শ্রীপুর (গাজীপুর): গাজীপুরের শ্রীপুরে শিশু নাজনীন হত্যা মামলায় একজনকে ফাঁসি এবং দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।বুধবার সকালে গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল হক ওই রায় দেন। রায়ে তাদের প্রত্যেককে অর্থদণ্ডও দিয়েছেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মো. রিপন মিয়া (৩৩) শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া এলাকার হাসমত আলীর ছেলে। আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন- বগুড়া সদর উপজেলার ভাটকান্দি গ্রামের মো. রহিমের ছেলে রবিউল ইসলাম (২০) ও শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার দিঘিরপাড় এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে মো. মোজাফ্ফর (১৯)। এ দুইজনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গাজীপুরের পিপি হারিছ উদ্দিন আহম্মদ জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর গভীর রাতে খুন হয় ৭ বছরের শিশু নাজনীন। মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হওয়ার পর বাবাও অন্যত্র বিয়ে করেন। বাবার সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হলে নাজনীন শ্রীপুরের চকপাড়া এলাকায় তার নানা হাসমত আলীর বাড়িতে বসবাস করতে থাকে। হাসমত আলীর সঙ্গে জমি নিয়ে প্রতিবেশী আব্দুল করিম, আব্দুল কাদির, আব্দুল মোতালেবদের বিরোধ চলছিল। আসামিরা ইতোপূর্বে হাসমত আলীকে তার বাড়ি ছেড়ে যেতে হুমকি দিয়ে আসছিল। ওই জমি না ছাড়লে নাজনীনের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিচ্ছিল বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
২৯ অক্টোবর সকালে হাসমত আলী তার স্ত্রী ও নাতনিকে বাড়িতে রেখে টাঙ্গাইলে বেড়াতে যান। এ সুযোগে ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর দিবাগত রাত আড়াইটার সময় নানির সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকা নাজনীনকে তুলে নিয়ে বাড়ির উঠানে গলা কেটে হত্যা করে আসামিরা চলে যায়।
পরদিন সকালে ভিক্টিমের মা মোছা. আসমা বেগম বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় স্থানীয় আব্দুল করিম (৩২), আব্দুল কাদির (৩৮) ও আব্দুল মোতালেবের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তের ওই তিনজন জড়িত না থাকায় চার্জশিটে তাদের নাম বাদ পড়ে।
পরে মামলার সার্বিক তদন্তে আসামি রিপন, রবিউল এবং মোজাফ্ফরের বিরুদ্ধে নাজনীন হত্যার প্রমাণ পায় পুলিশ। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি আসামিদের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই খন্দকার আমিনুর রহমান।
মামলার আসামি রিপন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন যে, আব্দুল করিমকে ফাঁসানোর জন্য দণ্ডিতরা মিলে নাজনীনকে হত্যা করেছিল।
মামলায় আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার সকালে আদালত ওই রায় দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মো. হারিছ উদ্দিন আহম্মদ এবং আসামি পক্ষে শাহ মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ও ওয়াহিদুজ্জামান আকন্দ (তমিজ) মামলা পরিচালনা করেন।
গোনিউজ/এমবি