র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চিঠি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যের ব্যক্তিগত: রাষ্ট্রদূত


জাতীয় প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২, ১১:৪২ পিএম
র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চিঠি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যের ব্যক্তিগত: রাষ্ট্রদূত

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে স্লোভাকিয়ার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইভান স্টেফানেক যে চিঠি দিয়েছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইইউ রাষ্ট্রদূত এ কথা জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের পর র‌্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিতে ইইউ পার্লামেন্টকে চিঠি দিয়েছেন তাদের একজন এমপি, এর প্রভাব কী হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইইউ পার্লামেন্টে চিঠির ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। এটি ব্যক্তিগত চিঠি, পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো বিষয় নয়। একজন ব্যক্তির অবশ্যই ব্যক্তিগত মত-প্রকাশের অধিকার রয়েছে। আমি মনে করি, এটিও তাই। র‌্যাবকে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটা নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলতে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের মাধ্যমে দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন হোয়াইটলি।

ডিআরইউ’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব। 

এ সময় বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি। বাংলাদেশের নির্বাচন সংক্রান্ত ঘটনা প্রবাহের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গভীর নজর রাখছে জানিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমরা বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষণ করছি। কীভাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক রাখা নিয়ে যা বলেছেন সেটিতে আমরা স্বাগত জানাই। ইইউ চায় বাংলাদেশে অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। 

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিবিড় উন্নয়ন ও বাণিজ্য সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ক ভবিষ্যতে উত্তরোত্তর আরও দৃঢ় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বিশেষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এবং কভিড-১৯ মহামারিপরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে ইইউ অতীতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। 

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ যেভাবে বিপন্ন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে- তা বিশ্বের সামনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ সংকটের শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী সমাধানে ইইউ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইইউ’র রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি নিজেও এ বিষয়ে একাধিকবার কথা বলেছি। তিনি আশা করেন, দ্রুতই রোহিঙ্গা সংকটের গ্রহণযোগ্য সমাধান হবে। 

ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ইউক্রেন পরিস্থিতি সম্পর্কে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেদের অবস্থান জানাতে চায় বাংলাদেশকে। এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং একটি মিটিং চেয়েছে ইইউ দূতাবাস। ইউক্রেন পরিস্থিতি সম্পর্কে ইইউ’র অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ ইউক্রেন সমস্যার সমাধানের জন্য চেষ্টা করছে। 

তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইইউ’র স্পষ্ট অবস্থান হচ্ছে, ইউক্রেন ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করতে হবে। এখানে ইইউ সংঘাত দেখতে চায় না। ইউক্রেন একটি সার্বভৌম দেশ এবং এ জন্য তারা কার সঙ্গে জোট করবে, কার সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি করবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেবল তাদেরই আছে।  সামরিক চাপ এবং সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ পরিস্থিতি উন্নয়নে সহায়ক নয়। এই অবস্থানের কথাই ইইউ বাংলাদেশকে জানাতে চায়। 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর