

ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইমতিয়াজ আলম বলেন, এ ‘মূর্তি’ কোনোভাবে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে থাকতে পারে না। এটা কোনো কাজে আসবে না।

মূর্তি এবং ভাস্কর্যের মধ্যে পার্থক্য আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাস্কর্য থাকবে জাদুঘরে। মূর্তি বাইরে থাকার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে।

রাতেই সুপ্রিম কোর্টের সামনে যান ভাস্কর মৃণাল হক। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এরপর নির্দেশ আসবে, ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাঙা হোক, ‘রাজু ভাস্কর্য’ ভাঙা হোক, ‘ঘোড়ার গাড়ি’ ভাঙা হোক.. মাফ চাই। আমি কিছু বলতে চাই না। আমার হাত-পা বাঁধা।’

সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের এই ভাস্কর্য নিয়ে ইসলামি দলগুলো বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজেও ভাস্কর্যটি অপসারণ করার জন্য কোর্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


গো নিউজ২৪/এএইচ

জাতীয় বিভাগের আরো খবর