নূর হোসেন-সাঈদসহ ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল


আদালত প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০১৭, ০৫:১০ পিএম
নূর হোসেন-সাঈদসহ ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

ঢাকা: চাঞ্চল্যকর সাত খুনের দায়ে সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বাকি ১১ আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

নূর হোসেন, তারেক সাঈদ ও আরিফ হোসেন ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানা, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব আলী, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলিম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম।

এর আগে বেলা ১১টা থেকে সাত খুন মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় পড়া শুরু হয়। এ সময় আদালতের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি সাংবাদিকরা।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কার্যকরের অনুমতি (ডেথ রেফারেন্স) এবং আসামিদের আপিল শুনানি শেষে গত ২৬ জুলাই আদালত রায়ের জন্য ১৩ আগস্ট দিন ঠিক করে দেয়া হয়। কিন্তু ওইদিন রায় ঘোষণা করা হয়নি। আদালত রায় ঘোষণার জন্য নতুন তারিখ ২২ আগস্ট ধার্য করেছিলেন।

গেল ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে র‌্যাবের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। তার আগে তিনজনকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত নেয়া হয় এবং তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

একসঙ্গে দুই মামলার বিচার শেষে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি রায় দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত সৈয়দ এনায়েত হোসেন। লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ওই রায়ে। ৩৫ জন আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ জনের মধ্যে গ্রেপ্তার ও আত্মসমর্পণ করে কারাগারে থাকা ২০ জন নিয়মিত ও জেল আপিল করেন। এছাড়া নিম্ন আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য নথিও ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা এবং এরপর প্রধান বিচারপতি আলোচিত এ মামলার শুনানির জন্য ১৭ মে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন। ২২ মে শুনানি শুরু হয়।

৩৩ কার্যদিবসের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমএ মান্নান্ন মোহন ও জাহিদ সরওয়ার কাজল এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, এসএম শাহজাহান, এহসান উল্লাহ প্রমুখ।

গোনিউজ২৪/এন

এ সম্পর্কিত আরও সংবাদ


আইন-আদালত বিভাগের আরো খবর