খালেদা জিয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রত্যাশা দুদকের


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৮, ০৯:২৪ এএম
খালেদা জিয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রত্যাশা দুদকের

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চেয়েছে দুদক প্রসিকিউশন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মঈদুল ইসলাম বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুদক প্রসিকিউশন আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে। এ মামলায় আসামিরা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। এতে আসামিরা সাজা পাওয়ার যোগ্য। রায় দুদকের পক্ষে এলে তা প্রসিকিউশনের সফলতা প্রমাণ হবে।

আর যদি রায় দুদকের পক্ষে না আসে তবে পরবর্তী সময়ে তা দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে বুধবার রাতে তিনি বলেন, সিআরপিসি’র ৪২৬-এর সাবসেকশন-২ এর বিধান অনুসারে, যদি কোনো বিচারিক আদালত ১ বছর পর্যন্ত সাজা দেন, তাহলে ওই আদালত আসামিকে আপিলের শর্তে জামিন দিতে পারবেন। আর যদি সাজা ১ বছরের বেশি হয়, তাহলে ওই আসামিকে বিচারিক আদালত জামিন দিতে পারবেন না।

অপরদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে ৫ আইনজীবী নির্দোষ দাবি করে তার খালাস চেয়েছেন। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আজ সকালে গুলশানের বাসভবন থেকে বিশেষ আদালতে যাবেন।

আদালতে যাওয়ার পথে বিশেষ নিরাপত্তা দেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রায়কে আইনি ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দলের হাইকমান্ড ঐক্যবদ্ধ থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতারাও জানিয়ে দিয়েছেন রায়ের দিন বিএনপির কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না। বিএনপির নৈরাজ্য সহ্য করবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও রয়েছে প্রস্তুত।

৩০ জানুয়ারি ঢাকায় পুলিশের ওপর হামলা ও প্রিজন ভ্যান থেকে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার পর উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এরপর থেকে দেশব্যাপী ব্যাপক তল্লাশি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে যানবাহন ও যাত্রীদের দেহ তল্লাশি চলছে। বিএনপি অভিযোগ করেছে, গত কয়েক দিনেই তাদের শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সারা দেশে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত রাজধানীতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। রায় সামনে রেখে দুই দলের প্রস্তুতি দেখে সাধারণ নাগরিকরা আতঙ্কিত। তারা বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছেন। এ পরিস্থিতিতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন।

চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিচারের রায় বাংলাদেশে এটাই প্রথম। মামলায় খালেদা জিয়া অস্থায়ী জামিনে ও অপর দুই আসামি কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি তিন আসামি পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে।

গো নিউজ২৪/এমআর

আইন-আদালত বিভাগের আরো খবর